বাংলাদেশিদের নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন ত্রিপুরার হোটেল মালিকরা

বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এটিএইচআরওএ) নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে। সংবাদ দ্য স্টেটসম্যানের। ত্রিপুরা ও কলকাতার বেশিরভাগ হোটেল ও রেস্তোরার ব্যবসায়ের প্রধান গ্রাহক বাংলাদেশি পর্যটকরা। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এটিএইচআরওএ বলেছে, ‘মেডিকেল ভিসাধারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে আতিথেয়তা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’ এর আগে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত নিপীড়ন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারসহ ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ করেন ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা। এমনকি, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে। সেদিনই বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার কোন হোটেল ও রেস্তোরাঁয় জায়গা দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় এটিএইচআরওএ। ত্রিপুরায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কোন ধরনের দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে এটিএইচআরওএ বলেছে, ‘জাতীয় সংবেদনশীলতা ও আতিথেয়তার নীতির মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে আমাদের ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করা হয়েছে। আমরা মেডিকেল ভিসাধারী বাংলাদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাব ও ত্রিপুরায় তাদের যথাযথ আবাসনসহ সেবা নিশ্চিত করব।’ এর আগে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগীদের বয়কট না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশটির চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএম)। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কলকাতায় সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটির পশ্চিমবঙ্গ শাখা। সংবাদ সম্মেলনে আইএমএর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সদস্য ও চিকিৎসক এন কাঞ্জিলাল ও কৌশিক চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে পশ্চিমবঙ্গে আসা রোগীদের দেশের জাতীয় পতাকা প্রণাম করে ঢোকা ও রোগী না দেখা চিকিৎসা নিয়মের পরিপন্থি। চিকিৎসকদের কাছে সব রোগী রোগীই। চিকিৎসকদের কাছে রোগীদের কোনো জাত, ধর্ম ও দেশ হয় না। ভারতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের কোনভাবেই চিকিৎসা বন্ধ কিংবা হয়রানি করা যাবে না। বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিল চীন

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত একটি দুর্লভ খনিজ উপাদান রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করায় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দেশটির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও ঘোষণা দিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি প্রতিরক্ষা কোম্পানি ও ছয় নির্বাহীর বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে জানানো হয়েছে।দক্ষিণ চীন সাগর ও ইউক্রেন ইস্যুতে গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক উত্তপ্ত। এরই মধ্যে চীনের উত্থান ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্য রফতানিতে বেশ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।গেল সোমবার (২ ডিসেম্বর) চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ বিক্রিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সেমিকন্ডাক্টর চীনের হাতে গেলে তা দিয়ে চীন নতুন অস্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারে। সেই সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেয়ার পর ২০২২ সালের অক্টোবরে চীনের কাছে প্রথম এআই চিপ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে ভিন্ন ধরনের এআই চিপও নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেয় তারা।আগামী জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগে শেষ মুহূর্তে আরও এক বার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল জো বাইডেন প্রশাসন।বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সেমিকন্ডাক্টর বিক্রির নিষেধাজ্ঞার জবাবে সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত একটি দুর্লভ খনিজ উপাদান রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন। চীনের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।’এরপর বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আরও এক দফায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে চীন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, কালো তালিকাভুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি প্রতিরক্ষা কোম্পানি ও ছয় নির্বাহী ব্যক্তির সম্পদ জব্দ করা হবে। তাদের সঙ্গে ব্যবসায় নিষিদ্ধ করা হবে। ওইসব ব্যক্তিদের চীনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।’কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে টেলিডাইন ব্রাউন ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্রিঙ্ক ড্রোনস, র‍্যাপিড ফ্লাইট, রেড সিক্স সলিউশনস, শিল্ড এআই, সিনেক্সাস, ফায়ারস্টর্ম ল্যাবস, ক্রেটোস আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেমস, হ্যাভোকএআই, নিরোস টেকনোলজিস, সাইবারলাক্স কর্পোরেশন, ডোমো ট্যাকটিক্যাল কমিউনিকেশনস ও গ্রুপ ডব্লিউ।নির্বাহী ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিএই সিস্টেমস ল্যান্ড অ্যান্ড আর্মামেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) চার্লস উডবার্ন, ইউনাইটেড টেকনোলজিস ইউনিটের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রিচার্ড ক্রফোর্ড, ডেটা লিঙ্ক সল্যুশনের প্রেসিডেন্ট বেথ এডলার এবং ব্রিঙ্ক ড্রোনসের সিইও ব্লেক রেসনিক।চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাইওয়ান অঞ্চলের কাছে ফের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এটা এমন একটি পদক্ষেপ, যা ‘এক চীন নীতি’ ও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ‘যৌথ বিধানের’ সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে ঘটল, যখন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আরোহণের দিন গুনছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই চীনের ওপর আরও কড়া ও শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। যা তার আগের মেয়াদে চীনের সঙ্গে ‘শুল্ক যুদ্ধে’র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে ভারত

বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে ভারত। গেল চার মাসে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে দেশটির বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। সংবাদ টাইমস অব ইন্ডিয়ার। বিএসএফের উত্তরবঙ্গ সীমান্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত চার মাসে শুধু উত্তরবঙ্গে অনুপ্রবেশের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে বলে দাবি তাদের। অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সীমান্তের পাশের অঞ্চলগুলোর যেসব জায়গা আগে খোলা ছিল, সেখানে বেড়া দেয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নজরদারি জোরদার করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কর্মী ও ক্যামেরা উভয়ই মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্টে বসানো হয়েছে বায়োমেট্রিক মেশিন। বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি সূর্য কান্ত শর্মা বলেন, ‘আগস্ট থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রচেষ্টা বেড়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পঞ্চগড জেলার প্রায় দশ শতাংশ অংশে বেড়ার অভাব রয়েছে। এসব এলাকায় বেড়া দেয়া হবে।’ বিএসএফের দাবি, ২০২৩ সালে উত্তরবঙ্গের সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে অন্তত ১২৭ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে, এ বছর এ পর্যন্ত ১৯৪ জন বাংলাদেশি ও ১৯৭ জন ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, তিনজন সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা এবং আরও তিন অনুপ্রবেশকারীকেও বিএসএফ গ্রেফতার করেছে। এ সময়ে অন্তত ১৮ কোটি টাকার মাদকদ্রব্যও জব্দ করা হয়েছে।

গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরাইল দায়ী

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গেল বছর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিদেও ওপর ‘গণহত্যা’ চালানোর জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘জেগে ওঠার’ আহ্বান জানিয়ে একটি নতুন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সংবাদ এএফপির। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, তাদের এই প্রতিবেদন ‘ইসরাইলি সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের অমানবিকতা ও গণহত্যা’, গাজা থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ধংসাত্বক ভয়াবহ তথ্য এবং স্থল রিপোর্টেও ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। অ্যামনেস্টির প্রধান অ্যসনেস কালামার্ড বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর অমানবিক আচরণ, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মান-মর্যাদাকে ইচ্ছাকৃতভাবে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে আসছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের প্রকাশিত তথ্য দেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনিই জেগে ওঠা উচিত। কারণ, এটা গণহত্যা। অবশ্যই এখনিই এই গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।’ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালালে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজায় প্রাণঘাতি অভিযান চালানো শুরু করে এবং হামাসকে চিরতরে নিমূর্লের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। জাতিসংঘের দেয়া তথ্যানুযায়ী ও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে, এই পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪৪ হাজার ৫৩২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের তথ্য মতে, গাজায় ইসরাইলি হামলায় এই পর্যন্ত ১৭ হাজারের মত শিশু নিহত হয়েছে। অ্যসনেস কালামার্ড বলেছেন, ‘সংস্থার তথ্যগুলো গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘ সনদের মানদন্ড অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে।’ কিন্তু, ইসরাইল বার বার গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং অভিযোগ করে বলেছে, ‘হামাস বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।’

চেন্নাইয়ে বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে গ্রেপ্তার ৫০০

ভারতের চেন্নাইয়ে অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ করায় ৫০০ ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এদের মধ্যে ১০০ জন নারী রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) চেন্নাইয়ের রাজা রত্নম স্টেডিয়ামের সামনে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন তারা। এই প্রতিবাদে অংশ নেন বিজেপি, আরএসএস, এবিভিপি, হিন্দু মুনানি এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা।বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন হিন্দু মুনানির সংগঠক রাজু। এতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাজ্যপাল তামিলিসাই সাউন্দারারাজন, আরএসএস নেতা কেশব বিনয়গম এবং বিজেপি নেতা করু নাগরাজন ও ভি পি দুরাইস্বামী।এ সময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আন্না সালাইয়ের দিকে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটক করে।আটককৃতদের পুলিশের গাড়ি এবং এমটিসি বাসে করে আরআর স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে আনা হয়। তাদেরকে শহরের আন্না অডিটোরিয়াম ও পেরিয়ামেটের একটি করপোরেশন কমিউনিটি হলে আটকে রাখা হয়। পরে, পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এজমোর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এদিন বিক্ষোভের কারণে এজমোরের রুকমণি লক্ষ্মীপতি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে ১৫০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রতিবাদকারীরা যাতে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে মিছিল চালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য রাস্তার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যারিকেড বসানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় নির্বাহী গুলিতে নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দেশটির সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার’-এর প্রধান ব্রায়ান থম্পসন (৫০) গুলিতে নিহত হয়েছেন। সন্দেহভাজন হামলাকারীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সংবাদ এনবিসি নিউজ, বিবিসির। ব্রায়ান থম্পসনের স্ত্রী পলেট থম্পসন জানান, ব্রায়ান থম্পসনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে, এ নিয়ে তিনি বিস্তারিত আর কিছু জানতেন না। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে ম্যানহাটানের হিলটন হোটেলের বাইরে ব্রায়ান থম্পসনকে গুলি করে খুন করা হয়। পুলিশ জানায়, ব্রায়ানকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। তার দেহের পেছনের অংশে ও পায়ে গুলি লাগে। নিউইয়র্ক পুলিশ বলছে, ‘সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালিয়ে ব্রায়ানকে খুন করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারীর খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।’ সন্দেহভাজন হামলাকারী কালো হুডি পরা ছিল। পিঠে ছিল কালো রঙের ব্যাগ। গুলি করার পর তিনি পালিয়ে যান বলে পুলিশ জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড হেলথকেয়ার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ব্রায়ান থম্পসন থাকেন মিনেসোটায়। একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নিতে তিনি নিউইয়র্কে এসেছিলেন।

১ লাখ ডলার ছাড়ালো বিটকয়েনের দাম

নতুন উচ্চতায় উঠেছে বিটকয়েন। ইতিহাসে এই প্রথম বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার অতিক্রম করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিটকয়েনের পালে যে হাওয়া লাগা শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতা চলছে। বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে ওঠার পেছনেও ট্রাম্পের একটি ঘোষণা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে। সেটা হলো, ওয়াল স্ট্রিটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক কমিশনার পল অ্যাটকিন্সের নাম ঘোষণা। এই ব্যক্তি ক্রিপ্টোকারেন্সি বান্ধব হিসেবে পরিচিত। এখন যিনি এসিইসির কমিশনার, সেই গ্যারি জেন্সলারের তুলনায় তিনি অধিকতর বিটকয়েক বান্ধব। বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে উঠে যাওয়ায় ক্রিপ্টোকারেন্সি ভক্তরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন। বিটকয়েনের দাম সব সময় ওঠানামা করে। সে কারণে মানুষের মধ্যেও বিটকয়েনের প্রতি আকর্ষণ আছে। বিটকয়েনের বিনিয়োগকারীরা দাম বাড়লে যেমন উল্লাস প্রকাশ করেন, তেমনি দাম কমলে ধৈর্যের পরিচয় দেন।সামগ্রিকভাবে বিটকয়েনের দাম ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধির অর্থ হলো, ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। বিটকয়েনের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিকভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার মূলধন বেড়েছে। কয়েন মার্কেট ক্যাপের তথ্যানুসারে, ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার মূলধন এখন ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। ২০২১ সালেও ডোনাল্ড ট্রাম্প বিটকয়েনকে একধরনের জালিয়াতি মনে করতেন। এরপর ট্রাম্পের মতি পাল্টেছে। এবারের নির্বাচনের অঙ্গীকারে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের ক্রিপ্টোকারেন্সির রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন। বিটকয়েনের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা উল্লেখযোগ্য ঘটনা বটে। এখন বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার অতিক্রম করে যাওয়ার অর্থ হলো, গত ৫ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের দিন থেকে এই মুদ্রার দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। সেই সঙ্গে চলতি বছরের প্রথম ভাগের তুলনায় এই মুদ্রার দাম দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। বিটকয়েনের এমন উল্কার গতিতে উত্থান সত্ত্বেও এক গভীর রহস্য অনুদ্ঘাটিত থেকে গেছে। সেটা হলো, এর প্রতিষ্ঠাতা রহস্যময় সাতোশি নাকামোটোর প্রকৃত পরিচয় এখনো কেউ জানেন না। অনেক মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন, যদিও এখন পর্যন্ত কেউ সফল হতে পারেননি। গত অক্টোবরে এই রহস্য নিয়ে এইচবিও চ্যানেলে বড় পরিসরের তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়, যেখানে দাবি করা হয়, কানাডার বিটকয়েন বিশেষজ্ঞ পিটার টডই সম্ভবত সাতোশি নাকামোটো। কিন্তু সমস্যা সেই একটি, পিটার টড নিজেই এ দাবি অস্বীকার করেন এবং ক্রিপ্টো দুনিয়ার মানুষেরাও এইচবিওর এই দাবিতে গুরুত্ব দেয়নি। যুক্তরাজ্যের এক জরিপে দেখা গেছে, এখন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যেমন শিক্ষক, ব্যাংকার, নার্স ও আইটি পেশাদারেরা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে একসময় কারেন্সি যে শুধু প্রযুক্তি জগতের মানুষের বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে মনে করা হতো, সেই ধরাবাঁধা চিত্রটা পাল্টে গেছে। এই শ্রেণির মানুষেরা মনে করছেন, বিপুল পরিমাণে ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের সেরা মাধ্যম। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই বলেছেন, প্রথাগত আর্থিক ব্যবস্থায় তাঁদের আস্থা কমে গেছে। সে কারণে তাঁরা নিজেদের জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য এই মুদ্রা কেনার দিকে ছুটছেন।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি সাড়ে ৪৪ হাজার ছাড়াল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নারী-শিশুসহ আরও ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ নিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গত ১৪ মাসে গাজায় নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এ উপত্যকার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল দক্ষিণ গাজা উপত্যকার আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি অস্থায়ী শিবিরে ইসরায়েলের বোমা হামলায় নারী, শিশুসহ ২০ জন নিহত হয়েছেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষের মধ্য উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। হামলায় নারী ও শিশুরা ‘পুড়িয়ে মারা’ গেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বসতিগুলোতে নজিরবিহীন হামলায় চালিয়ে অন্তত ১২০০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৪ হাজার ৫৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ। আর ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলায় গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করল বিএসএফ

বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বাংলাদেশে সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে বিএসএফের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সংবাদ এএনআইয়ের। সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের অফিসে হামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তিন দিক থেকে বাংলাদেশ বেষ্টিত ত্রিপুরার সঙ্গে ভৌগোলিক নৈকট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের কারণে রাজ্যটিতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সীমান্তে টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য বিএসএফের সদস্যদের সীমান্তে উচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসএফের কয়েকজন কনস্টেবলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদারের ঘটনায় নিজেদের আত্মবিশ্বাসের কথা তুলে ধরেছেন। বিএসএফের কনস্টেবল রিয়াঙ্কা মুখার্জি বলেন, ‘বিএসএফে কাজ করার সময় তিনি নিজেকে ক্ষমতাবান ও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে মনে করেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি কনস্টেবল রিয়াঙ্কা মুখার্জি। গেল চার বছর ধরে বিএসএফে কাজ করছি। দায়িত্ব পালন করার সময় আমরা নিজেদের ক্ষমতাশালী বোধ করি। আমাদের সমাজের সব নারীকে এটা বোঝানোর জন্য আত্মবিশ্বাসী করে তোলে যে, আমরা নিজেদের দায়িত্ব নিতে পারি।’ মুকুরিয়া ইলা নামের বিএসএফের আরেক কনস্টেবল বলেন, ‘তিনি গত তিন বছর ধরে আগরতলায় কর্মরত রয়েছেন। আমি গুজরাটের বাসিন্দা। আমি বর্তমানে বিএসএফের ৮১তম ব্যাটালিয়নের ইকো কমিউনিকেশন চৌকিতে কর্তব্যরত রয়েছি। আমরা গত তিন বছর ধরে এখানে অবস্থান ও সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমার এই ধরনের দায়িত্ব বা কাজ করা উচিত নয় বলে পরিবার থেকে বলেছে। কিন্তু, সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরি করা আমার সব সময়ই স্বপ্ন ছিল। বিএসএফে আমাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা রয়েছে। আমরা কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি না। প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা আমাদের দেওয়া হয়। বিএসএফের একজন সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দিত।’ বিএসএফের এই কনস্টেবল বলেন, ‘আমি সব নারীকে বিএসএফে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে চাই। কারণ, পুরুষরা যদি এই দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে আমরা নারীরাও তা করতে পারব।’ বিএসএফের সেকেন্ড-ইন কমান্ড রাজেশ কুমার লাঙ্গেহ বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা বজায় রাখতে বিএসএফের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সীমান্ত অধিক সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতা বাড়িয়েছে বিএসএফ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।’ ভারতীয় এই বাহিনী সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা বজায় রেখে দিনের ২৪ ঘণ্টা এবং বছরের ৩৬৫ দিনই দায়িত্ব পালন করে বলে জানান তিনি। বিএসএফের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএসএফের প্রত্যেক সদস্যই নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তারা যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন। বিএসএফ সামলাতে পারেনি সীমান্তে এমন পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি।’ রাজেশ কুমার লাঙ্গেহ বলেন, ‘আমরা সর্বদা আমাদের দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। আমাদের দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে যাতে পালন করা হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করছি।’

শুধু খাদ্য না, বাংলাদেশিদের সব বন্ধ; হুমকি ভারতের রাজনীতিবিদের

বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নের কথিত ঘটনায় প্রতিবেশী দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর )সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু খাদ্য না, বাংলাদেশিদের সব বন্ধ করে দেব।’ তিনি আরো বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কেউ স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেননি। উনি কী বুঝবেন স্বাধীনতার মর্ম?’ সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ‘সন্ন্যাসীদের পেট্রাপোল অভিযান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বলেছেন, ওরা বাংলাদেশের খাদ্য বন্ধ করতে গেছে।’ উত্তরে এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘ভারতের পাতাকায় যারা পা দিয়েছে, শুধু খাবার না, তাদের আর কী কী বন্ধ করি আপনারা দেখুন। ওদের চিকিৎসাও বন্ধ করে দেব। দেশ আগে। মুখ্যমন্ত্রী দেশের মর্ম বোঝেন না বলে এই ধরণের কথা বলেন।’ এর পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘আমার পরিবারের বিপিন অধিকারী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে আট বছর জেলে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের কেউ স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেননি। আমার মা ৬০ সালে বরিসাল থেকে এখানে এসেছিলেন। আমি অত্যাচার জানি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করে স্বাধীনতার মর্ম বুঝবেন?’ তিনি বলেন, ‘বিধানসভা থেকে দিল্লির সরকারকে সনাতন বোর্ড তৈরির আবেদন জানানো উচিত। সব জিহাদের বিরুদ্ধে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও ধর্মান্তরণের বিরুদ্ধে বিল আনা উচিত।’ এর পরই দাবি করেন, ‘সারা পৃথিবীতে এনআরসি আছে, আমাদের দেশেও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মাটি পশ্চিমবঙ্গ থেকে আওয়াজ উঠবে, উই ওয়ান্ট এনআরসি। এনআরসি হলে রোহিঙ্গাগুলো থাকতে পারবে না। এটা হিন্দু - মুসলমানের বিষয় নয়। এটা ভারতীয়দের নিজস্ব বিষয়।’

বাংলাদেশিদের তৈরি বিরিয়ানি বয়কটের ডাক, সভা শেষেই বিতরণ দশ হাজার প্যাকেট!

ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে এই মুহূর্তে উত্তাল বাংলাদেশ। এপার বাংলাতেও এনিয়ে প্রতিদিনই তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন হচ্ছে। আর এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে এপারে বাংলাদেশিদের দোকানে তৈরি বিরিয়ানি বয়কটের ডাক দিতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল সনাতনী ঐক্য পরিষদ। কিন্তু, সেই প্রতিবাদ কর্মসূচির শেষে সভাস্থল ভরে উঠল বিরিয়ানির গন্ধে। সভায় অংশগ্রহণকারীদের বিতরণ করা হল বিরিয়ানি। সভা শেষে প্রায় দশ হাজার প্যাকেট বিরিয়ানি বিতরণ করা হয়েছে। এই নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ ও চিন্ময় দাসের মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ তোলা হয়, বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশ করে এ দেশে বিরিয়ানির দোকান তৈরি করছে। তাই, তাদের তৈরি বিরিয়ানি বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। সেই সভাকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার সনাতনী হিন্দুরা সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। জানা গেছে, সনাতনী ঐক্য পরিষদের আড়ালে এটি ছিল বিজেপির সভা। ফলে, বিজেপির প্রচুর কর্মী সমর্থকও এই সভায় ছিল। বিজেপির একাধিক নেতা বিধায়ক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তারা একে একে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তৈরি বিরিয়ানি বয়কটের ডাক দেন। সভায় ছিলেন বিজেপির নেতা অর্জুন সিং। তিনি দাবি করেন, রাজ্যে যেভাবে বিরিয়ানি দোকান গড়ে উঠছে, কোনভাবেই সেগুলি হিন্দুদের হতে পারে না। অর্জুন সিং সভা থেকেই বার্তা দেন, ওপার বাংলায় থাকা হিন্দুদের সব ধরনের সাহায্য করা হবে। প্রয়োজনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠিও লিখবেন বলে জানান। সভায় ছিলেন কালিকানন্দ মহারাজ। তিনিও বিরিয়ানি বয়কটের ডাক দেন। বিজেপির অন্যান্য নেতারাও একই বার্তা দেন। এর পাশাপাশি, হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন বিজেপির নেতারা। সভা শেষে সনাতনীদের নিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ড পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখানে ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তবে, জিরো পয়েন্টের ৩০ মিটার আগে বিএসএফ তাদের মিছিল আটকায়। শেষে সেখানে বেলুন উড়িয়ে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। যদিও অনুষ্ঠান শেষে দেখা যায়, সভায় আসা মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হল বিরিয়ানিরই প্যাকেট। জানা গেছে, ওই দিন দশ হাজার মানুষের জন্য বিরিয়ানির ব্যবস্থা ছিল। সভা শেষে সকলের হাতে বিরিয়ানি তুলে দেওয়া হয়। প্রায় সকলের হাতেই বিরিয়ানির প্যাকেট দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা যুবনেতা ঋজু দত্ত। তার কটাক্ষ, ‘এটা আপনারা বন্ধ করতে পারবেন না।’

কুরস্কের যুদ্ধে ইউক্রেনের সৈন্যরা ক্লান্ত, ট্রাম্পের অপেক্ষায় তারা

হতাশার সুর যেন বিরাজ করছে চারপাশে। ‘পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমরা এর শেষ দেখতে পাচ্ছি না।’ রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে যুদ্ধ করা ইউক্রেনের এক সৈন্য এ কথা বলেন। সংবাদ বিবিসির। প্রায় চার মাস আগে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করে ইউক্রেইন। তারা কুরস্কের একটা অংশ দখল করে নিয়েছে। এর মধ্যে কুরস্কে কর্মরত বেশ কয়েকজন ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে টেলিগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তাদের একজন অবশ্য সম্প্রতি কুরস্ক থেকে দেশে চলে গেছেন। তবে, ইউক্রেনেরা সেনারা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি। সেনারা অঞ্চলটিতে বিরাজমান ভয়ানক প্রতিকূল আবহাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রের কঠিন পরিস্থিতির পাশাপাশি এখন যোগ হয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া।’ এখন শীতের সঙ্গেও লড়তে হচ্ছে তাদের। তারা বলেন, ‘ইউক্রেইনীয় সেনাদের হঠাতে রাশিয়া কুরস্কে ক্রমাগত বোমাবর্ষণ চলছে।’ ইউক্রেনেরা সেনারা বলেন, ‘রাশিয়া ভয়ংকর তিন হাজার কেজির গ্লাইড বোমাও ব্যবহার করছে কুরস্কে।’ রাশিয়ার বাহিনী ধীরে ধীরে এলাকা পুনর্দখল করায় তারাও পিছু হটছে বলে জানিয়েছে তারা। রাশিয়ার ক্রমাগত বোমাবর্ষণের কারণে ইউক্রেনেরা সেনারা ঘুমাতে পর্যন্ত পারছেন না। রাশিয়ার বাহিনীর হামলার মুখে ইউক্রেনেয় সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানায় তারা। তারা বলেন, ‘রাশিয়ার বাহিনী ধীরে ধীরে ইউক্রেনের সেনাদের দখল করা অঞ্চল পুনরুদ্ধার করছে।’ গেল ২৬ নভেম্বর পাভলো (ছদ্মনাম) নামের ইউক্রেনেরা সেনা জানিয়েছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি ধারণা করছেন। এমনকি ইউক্রেনের সেনাদের কুরস্কের দখল করা এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারানো সময়ের ব্যাপারমাত্র। ইউক্রেনেরা সেনারা বর্তমানে ঠিক কতটা ক্লান্তিকর পরিস্থিতি পার করছে, সেই কথাই জানান পাভলো। পাভলো জানিয়েছেন, নতুন যে সেনা ইউনিট ইউক্রেইন কুরস্কে মোতায়েন করছে, তা মূলত মধ্যবয়সী পুরুষদের দল। এ দলগুলো অন্য কোন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি কুরস্কে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে, ইউক্রেনেরা সেনাদের বিশ্রামের সুযোগ নেই। পাভলো নামের এক সেনা সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন। সেনাদের অভিযোগ, তাদের কমান্ডিং অফিসার, আদেশ ও সরঞ্জামের অভাব। এটা আসলে খুব অস্বাভাবিক কিছু না। কঠিন পরিস্থিতিতে সেনারা প্রায়ই এমন হতাশায় ভুগে থাকেন। ইউক্রেনেরা সেনাদের নানা অভিযোগের কথাও তুলে ধরেছে। কমান্ডিং অফিসার, তাদের আদেশ, যুদ্ধ সরঞ্জামসহ বিভিন্ন বিষয়ের অভাব নিয়ে তারা অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু, এসব অভাব-অভিযোগের কথা শোনা হচ্ছে না বলে জানান ইউক্রেনের সেনারা। ইউক্রেনেরা সেনারা বলেন, ‘তারা খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া দিক থেকে প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। অন্য দিকে, সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা আছে, তাও মনে হচ্ছে না।’ ইউক্রেনের সেনারা বেশিভারভাগই হতাশায় ভুগছে। তথ্যানুযায়ী, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেইনীয় সেনাদের মধ্যে প্রেরণার অভাব থাকার বিষয়টিও উঠে এসেছে তাদের কথায়। ইউক্রেনের পূর্ব ফ্রন্ট থেকে রাশিয়ার সেনাদের সরিয়ে আনা এ অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্যগুলোর একটি। কিন্তু, এ পরিকল্পনা কাজ করছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। ইউক্রেনেরা সেনারা বলছেন, ‘এখন কিয়েভের নির্দেশ হল, রাশিয়ার ভূখণ্ডের এই ছোট অংশটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা। জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজে না আসা পর্যন্ত রাশিয়ার ভূখণ্ডের এই ছোট্ট অংশের দখল ধরে রাখার নির্দেশ রয়েছে।’ ইউক্রেনের সেনা পাভলো বলেন, ‘ট্রাম্পের অভিষেক ও আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত আমাদের সামনে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সর্বোচ্চ অঞ্চল ধরে রাখা। যাতে পরে কোন কিছুর বিনিময়ে অঞ্চলটি দর কষাকষিতে কাজে আসে। কিন্তু কেউ জানে না, সেটা কী।’ গেল নভেম্বরের শেষের দিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ইঙ্গিত অনুযায়ী উভয় পক্ষই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখেছে। পাভলো বলেন, ‘আমি নিশ্চিত তিনি (পুতিন) আমাদের (ইউক্রেন সেনা) ২০ জানুয়ারির মধ্যে কুরস্ক থেকে বিতাড়িত করতে চান। এটি প্রমাণ করা তার (পুতিন) জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন। কিন্তু, তিনি আদতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।’ কুরস্কে রাশিয়ার পাল্টা হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনকে সহায়তা করার প্রয়াসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স কিয়েভকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। অন্য দিকে, ইউক্রেন এরই মধ্যে গেল আগস্টে কুরস্কে দখল করা প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা হারিয়েছে। ভাদিম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘মূল লক্ষ্য দখল করা নয়। বরং, ধরে রাখা এবং আমরা এটি নিয়ে লড়াই করছি।’ ক্ষয়ক্ষতি হলেও ভাদিম মনে করেন, কুরস্ক অভিযান এখনও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে কিছু রাশিয়ার বাহিনীকে জাপোরিজিয়া ও খারকিভ থেকে সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তবে, আমরা যেসব সেনার সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের কয়েকজন বলেছেন, তারা মনে করছেন, তারা ভুল জায়গায় আছেন, রাশিয়ার কিছু অংশ দখল করার চেয়ে ইউক্রেইনের পূর্ব ফ্রন্টে থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ রাশিয়ার পাল্টা আক্রমণে যোগ দিতে কুরস্কে উত্তর কোরিয়ার প্রায় দশ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে বলে কয়েক সপ্তাহ ধরে খবর পাওয়ার পরও আমরা যে সেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা এখনও তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত নয়। ‘আমি জীবিত বা মৃত কোরিয়ানদের সম্পর্কে কিছুই দেখিনি বা শুনিনি।’ জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন ভাদিম। তবে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার রেডিও যোগাযোগের রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলছেন, ‘এত কষ্টের মধ্যেও কুরস্ক অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা কেন্দ্রের কর্মকর্তা সেরহি কুজান বলেন, ‘এটিই একমাত্র এলাকা, যেখানে আমরা এই উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।’ তিনি স্বীকার করেছেন যে, ইউক্রেনের বাহিনী কুরস্কে ‘অবিশ্বাস্যভাবে কঠিন পরিস্থিতির’ মুখোমুখি হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া তাদেরকে হটানোর জন্য প্রচুর সম্পদ ব্যয় করছে।’ তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, আর্টিলারি, হিমারস ও অবশ্যই দূরপাল্লার অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আমরা এই কুরস্ক ফ্রন্টকে যত বেশি সময় ধরে রাখতে পারব ততই মঙ্গল।’

কয়েক ঘণ্টার নাটকীয়তার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহার

নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জনতার বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এর আগে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে হঠাৎ দেশে জরুরি সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক-ইওল। সংবাদ রয়টার্সের। উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সুরক্ষায় ও রাষ্ট্রবিরোধী নানা শক্তিকে নির্মূল করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে দাবি করেছিলেন তিনি। ইউন সুকের পিপল পাওয়ার পার্টি ও প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে আগামী বছরের বাজেট বিল নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে এমন পদক্ষেপের ঘোষণা এসেছিল। সামরিক আইন জারির পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। তারা কোরিয়ার আইনসভা জাতীয় পরিষদের বাইরে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পার্লামেন্টের আশপাশে নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতভাবে প্রেসিডেন্টের সামরিক আইন জারির ফরমান প্রত্যাখ্যান করেন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর নাগাদ আইনসভা সামরিক আইন বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ভোর সাড়ে চারটায় ফের টেলিভিশন ভাষণে এসে ইউন সুক-ইওল বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে জাতীয় পরিষদ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে এবং আমরা সামরিক আইন বলবৎ করতে মোতায়েন করা সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাতীয় পরিষদের আহ্বান মেনে নেব ও মন্ত্রিসভা বৈঠকের মাধ্যমে সামরিক আইন তুলে নেব।’ সরকারের এই ‘ইউ-টার্নে’ প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে রাস্তায় জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। জনতা চিৎকার করে বলছিল, ‘আমরা জিতেছি!’ একজনকে আনন্দে ড্রাম বাজাতেও দেখা দেখা গেছে। সামরিক আইন মানে জরুরি সময়ে সামরিক কর্তৃপক্ষের শাসন এবং এর অর্থ স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার স্থগিত করা। ১৯৮৭ সালে গণতন্ত্রে ফেরার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় আর সামরিক আইন জারির প্রয়োজন পড়েনি। ১৯৭৯ সালে এক অভ্যুত্থানে দীর্ঘ দিনের সামরিক শাসক পার্ক চুং নিহত হওয়ার পর শেষ বার দেশটিতে সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই ৪৫ বছর পর ফের এই দমনমূলক আইন জারিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল দেশটির মানুষ। গেল এপ্রিলে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিরোধী দল বিপুল বিজয় অর্জনের পর থেকেই মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল ইউনের সরকার। এছাড়া, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে ফার্স্ট লেডির ‘ডিও’র ব্যাগ উপহার নেওয়া ও শেয়ার বাজারে কারসাজির অভিযোগও রয়েছে। চলতি সপ্তাহে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বাজেট কমানোর প্রস্তাবে ভিটোও দিতে পারেনি ইউন সরকার। ফার্স্ট লেডির দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ব্যর্থতার জন্য সরকারের নিরীক্ষা সংস্থা, মন্ত্রিসভা ও কৌঁসুলিদের অভিসংশনেও উদ্যোগী হয়েছিল বিরোধীরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট যখন আচমকা সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন, তখন প্রথমে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি টেনে আনলেও পরে বিরোধী দলকেও দোষারোপ করেন। বিরোধী দল তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠাতাকে ব্যবহার করে সরকারকে পঙ্গু করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন প্রেসিডেন্ট। ইউনের সামরিক আইন জারির ঘোষণায় দেশটির মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখনও লৌহকঠিন মজবুত।’ পাশাপাশি সামরিক আইন জারির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশও করেন মুখপাত্র। ‘আমরা গভীর উদ্বেগ নিয়ে (দক্ষিণ কোরিয়ার ঘটনা) পর্যবেক্ষণ করছি ও মাঠ পর্যায় থেকে ঘনিষ্ঠভাবে সেখানে নজর রাখছি।’ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একজন মুখপাত্রও দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেছেন।

ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিত্র শেখ হাসিনা। এরপর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে চলছে টানাপোড়েন। আর সম্মিলিত সনাতন জাগরনী মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য নিজেদের পররাষ্ট্র সচিবকে ঢাকায় পাঠাচ্ছে ভারত। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গত আগস্টে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিনিয়র কোনও ভারতীয় কর্মকর্তার ঢাকায় এটিই প্রথম সফর হতে চলেছে বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, উভয় দেশের কেউই এখনও এই সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা দেয়নি। তবে বিক্রম মিসরি সম্ভবত আগামী ১০ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক আলোচনার জন্য বাংলাদেশে আসবেন। উভয় দেশের রাজধানীতে তথা ঢাকা ও দিল্লিতে বিক্রমের সফরের প্রস্তুতির বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একথা জানিয়েছেন। ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরির এই সফরটি এমন এক সময়ে হতে চলেছে যখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে অভূতপূর্ব উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের অভিযোগে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়েকটি ভারতীয় রাজ্যে বিক্ষোভ হচ্ছে। এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অবসরে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত লোকেরা জানিয়েছে। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার পর এবং আগস্টে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর সেই সময়ে এটিই ছিল উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথম উচ্চ-পর্যায়ের কোনও মতবিনিময়। ওপরে উদ্ধৃত ব্যক্তিদের একজন জানিয়েছেন, “বিষয়টি যেমন ঠিক হয়েছে, পররাষ্ট্র সচিবের আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। তবে সফরের আগে এখনও এক সপ্তাহ বাকি আছে এবং বর্তমান সম্পর্কের অবস্থা ও পরিস্থিতি আমাদের দেখতে হবে।” তিনি ভারতে হাসিনার উপস্থিতি নিয়ে ঢাকার অসন্তোষসহ বিভিন্ন কারণে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সৃষ্ট কূটনৈতিক উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে এই কথা বলেন। মূলত বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনাকে ভারত থেকে প্রত্যর্পণের কথা বলেছেন ড. ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য নেতারা। এর আগে উভয় দেশের দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে সর্বশেষ সংলাপ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারের সংলাপে ভারত-অর্থায়নকৃত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করা, ভিসা ব্যবস্থা সহজ করা, আরও সরাসরি ফ্লাইট চালু করা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মতো ইস্যু অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত লোকেরা জানিয়েছে। ভারতের দ্বিতীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ এই সফরটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য আগ্রহী। কারণ ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সম্ভাব্য এই সফরকে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ শুরুর একটি সুযোগ হিসাবে দেখা হচ্ছে। সফর ঠিকঠাকভাবে অনুষ্ঠিত হলে মিসরি ও ড. ইউনূসের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প

ভারতের তেলেঙ্গানায় ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য মতে, সকাল ৭টা ২৭ মিনিটে তেলেঙ্গানার মুলুগু জেলায় ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্রটি মাটি থেকে ৪০ কিলোমিটার গভীরে ছিল। হায়দরাবাদ, মুলুগু ও এর পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষ এই ভূকম্পন অনুভব করেছেন। এরপরই সামাজিক মাধ্যমে ভূমিকম্পের মুহূর্তের বিভিন্ন ভিডিও শেয়ার করা শুরু করেন নেটিজেনরা। তেলঙ্গানা ওয়েদারম্যান নামে এক এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে বলা হয়, গত ২০ বছরে প্রথমবারের মতো তেলেঙ্গানায় সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তেলেঙ্গানা সিসমিক জোন-২-তে পড়েছে। এর মানে হলো রাজ্যটি ভূমিকম্পের সর্বনিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চলে রয়েছে। তারপরও আজ সেখানে ভূমিকম্প হলো। ভারতে চারটি সিসমিক জোন রয়েছে। জোন-২ থেকে শুরু করে জোন-৬ পর্যন্ত। এর মধ্যে জোন-২ সর্বনিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ এবং জোন-৬ সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চল।

পাকিস্তানের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে চিনি কিনল বাংলাদেশ

পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টন চিনি কিনেছে বাংলাদেশ। উচ্চ মানসম্পন্ন এই চিনি আগামী মাসেই বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। কয়েক দশক পর দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির কাছ থেকে এতো বিপুল পরিমাণে চিনি কিনল ঢাকা। এর আগে ভারতের কাছ থেকে চিনি কিনতো বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টন উচ্চমানের চিনি কিনেছে বাংলাদেশ, যা আগামী মাসে করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। কর্মকর্তাদের মতে, বহু দশক পর ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ বাংলাদেশে এত বিপুল পরিমাণে নিজেদের উৎপাচিত পণ্য পাঠাচ্ছে পাকিস্তানি চিনি শিল্প। গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম প্রতি টনে ৫৩০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, এর আগে ভারত থেকে চিনি আমদানি করে আসছিল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের অনুমোদনের পর এই বছর কমবেশি ৬ লাখ টন চিনি রপ্তানির চুক্তি করেছে পাকিস্তানের চিনি শিল্প। এর মধ্যে ৭০ হাজার টন চিনি পাকিস্তান থেকে পাঠানো হবে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে। থাইল্যান্ড পাকিস্তানের চিনি শিল্প থেকে ৫০ হাজার টন চিনি কিনেছে। পাকিস্তানের চিনি ব্যবসায়ীদের কর্মকর্তা মজিদ মালিকের মতে, উপসাগরীয় রাষ্ট্র, আরব দেশ এবং আফ্রিকান দেশগুলোও পাকিস্তান থেকে চিনি কেনার চুক্তি করেছে। চিনি রপ্তানি থেকে পাকিস্তান ৪০০-৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। মূলত পাকিস্তানের চিনি শিল্প দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির জন্য একটি প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী শিল্প হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের যৌথ প্রচেষ্টায় দেশের চিনি শিল্পও সফলভাবে বিপুল পরিমাণ চিনি রপ্তানি করে চলেছে। এর আগে এসব চিনি আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কাজাখস্তান এবং আজারবাইজানে পাচার হয়ে যেত। চলতি বছর পাকিস্তানের ৮০ টিরও বেশি চিনিকল গত সোমবার থেকে চিনি উৎপাদন শুরু করেছে।

চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের ইস্যুটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে। দেশটি বলেছে, আটক ব্যক্তিদের উপযুক্ত আইনি সুযোগ দিতে হবে এবং মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সাথে আচরণ করা প্রয়োজন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল এসব কথা বলেন। এছাড়া ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এদিনের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে কথিত সহিংসতার বিষয়ে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগের সমাধান করার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চান। জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমরা প্রতিটি সরকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কাজ করি, যাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে – আমরা স্পষ্ট করেছি- মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান থাকা দরকার; ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। যেকোনও ধরনের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত এবং যে কোনও ধরনের ক্র্যাকডাউন – এমনকি ক্র্যাকডাউন না হলেও – সকল দেশের সরকারকে আইনের শাসনকে সম্মান করতে হবে এবং এর অংশ হিসাবে মৌলিক মানবাধিকারকেও সম্মান করতে হবে। আর এই বিষয়ে আমরা গুরুত্বারোপ চালিয়ে যাব। পরে ওই প্রশ্নকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশে ইসকনের নেতা। এছাড়াও ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রস্তাবিত পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডও ইসকনের সদস্য। চিন্ময় দাসকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কারাগারে রাখা হয়েছে এবং বাংলাদেশের কোনও আইনজীবী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে দাঁড়াতে রাজি নয়, কারণ তার আইনজীবীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা কি কোনও ব্যবস্থা নেবেন? জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমার কাছে এই মামলার কোনও বিবরণ নেই। কিন্তু আবারও বলব, আমরা জোর দিয়ে যাচ্ছি এবং ইতোমধ্যেই জোর দিয়েছি, যারা আটক আছে তাদের পক্ষেও উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব করতে দিতে হবে এবং মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সাথে আচরণ করা প্রয়োজন।

সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমেছে ভারতীয় রুপির দাম

খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি। আগে যেখানে পূর্বাভাস ছিল চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হবে, সেখানে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৪ শতাংশ হারে; যা ১৮ মাসের সর্বনিম্ন। এর প্রভাব পড়েছে রুপির দামেও। ফলে গতকাল মঙ্গলবার ভারতে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে ৮৪.৭৫ রুপিতে পৌঁছেছে। আর এর ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গেল। অনেকে আশঙ্কা করছেন রুপির দরপতন আরও বেশি হতো। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইয়ের হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা থামানো গেছে। আরবিআই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে রুপি তুলে নিয়েছে। ফলে দরপতন কিছুটা থেমেছে। তবে রুপির ধারাবাহিক দরপতনকে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগজনক বলছেন। কয়েক মাস ধরেই রুপির দর রুখতে বাজারে হস্তক্ষেপ করছে আরবিআই। রুপির দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। আমদানি-রপ্তানি থেকে শুরু করে বিদেশে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের, সকলেই প্রভাবিত হচ্ছেন। রুপির দরপতনের খেসারত ভোগ করতে হবে সাধারণ গ্রাহকদের।

ইসরায়েলি হামলা গাজায় আরও ৩৬ জন নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৯৬ জন। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৩৬ জন নিহত এবং আরও ৯৬ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৫০২ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত ১ লাখ ৫ হাজার ৪৫৪ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইমরান খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এ তালিকায় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপোরসহ আরও ৯৪ জন রয়েছেন। সংবাদ দ্য ডনের। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাদের সবাই ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এ তালিকায় রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী, পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার আসাদ কায়সার, পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান গহর খান, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুব খানসহ আরও অনেকে।অনেক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। তার স্ত্রী বুশরা বিবি আলোচিত তোশাখানা মামলার আসামি হিসেবে নয় মাস কারাবাসের পর গত নভেম্বরে জামিন পেয়েছেন।বুশরা জামিন পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ইমরান খানের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর ইসলাসাবাদ অভিমুখে রওনা দেন পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। গেল ২৭ নভেম্বর তারা ইসলামাবাদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ডি-চকে এসে পৌঁছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করেন। সেখানে পুলিশ ও পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় তাদের।গেল ১৩ নভেম্বর সরকার পতনে ‘চূড়ান্ত আন্দোলন’-এর ডাক দিয়েছিলেন ইমরান খান। তার নির্দেশেই ২৪ নভেম্বর বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে পিটিআই। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, ২৭ নভেম্বরের সংঘর্ষে পিটিআইয়ের ১২ জন কর্মী-সমর্থক নিহত হয়েছেন।তবে, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আলী আমিন গান্দাপোর ও বুশরা বিবি ছাড়া দলের অন্য কোন নেতাকে দেখা যায়নি। আর ২৭ নভেম্বর কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন বুশরা বিবি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় আচানক সামরিক আইন জারি

দক্ষিণ কোরিয়ায় আচানক সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। সংবাদ সিএনএনের। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল টেলিভিশন ভাষণে এ ঘোষণা দেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ওই ভাষণে সামরিক আইন ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট। দেশটির প্রধান বিরোধী দলকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত করেছেন তিনি। জাতির উদ্দেশে ইউন সুক ইওল বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে উদার দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করার জন্য ও রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোকে নির্মূল করার জন্য... আমি এতদ্বারা জরুরি সামরিক আইন ঘোষণা করছি।’

বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে এবার ভারতের লোকসভায় প্রস্তাব

সংখ্যালঘু নিপীড়নের কথিত অভিযোগে এবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের পাঠানোর প্রস্তাব উঠেছে ভারতের সংসদ লোকসভায়। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) লোকসভায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করেছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)। এর আগে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একই ধরনের দাবি জানান মমতা। সংবাদ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। লোকসভায় দেওয়া বক্তৃতায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিবৃতি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে এবং তারা এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে ও কেন্দ্রের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানাবে।’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আরো বলেন, ‘আমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উত্থাপন করতে চাই। আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ; যেখানে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের নির্যাতন ও হত্যা করা হচ্ছে...। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাথেও দেশটি সংযুক্ত। আমরা যে আহ্বান জানাচ্ছি তা হল, ভারত সরকার অবিলম্বে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন করুক।’ তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে এসে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের অবহিত করুন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল (সোমবার) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেছেন, ভারত সরকার যে সিদ্ধান্তই নেবে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে ও দেশ ভাগের পরে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে যাওয়া শরণার্থীদের কথা উল্লেখ করেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার পর লোকসভায় বাংলায় কথা বলেন বিজেপি দলীয় সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এ সময় তিনি বাংলাদেশি হিন্দু হওয়াটা কোন অপরাধ কি না তা জানতে চান। এর আগে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেক ধর্ম ও বর্ণের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানান। এই বিষয়ে ভারতের সংসদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছ থেকে বিবৃতিও দাবি করেন।

মাইক্রোসফটের সমীক্ষা: পৃথিবীতে ভুয়া খবর ছড়ানোয় শীর্ষে ভারত

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভারত। বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমগুলোও। মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভুয়া সংবাদ ছড়ায় ভারত। মাইক্রোসফটের জরিপ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশেরও বেশি অনলাইনে ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছেন; যেখানে এ হারের বৈশ্বিক গড় ৫৭ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট প্রতারণার শিকার হয়েছেন- যা বৈশ্বিক গড় ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি। অন্য দিকে, ৪২ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, ‘তারা ফিশিং বা স্পুফিংয়ের সম্মুখীন হয়েছেন।’ এ জরিপে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন বুলিং, অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন বার্তা, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ভারতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব কর্তৃক অনলাইনে ঝুঁকি ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুত বাড়ছে। ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে পরিবার ও বন্ধুদের মাধ্যমে অনলাইন ঝুঁকি ছড়ানোর হার নয় শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে। মোটা দাগে এ জরিপে ভারতে ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকি বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০২৪ গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মিথ্যা তথ্য (ডিসইনফরমেশন) ও ভ্রান্ত তথ্য (মিসইনফরমেশন) ভারতে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।’ ২০২৪ সালের ৩৪টি সম্ভাব্য ঝুঁকিযুক্ত দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে শীর্ষ স্থানে। সংক্রমণজনিত রোগ, অবৈধ অর্থনৈতিক কার্যক্রম, অর্থনৈতিক অসমতা ও শ্রম সংকটের মত বিষয়গুলোকেও এই ঝুঁকি ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে ভুয়া খবর প্রচারিত হয়। সেসময় এসব মাধ্যমকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। স্ট্যাটিস্টার সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে, ভারতের প্রথম বারের ভোটারদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই ভুয়া খবরকে একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখেছেন। তবে, ভারতীয় রাজনীতিতে মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। উদ্বেগের বিষয় হল- আজকের দিনে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমের মত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যাচাইবিহীন তথ্য সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে, এমনকি সমালোচনামূলক চিন্তাধারার মানুষদের কাছেও। বিভিন্ন জরিপ ও গবেষণা বলছে, ‘ভারতীয়দের বড় একটি অংশ প্রধানত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর পান, যেখানে তথ্যের সঠিকতা খুব কমই যাচাই করা হয়। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে ভারতের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভারতেই সবচেয়ে বেশি কনটেন্ট ফরওয়ার্ড করা হয়।’ দুঃখজনক বিষয় হল- বেশির ভাগ ভারতীয় পরিবারের বা বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া বার্তার ওপর অন্ধভাবে বিশ্বাস করেন। ফলে, যাচাই ছাড়াই বার্তা ফরওয়ার্ড করা হয়, যা সামাজিক ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য আরও দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়েও দেশটির মূলধারার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন ভুল খবর প্রকাশ করছে। ভুয়া খবর প্রকাশের তালিকায় আছে হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস অভ ইন্ডিয়া ইত্যাদির মত প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমও। বিশেষ করে গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশসংক্রান্ত ভুয়া খবর বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। উদাহরণস্বরূপ, গেল শনিবার (৩০ নভেম্বর) ভারতের আগরতলা থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঘটনাকে ‘হামলা’ উল্লেখ করে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইমার্জেন্সি ব্রেক কষতে গিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি ডেলিভারি ভ্যানকে চাপা দেয় বাসটি। তবে, এতে বাসের কেউ আহত হয়নি। কিন্তু, ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ক্ষোভ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমেও দুর্ঘটনাকে ‘হামলা’ উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার করা হয়। এর আগে, গণহত্যা, দুর্নীতি ও কোটি কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হলে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ প্রতিবেদনের মিথ্যা তথ্য খণ্ডন করা হয়। এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে ছড়ানো হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়নি। বরং, কোন তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজ, আরটি ইন্ডিয়া একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেছিল, প্রতিমা বিসর্জনের সময় মুসলিমরা হিন্দু মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু, রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই দাবিটিও ভুয়া। ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়। বরং, ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। এ রকম বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম; এমনকি সংবাদমাধ্যমও। এ নিয়ে বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারত সরকার ভুয়া খবর মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বরং, ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েই চলছে। যা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনী স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের

পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনি স্বীকৃতির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কৃষি রাসায়নিকের সীমান্ত অতিক্রমের নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যথাযথ নজরদারি প্রয়োগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন। রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জনগণের সমর্থন জরুরি। তবে, এই সহায়তা পানি নির্ভর শিল্প বা অস্থিতিশীল কৃষি পদ্ধতির জন্য বন্ধ করতে হবে।’ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেসার্টিফিকেশনের কপ১৬’-এর ফরমাল স্টেটমেন্ট অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে ন্যাশনাল স্টেটমেন্ট দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা চায়।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ইউএনসিসিডি কপ১৬ ভূমি অবক্ষয়মুক্ত বিশ্বের লক্ষ্যে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে সঠিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণে সহায়ক হবে।’ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন, মাত্র ১৪ দশমিক আট মিলিয়ন হেক্টর ভূমি দিয়ে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে হয়, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন ভূমি প্রাপ্যতার দেশ। রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূমি হারিয়ে যেতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তা আরও সংকটে ফেলবে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ও কৃষি রাসায়নিক ব্যবহারে ভূমি দূষণ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘সক্রিয় ডেল্টা অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশ প্রতি বছর নদী ভাঙনের কারণে দশ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। দেশে প্রতি বছর দুই দশমিক ছয় শতাংশ বনভূমি হারায়, যা বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা গত তিন দশকে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাছাড়া, ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়া ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা বেড়েছে।’ পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পরিবেশ ও জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অভিযোজন সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে পৃথিবীকে রক্ষায় ও তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদও অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।