মাইক্রোসফটের সমীক্ষা: পৃথিবীতে ভুয়া খবর ছড়ানোয় শীর্ষে ভারত
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভারত। বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমগুলোও। মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভুয়া সংবাদ ছড়ায় ভারত। মাইক্রোসফটের জরিপ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশেরও বেশি অনলাইনে ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছেন; যেখানে এ হারের বৈশ্বিক গড় ৫৭ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট প্রতারণার শিকার হয়েছেন- যা বৈশ্বিক গড় ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি। অন্য দিকে, ৪২ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, ‘তারা ফিশিং বা স্পুফিংয়ের সম্মুখীন হয়েছেন।’ এ জরিপে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন বুলিং, অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন বার্তা, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ভারতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব কর্তৃক অনলাইনে ঝুঁকি ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুত বাড়ছে। ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে পরিবার ও বন্ধুদের মাধ্যমে অনলাইন ঝুঁকি ছড়ানোর হার নয় শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে। মোটা দাগে এ জরিপে ভারতে ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকি বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০২৪ গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মিথ্যা তথ্য (ডিসইনফরমেশন) ও ভ্রান্ত তথ্য (মিসইনফরমেশন) ভারতে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।’ ২০২৪ সালের ৩৪টি সম্ভাব্য ঝুঁকিযুক্ত দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে শীর্ষ স্থানে। সংক্রমণজনিত রোগ, অবৈধ অর্থনৈতিক কার্যক্রম, অর্থনৈতিক অসমতা ও শ্রম সংকটের মত বিষয়গুলোকেও এই ঝুঁকি ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে ভুয়া খবর প্রচারিত হয়। সেসময় এসব মাধ্যমকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। স্ট্যাটিস্টার সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে, ভারতের প্রথম বারের ভোটারদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই ভুয়া খবরকে একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখেছেন। তবে, ভারতীয় রাজনীতিতে মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। উদ্বেগের বিষয় হল- আজকের দিনে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমের মত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যাচাইবিহীন তথ্য সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে, এমনকি সমালোচনামূলক চিন্তাধারার মানুষদের কাছেও। বিভিন্ন জরিপ ও গবেষণা বলছে, ‘ভারতীয়দের বড় একটি অংশ প্রধানত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর পান, যেখানে তথ্যের সঠিকতা খুব কমই যাচাই করা হয়। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে ভারতের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভারতেই সবচেয়ে বেশি কনটেন্ট ফরওয়ার্ড করা হয়।’ দুঃখজনক বিষয় হল- বেশির ভাগ ভারতীয় পরিবারের বা বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া বার্তার ওপর অন্ধভাবে বিশ্বাস করেন। ফলে, যাচাই ছাড়াই বার্তা ফরওয়ার্ড করা হয়, যা সামাজিক ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য আরও দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়েও দেশটির মূলধারার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন ভুল খবর প্রকাশ করছে। ভুয়া খবর প্রকাশের তালিকায় আছে হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস অভ ইন্ডিয়া ইত্যাদির মত প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমও। বিশেষ করে গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশসংক্রান্ত ভুয়া খবর বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। উদাহরণস্বরূপ, গেল শনিবার (৩০ নভেম্বর) ভারতের আগরতলা থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঘটনাকে ‘হামলা’ উল্লেখ করে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইমার্জেন্সি ব্রেক কষতে গিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি ডেলিভারি ভ্যানকে চাপা দেয় বাসটি। তবে, এতে বাসের কেউ আহত হয়নি। কিন্তু, ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ক্ষোভ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমেও দুর্ঘটনাকে ‘হামলা’ উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার করা হয়। এর আগে, গণহত্যা, দুর্নীতি ও কোটি কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হলে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ প্রতিবেদনের মিথ্যা তথ্য খণ্ডন করা হয়। এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে ছড়ানো হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়নি। বরং, কোন তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজ, আরটি ইন্ডিয়া একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেছিল, প্রতিমা বিসর্জনের সময় মুসলিমরা হিন্দু মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু, রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই দাবিটিও ভুয়া। ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়। বরং, ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। এ রকম বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম; এমনকি সংবাদমাধ্যমও। এ নিয়ে বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারত সরকার ভুয়া খবর মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বরং, ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েই চলছে। যা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।’
পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনী স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনি স্বীকৃতির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কৃষি রাসায়নিকের সীমান্ত অতিক্রমের নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যথাযথ নজরদারি প্রয়োগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন। রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জনগণের সমর্থন জরুরি। তবে, এই সহায়তা পানি নির্ভর শিল্প বা অস্থিতিশীল কৃষি পদ্ধতির জন্য বন্ধ করতে হবে।’ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেসার্টিফিকেশনের কপ১৬’-এর ফরমাল স্টেটমেন্ট অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে ন্যাশনাল স্টেটমেন্ট দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা চায়।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ইউএনসিসিডি কপ১৬ ভূমি অবক্ষয়মুক্ত বিশ্বের লক্ষ্যে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে সঠিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণে সহায়ক হবে।’ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন, মাত্র ১৪ দশমিক আট মিলিয়ন হেক্টর ভূমি দিয়ে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে হয়, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন ভূমি প্রাপ্যতার দেশ। রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূমি হারিয়ে যেতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তা আরও সংকটে ফেলবে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ও কৃষি রাসায়নিক ব্যবহারে ভূমি দূষণ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘সক্রিয় ডেল্টা অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশ প্রতি বছর নদী ভাঙনের কারণে দশ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। দেশে প্রতি বছর দুই দশমিক ছয় শতাংশ বনভূমি হারায়, যা বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা গত তিন দশকে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাছাড়া, ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়া ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা বেড়েছে।’ পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পরিবেশ ও জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অভিযোজন সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে পৃথিবীকে রক্ষায় ও তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদও অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।
বিলিয়নেয়ার ব্যাংকার স্টিফেনসকে ব্রিটেনে রাষ্ট্রদূত মনোনীত করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিলিয়নেয়ার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ওয়ারেন স্টিফেনসকে ব্রিটেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মনোনীত করেছেন। সংবাদা এএফপির। দীর্ঘ দিনের রিপাবলিকান এই দাতা এক বার ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছিলেন বলে কথিত আছে এবং ২০১৬ সালে তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দলের প্রাথমিক বিজয় ঠেকাতে নিয়োজিত একটি গোষ্ঠীকে অর্থ দিয়েছিলেন। দক্ষিণের রাজ্য আরকানসাসে অবস্থিত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক স্টিফেনস ইনকর্পোরেটেডের ব্যাংকার স্টিফেনস তার পর থেকে একটি রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটিতে অর্থ দিয়েছেন; যা ট্রাম্পের ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় সহায়তা করেছে। ট্রাম্প বিবৃতিতে বলেন, ‘ওয়ারেন সব সময়ই যুক্তরাষ্ট্রের পুরো সময় সেবা করার স্বপ্ন দেখেছেন। আমি রোমাঞ্চিত যে, তিনি এখন শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে সেই সুযোগ পাবেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে লালিত ও প্রিয় মিত্রদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন।’ ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারী তার দায়িত্ব গ্রহণের আগে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তার প্রশাসনের জন্য নিজস্ব লোকদের নিয়োগ দিচ্ছেন। তিনি সম্প্রতি ফ্রান্সে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার জামাই জ্যারেড কুশনারের বাবা চার্লস কুশনারে নাম ঘোষণা করেছেন। হোয়াইট হাউসে তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প আরেক ধনকুবের ও প্রচারণার সমর্থক ব্যবসায়ী উডি জনসনকে ব্রিটেনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
আগরতলায় কনস্যুলার সেবা বন্ধ বাংলাদেশের
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর কনস্যুলার সেবা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, সাময়িকভাবে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশের পর সেখানকার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় একদল উগ্র হিন্দু। তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে এনে ছিঁড়ে ফেলে ও মিশনের সাইনবোর্ড ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভারত সরকার দুঃখ প্রকাশ করে বিৃবতি দিয়েছে। অন্য দিকে, আগরতলার হাইকমিশনে ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ।
প্যারিসে নটরডেম গির্জার পুনরায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (২ ডিসেম্বর) বলেছেন, ‘তিনি সপ্তাহান্তে প্যারিসে পুনর্নির্মিত নটরডেম গির্জার পুনরায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।’ গির্জাটি ২০১৯ সালের আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। এএফপির। চ্যালেঞ্জিং পুনরুদ্ধারের পরে ৮৫০ বছরের পুরানো ভবনটি আগামী শনিবার ও রোববার ফের দর্শনার্থী ও উপাসকদের জন্য খুলে দেয়া হবে এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা যোগ দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তার ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘এটা ঘোষণা করা একটি সম্মানের বিষয় যে, আমি শনিবার (৭ ডিসেম্বর) মহতী ও ঐতিহাসিক নটরডেম ক্যাথেড্রালের পুনরায় উদ্বোধনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফ্রান্সের প্যারিস ভ্রমণে যাচ্ছি, পাঁচ বছর আগে একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পরে এটি সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।’ শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) মধ্যযুগীয় ক্যাথেড্রালের পুনরুদ্ধারের একটি পরিদর্শন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছেন, ‘শ্রমিকরা একটি জাতীয় ক্ষত নিরাময়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে।’ তিনি পাঁচ বছরের মধ্যে নটরডেম পুনর্নিমাণের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন এবং এটিকে আগের চেয়ে আরও বেশি সুন্দর করে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, ফরাসি কর্তৃপক্ষ বলেছে যে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। ট্রাম্প লিখেছেন যে, ‘ম্যাখোঁ নটরডেমকে তার আরও বেশি পূর্ণ গৌরবের স্তরে পুনরুদ্ধার করা নিশ্চিত করার জন্য একটি দুর্দান্ত কাজ করেছেন। এটি সবার জন্য একটি বিশেষ দিন হবে!’ প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (আজকের হারে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি) ব্যয়ে প্রায় ২৫০টি সংস্থা এবং শত শত বিশেষজ্ঞকে পুনরুদ্ধার কাজের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৫০টি দেশ থেকে সংহতির প্রকাশ করে প্রদত্ত ৮৪৬ মিলিয়ন ইউরোর অনুদান থেকে এর অর্থায়ন করা হয়েছে। ম্যাখোঁ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বলেছিলেন যে, ‘তিনি পোপ ফ্রান্সিসকে ক্যাথেড্রালটি পুনরায় উদ্বোধন করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কিছু পর্যবেক্ষককে অবাক করে দিয়ে ক্যাথলিক চার্চের প্রধান সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেন, তিনি আসবেন না।’ তার বদলে, পোপ পরের সপ্তাহান্তে ফরাসি দ্বীপ কর্সিকাতে একটি যুগান্তকারী সফর করছেন।
বাংলাদেশিদের রুম ভাড়া দেবে না ত্রিপুরার কোন হোটেল
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় কোন বাংলাদেশি পর্যটককে হোটেলের রুম ভাড়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার হোটেল মালিকরা। সোমবার (২ ডিসেম্বর) অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এক জরুরি সভায় তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে ত্রিপুরায় আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের কোন ধরনের হোটেল পরিষেবা দেয়া হবে না।’ সাময়িকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এসবের প্রতিবাদে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।এ দিকে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে ত্রিপুরার উত্তর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সমর্থকরা এ হামলা চালান বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে বিক্ষোভকারীদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হয়।’‘এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে ও সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরিতাপের বিষয়, প্রাঙ্গণ (হাইকমিশনের) রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না। উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এশিয়ার তিন দেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু ৩-১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সফর করবেন। তার সফরের লক্ষ্য হচ্ছে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার এবং আঞ্চলিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার উন্নতি করা। নয়াদিল্লিতে ডোনাল্ড লু যুক্তরাষ্ট্র-ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রয়োগে সহযোগিতা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এসব কথা বলা হয়েছে। ডোনাল্ড লু যুক্তরাষ্ট্র-ভারত পূর্ব এশিয়া আলোচনা সভায় নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডেনিয়েল ক্রিটেনব্রিঙ্কের সঙ্গে যোগ দিবেন। ভারতের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনাসভায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিপ্রক্ষিত ইস্যুগুলো স্থান পাবে। আগামী ৫ ডিসেম্বর ডোনাল্ড লু শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো যাবেন। শ্রীলঙ্কায় তিনি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দুর্নীতি দমন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে যুত্তরাষ্ট্র-শ্রীলঙ্কান যৌথ প্রচেষ্টাগুলোকে এগিয়ে নিতে শ্রীলঙ্কার সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই সময় ইউএসএআইডির উপ সহকারি প্রশাসক অঞ্জলি কাউর এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ সহকারি মন্ত্রী রবার্ট ক্যার্ফোথকে নিয়ে শ্রীলঙ্কার সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ডোনাল্ড লু কাঠমান্ডুতে নেপালের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় অগ্রগতি,নারীর ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবেন। নেপাল সফর শেষে ডোনাল্ড লু নিজ দেশে ফিরে যাবেন।
জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেয়ার আগেই ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি চান। এই সময়ের মধ্যে মুক্তি দেয়া না হলে হামাসকে গুরুতর পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২ ডিসেম্বর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার আগেই যদি গাজায় জিম্মিদের মুক্ত করে দেয়া না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ও মানবতার বিরুদ্ধে এমন নৃশংসতার জন্য দায়ীদের ‘গুরুতর সমস্যা হবে’।’গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইল ভূখণ্ডে হামলা করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে নিহত হন এক হাজার ২০৮ জন। এছাড়া, দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। তাদের মধ্যে কিছু মুক্তি পেলেও এখনো হামাসের কাছে ১০০ জনের মত জিম্মি আছেন।হামাসের হামলার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা শুরু করে ইসরাইলের বাহিনী। তাদের নির্বিচার হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।এ দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার আগেই ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি দেখতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প।সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান দলের রাজনীতিবিদ লিন্ডসে গ্রাহাম সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তি এবং সেখানে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প আগের চেয়ে বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ এমনকি তিনি চাইছেন, প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই যেন এ ব্যাপারে সুরাহা হয়।’
আদানির থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামাল বাংলাদেশ
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ বিপুল পরিমাণ বকেয়া অর্থ জমেছে বাংলাদেশের। এ কারণে গেল ৩১ অক্টোবর থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল আদানি গ্রুপ। ধারণা করা হচ্ছে, বকেয়া অর্থের বোঝা আরও না বাড়ানোর জন্যই বিদ্যুৎ ক্রয় অর্ধেকে নামিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সংবাদ রয়টার্সের।তবে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, আবহাওয়াগত কারণে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেই বিদ্যুৎ ক্রয় কমানো হয়েছে।বিআরডিবির চেয়ারপারসন মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আদানি গ্রুপ প্রথম যখন বিদ্যুতের সরবরাহ কমিয়ে দিল, আমাদের কাছে সেটি ছিল পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত। আমরা তাতে ক্ষুব্ধও হয়েছিলাম। তবে, এখন যেহেতু শীতের মৌসুম, আবহাওয়াগত কারণেই এ সময় বাংলাদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের চাহিদা খানিকটা হ্রাস পায়। তাই, আমরাও বিদ্যুৎ ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়েছি।’বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় বিষয়ক চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। ২৫ বছর মেয়াদি সেই চুক্তির শর্ত মেনে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি গ্রুপ। শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য এই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়।আদানি ছাড়াও ভারতের আরও কয়েকটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ কেনে বাংলাদেশ। সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ নয় দশমিক ৫৭ টাকা দরে কেনা হয়। অন্য দিকে, আদানি গ্রুপের কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হয়, তার প্রতি ইউনিটের মূল্য ১৪ দশমিক ৮৭ টাকা।আদানি গ্রুপের কাছ থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুৎ আবার বাংলাদেশে আট দশমিক ৯৫ টাকায় বিক্রি করে বাংলাদেশ। এভাবে প্রতি বছর বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশের সরকারকে ব্যয় করতে হয় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা।আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশের সরকারের কাছে এই প্রতিষ্ঠানটির মোট পাওনা ছিল ৯০ কোটি ডলার। গেল ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পাওনা অর্থের কিছু অংশ পেয়েছে আদানি গ্রুপ। তবে, বড় অংশটি এখনও বকেয়া রয়ে গেছে।তিনি বলেন, ‘আমরা বিআরডিবি এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা বলেছে, শিগগিরই বকেয়া অর্থ শোধ করা হবে।’অন্য দিকে, বিআরডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাওনা অর্থের মধ্যে ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ইতোমধ্যে শোধ করা হয়েছে। বাকি অর্থও শিগগিরই মিটিয়ে দেয়া হবে।’
সিরিয়িা নিয়ে নিরপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আজ
সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে বিদ্রোহীরা একের পর এক অঞ্চল দখলে নেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কূটনৈতিক সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এই খবর জানিয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, সিরীয় সরকারের অনুরোধে ও নিরাপত্তা পরিষদে আফ্রিকার তিনটি সদস্য দেশের সমর্থনে (মোজাম্বিক, সিয়েরা লিওন ও আলজেরিয়া) এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেফতার ৭
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে হামলায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া তিনজন পুলিশের উপ-পরিদর্শক। এছাড়া, একজন ডেপুটি এসপিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। পশ্চিম ত্রিপুরা পুলিশের এসপি কিরণ কুমার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকালের ঘটনায় পুলিশ তিন উপ-পরিদর্শককে বরখাস্ত করেছে এবং আগরতলার নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হামলা চালায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে 'দুঃখজনক' বলে উল্লেখ করেছে। এদিকে, পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই হামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হামলাকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। স্থানীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতেই হামলাকারীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং হাইকমিশনের ভেতরে সম্পত্তির ক্ষতি করে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, দেশের কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই ধরনের হামলা এবং জাতীয় পতাকার অবমাননা একটি অগ্রহণযোগ্য ঘটনা। এটি পূর্বে কলকাতায় ঘটে যাওয়া একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভের পুনরাবৃত্তি। আগরতলায় এই হামলাটি কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলি বর্বরতায় প্রাণ গেল আরও ৩৭ ফিলিস্তিনির
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে থামছেই না ইসরায়েলি বর্বরতা। দখলদার দেশটির হামলায় একদিনে আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। নতুন মৃতদের নিয়ে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা সাড়ে ৪৪ হাজার হাজার ছুঁইছুঁই করছে। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৪৬৬ জনে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৫ হাজার ৩৫৮ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের আঘাতে শ্রীলঙ্কা-ভারতে নিহত ২০
বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের আঘাতে শ্রীলঙ্কা ও ভারতে এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ১৭ জন শ্রীলঙ্কার এবং বাকি ৩ জন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর। শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঝড়ো আবহাওয়ার পাশাপাশি প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসে শ্রীলঙ্কার উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে ২০ জন নিহতের পাশপাশি বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। বর্তমানে তারা বিভিন্ন অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে অবস্থান করছেন। শ্রীলঙ্কার উপকূলে আঘাত হেনেছিল ফিনজাল। তার দু’দিন পর রোববার ভোরের দিকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু-পদুচেরির উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়টি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়র ফিনজাল যে সময় শ্রীলঙ্কা ও ভারতের উপকূলে আছড়ে পড়ে, সে সময় উপকূলে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টির সঙ্গে আসা বিপুল মেঘমালা প্রায় ২ হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ফলে শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গতকাল দুপুর থেকে আকাশ ছিল মেঘলা। উপকূল ছাড়িয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে রাজধানী ঢাকাতেও। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে যে ঘূর্ণিঝড় উদ্ভূত হয়, সেগুলোকে বলা হয় সাইক্লোন। শক্তিমত্তার দিক থেকে সাইক্লোন উত্তর আটলান্টিকের ঘূর্ণিঝড় হারিককেন কিংবা প্রশান্ত মহাসগারের ঘূর্ণিঝড় টাইফুনের সমপর্যায়ের। সূত্র : এএফপি
দ্বিতীয় মেয়াদে কেমন হবে ট্রাম্প-ইরান সম্পর্ক?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৭-২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কে তুমুল উত্তেজনা দেখেছে পৃথিবী। ট্রাম্পের আমলেই ইরানের এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে খুন করা হয়। শুধু তাই নয়, পাঁচ বিশ্বশক্তি ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের ওপর আরোপ করেন নিষেধাজ্ঞার খড়গ। ফের সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায়। দ্বিতীয় মেয়াদে তাহলে কেমন হতে যাচ্ছে ট্রাম্প-ইরান সম্পর্ক? ফের কি নিষেধাজ্ঞার খেলায় মেতে উঠবেন ট্রাম্প? ইরানের সম্ভাব্য কৌশল কী হতে পারে?ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বনাম আগ্রাসী ইরান: পূর্বের মেয়াদে কেমন ছিল ট্রাম্পের ইরান নীতি? তা বিশ্লেষণ করলেই ইরানের আগ্রাসী হওয়ার কারণ বেরিয়ে আসবে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইরানের বৈদেশিক নীতি বিষয়ে ওবামা প্রশাসনের বহুপাক্ষিক কূটনীতি থেকে সরে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার চূড়ান্ত পরিণতি পাঁচ বিশ্বশক্তি ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনা।২০১৮ সালের মে মাসে ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন’ নামের সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। মূলত ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে ওই চুক্তি করা হয়। কিন্তু, ট্রাম্প চুক্তিটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ চুক্তি আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আঞ্চলিক তৎপরতা বন্ধে পর্যাপ্ত চাপ দেয়া হয়নি।এমন দোহাই দিয়েই চুক্তি থেকে সরে এসে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপের অংশ হিসেবে পুনরায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ কৌশলের লক্ষ্য ইরানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়া, তেল রফতানি কমানো ও কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা। মূলত এ নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করলেও ফের পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে ইরান। সেইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের ছায়াযোদ্ধাদের শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে প্রতিশোধমূলক উদ্যোগ নিতে শুরু করে ইরান। সোলাইমানি হত্যা ও ট্রাম্পের সমালোচিত কৌশল: সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বেশ কিছু সমালোচিত কর্মকাণ্ড রয়েছে; যা নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ কার্যকলাপ সম্পর্কেও ইঙ্গিত দেয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরানের এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা।কাসেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সাহসের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বার্তা দেয়। ওই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্ররোচনার পাশাপাশি সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা দেখা দেয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীত কর্মকাণ্ড জানান দেয়, ফের ইরানের সঙ্গে নতুন করে বড় আকারে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র।বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘শুধু তাই, নয় এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ভঙ্গি সম্ভবত আরও আক্রমণাত্মক হতে পারে। পারস্য উপসাগরে নৌসেনা মোতায়েন, অবাধ নৌচলাচল এবং সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মত আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে যৌথ মহড়া অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন ট্রাম্প। আর এটা স্পষ্ট যে, ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়ার মত জায়গায় ছায়াযোদ্ধাদের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধে মেতে উঠবে যুক্তরাষ্ট্রও।নিষেধাজ্ঞার খেলা: ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কৌশলগত একটি হাতিয়ার ছিল। ইরানে যা মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে। এই যেমন তেল রফতানি কমে যাওয়া, রিয়ালের মূল্য নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়া। সর্বোপরি অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফের তিনি ইরানের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব, লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রতি সমর্থন থেকে শুরু করে ইয়েমেনে হুতিদের সমর্থন, সব সময়ই বিতর্কের মূল বিষয়। পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে এই গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়নে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে ইরান। যা এ অঞ্চলে কৌশলগত সমীকরণ পাল্টে দিতে পারে।ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ছায়াযোদ্ধা: ট্রাম্পের ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা শুধু পারমাণবিক কার্যকলাপের জন্য নয় বরং ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আঞ্চলিক কার্যকলাপের মোকাবিলায় আলোকপাত করা হয়েছে। এ দিকগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের সময় দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার আঞ্চলিক মিত্র উভয়ের জন্যই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে চাপের মুখে ইরান তার প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন খাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে পারে। আর এটি নিঃসন্দেহে একটি অস্ত্র প্রতিযোগিতার মত পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে, যেখানে ইরান প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখার বিকল্প পদ্ধতি খুঁজছে।ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক এ ক্ষেত্রে অন্যতম বিকল্প। প্রক্সি নেটওয়ার্ক বলতে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। ট্রাম্পের আগের প্রশাসন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস এবং এর সহযোগীদের কাবু করতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়। নতুন করে ট্রাম্প ফের একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে।ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া: ঐতিহাসিকভাবেই ইরানের সামরিক তত্ত্ব হল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, দ্রুত-আক্রমণ নৈপুণ্য, ড্রোন ও ছায়াযোদ্ধাদের আরও শক্তিশালী করা। ট্রাম্পের বিজয়ের পর, ইরান তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করতে পারে। বাভার-৩৭৩’-এর মত আরও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়াতে পারে দেশটির সরকার। সেইসঙ্গে ড্রোনের বহর আরো সম্প্রসারণে মনোযোগ দেবে ইরান।রাজনৈতিকভাবে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের চাপ মোকাবিলায় চীন ও রাশিয়ার মত বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে পারে। এ অংশীদার দেশগুলো আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ সামরিক মহড়ার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও সহযোগীদেরও চ্যালেঞ্জ করতে পারে।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিল: বাংলাদেশের কাছে ১৩৫ কোটি রুপি চাইল ত্রিপুরা
বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিল বাবদ পাওনা ১৩৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯০ কোটি ৯২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা) জরুরি ভিত্তিতে চেয়েছে ত্রিপুরার রাজ্য সরকার। বকেয়া অর্থ চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে ইতোমধ্যে চিঠিও দিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের বিদুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন (টিএসইসিএল)। সংবাদ টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজারের। এ নিয়ে টিএসইসিএলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশের কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ টিএসইসিএলের পাওনা ১৩৫ কোটি রুপি। পাওনা অর্থ চেয়ে আমরা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) চিঠি দিয়েছি। এর আগে বিপিডিবির চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগতভাবে আমি বকেয়া অর্থ পরিশোধের জন্য বলেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রীর সঙ্গেও আমাদের রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রীর কথা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’ ‘টিএসইসিএল এখন আর্থিকভাবে কঠিন সময় পার করছে। এক দিকে প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বাড়ছে, অন্য দিকে তহবিলে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ নেই। বকেয়া সেই অর্থ এখন আমাদের খুব প্রয়োজন।’ বলে রাখা ভাল, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ইস্যুতে ভারতের জাতীয় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগম লিমিটেডের মাধ্যমে হয়েছিল এ চুক্তি। চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশে সরবরাহকৃত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ছয় দশমিক ৬৫ রুপি করে পাবে ত্রিপুরার রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। হাইকোর্ট সম্প্রতি সেই চুক্তির ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদানির পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ চুক্তিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা অবশ্য বলেছেন যে, এখনই কোন চুক্তি বাতিলের পথে হাঁটছেন না তারা।’ এর আগে গেল শনিবার (৩০ নভেম্বর) ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজধানী আগরতলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছে তার রাজ্য।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছে ত্রিপুরা।’
খরা ও ভূমি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে জরুরি বৈশ্বিক পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
খরা ও ভূমি ক্ষয়ের মত সমস্যাগুলো মোকাবিলায় দ্রুত সম্মিলিত পদক্ষেপ ও যৌথ বিনিয়োগ প্রয়োজন উল্লেখ করে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি তুলে ধরে তিনি বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও অভিযোজন কর্মসূচি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান জাতিসংঘের মরুকরণ প্রতিরোধ কনভেনশনের (ইউএনসিসিডি) ষোড়শ সম্মেলনের ‘মিনিস্টেরিয়াল ডায়ালগ অন ড্রট রেজিলিয়েন্স: ফ্রম জেনেভা টু রিয়াদ অ্যান্ড বিয়ন্ড, এনহাঞ্চিং গ্লোবাল অ্যান্ড ন্যাশনাল পলিসি ইনস্ট্রুমেন্টস ফর আ প্রোঅ্যাকটিভ ড্রাউট ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক স্পেশাল সেগমেন্টে বক্তব্য বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। নিম্ন অববাহিকার দেশ হিসেবে রিজওয়ানা হাসান সমতার নীতি, ক্ষতি না করা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে অভিন্ন নদী অববাহিকা ও আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। জাতিসংঘের পূর্বাভাসে ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পানি সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ৪০ শতাংশ ঘাটতির কথা উল্লেখ করে তিনি পানির অধিকারকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। উন্নয়ন কার্যক্রমে সাবধানতামূলক নীতির ওপর জোর দিয়ে তিনি পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন (ইএসআইএ), জনসম্পৃক্ততা এবং স্থানীয় জ্ঞানকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানান। তিনি পানিনির্ভর শিল্প ও কৃষি চর্চার জন্য টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রণিধানযোগ্য নিয়ম প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন। রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কৃষক, বননিবাসী, নারী ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।’ তিনি প্রযুক্তি, আর্থিক সহায়তা ও ন্যায়বিচারের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে এই সম্প্রদায়গুলোকে ক্ষমতায়নের আহ্বান জানান। রিজওয়ানা হাসান ইউএনসিসিডিকে প্রযুক্তি স্থানান্তর সহজতর করতে ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা দিতে ভূমিকা বাড়ানোর আহ্বান জানান। বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গি জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি কপ১৬’-এর মত ফোরামের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অধিবেশনে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাইডেনের পুত্রকে ক্ষমার ঘটনা বিচারব্যবস্থার গর্ভপাত, বললেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পুত্র হান্টার বাইডেনকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার করে রোববার (১ ডিসেম্বর) বাইডেন তার পুত্র হান্টারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা করেন। আগ্নেয়াস্ত্র ও কর ফাঁকির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন হান্টার। বাইডেনের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার জো হান্টারকে ক্ষমা করেছেন। হান্টারকে করা ক্ষমার মধ্যে কি জে-সিক্স (২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনা) বন্দীরাও অন্তর্ভুক্ত, যাদের বছরের পর বছর ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে? এটি বিচারব্যস্থার অপব্যবহার ও গর্ভপাতের শামিল!’ দুইটি ফৌজদারি অপরাধে হান্টার বাইডেনের কারাদণ্ড হয়েছে। হান্টার বাইডেন এ বছরের শুরুতে মাদক সেবন ও অস্ত্রের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এ ছাড়া, কর ফাঁকির মামলায়ও তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। চাইলে যে কোন অপরাধীকেই ক্ষমা করে দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট। যদিও আগে বাইডেন বলেছিলেন, বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে নিজের ছেলেকে তিনি ক্ষমা করবেন না। তবে, রোববার (১ ডিসেম্বর) ছেলে হান্টার বাইডেনকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা ঘোষণা করেন জো বাইডেন। বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘আমি আজ আমার ছেলে হান্টারের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমার অনুমোদন পত্রে সই করলাম। এটি সম্পূর্ণ নিঃশর্ত ক্ষমা।’ জো বাইডেন আরও বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলাম, বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করব না ও আমি আমার কথা রেখেছি। যদিও আমার ছেলেকে আলাদভাবে ও অন্যায়ভাবে বিচারের সম্মুখীন হতে দেখলাম।’
এবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, দুঃখ প্রকাশ ভারতের
এবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা করেছে কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা। সোমবারের (২ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের হাইকমিশন, ডেপুটি হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ভারতের জাতীয় পতাকা অবমাননার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কেন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি- এই অভিযোগ তুলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা সোমবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলায় বাংলাদেশ সরকারী হাইকমিশনে ঢুকে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে হয়নি। এ ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় দুঃখ প্রকাশ করেছে।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কোন পরিস্থিতিতেই কোন কূটনৈতিক কেন্দ্রে হামলা গ্রহণযোগ্য নয়।’ ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘সরকার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং দেশের অন্যান্য স্থানে থাকা ডেপুটি ও সহকারী হাইকমিশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।’ এর আগে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছিল।
ট্রাম্প ‘বেয়াই’কে দিলেন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টার পদ
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেবানীজ-আমেরিকান ব্যবসায়ী বালোস মাসাদকে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। বালোস মাসাদ সম্পর্কে ট্রাম্পের বেয়াই হন। সংবাদ নিউইয়র্ক টাইমসের। রোববার (১ ডিসেম্বর) নিজের ভ্যারি ফাইড সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে পোস্টে ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছেন। বালোস মাসাদের পুত্র মাইকেল ট্রাম্পের মেয়ে স্টিফানির স্বামী। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমি মাসাদ বালোসকে প্রেসিডেন্টের আরব ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টার দায়িত্ব দিতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’ মাত্র এক দিন আগেই ট্রাম্প তার আরেক মেয়ের শ্বশুর চার্লস কুশনারকে ফ্রান্সে পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছেন। চার্লস কুশনার ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কার শ্বশুর। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরে সক্রিয় ছিলেন মাসাদ বোলাস। বিশেষ করে আরব মার্কিন মুসলিম ভোটারদের মন জয়ে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। মাসাদের বাবা ও দাদা উভয়ই লেবাননের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার শ্বশুর লেবাননের রাজনৈতিক দল ফ্রি প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্টের অর্থের যোগনদাতা। এটি হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি খ্রিষ্টান দল।
সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলায় ২৫ জনের মৃত্যু
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বিদ্রোহীরা। এ দিকে, বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। সংবাদ এএফপির। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো ও ইদলিবে বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে সিরিয়া ও রাশিয়ার যৌথ বাহিনী বিমান হামলা চালাচ্ছে। হামলায় এই পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু। বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত হোয়াইট হেলমেট সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভোরে জানিয়েছে, রোববারের (১ ডিসেম্বর) হামলায় নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও রয়েছেন। ইদলিবের গ্রামীণ এলাকা ছাড়াও যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের দখলে আছে, সেখানেও যুদ্ধবিমান হামলা করেছে। বিদ্রোহীরা সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর বিদ্রোহী গোষ্টি তাহরির আল-শাম বা এইচটিএস আরো সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আসাদ বাহিনী শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে গৃহ যুদ্ধের নতুন মোড় নিয়েছে। ২০১৬ সালে আসাদ বাহিনী বিদ্রোহীদের কাছ থেকে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। এ দিকে, দামেস্কে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। আসাদ বাহিনী শত্রুদের পরাজিত করে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘বিদ্রোহীরা আগের চেয়ে শক্তিশালী রুপ ধারন করেছে। ভবিষ্যতে বিদ্রোহীরা আসাদ বাহিনীর হাত থেকে আরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে তারা বদ্ধ পরিকর।’
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠাতে মোদির হস্তক্ষেপ চাইলেন মমতা
দরকারে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষাবাহিনীর সদস্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরপর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সাথে সহনীতি অনুসরণ করার কথাও ঘোষণা করেন।এছাড়া, ভারতীয় সংসদে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দাবি জানান মমতা।সোমবার (২ ডিসেম্বর) অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধী বিজেপির বিধায়করা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের দাবি জানান। বাংলাদেশ ইস্যুতে মমতার অবস্থান কী সেটা তুলে ধরার দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই তার নিয়মিত প্রশ্নোত্তরপর্বে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আনেন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্য, সম্পত্তি ও প্রিয়জনেরা বাংলাদেশে আছে। এই বিষয়ে ভারত সরকারের যে অবস্থানই হোক না কেন, আমরা তা মেনে নেব। তবে, পৃথিবীর যে কোন স্থানে ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতনের আমরা নিন্দা জানাই এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাই।’বিধানসভায় মমতা প্রস্তাব করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী না পারলে বিদেশমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদকে জানান।’ তিনি আরো বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে চললে, আমাদের লোককে (ভারতীয়দের) ফিরিয়ে আনতে চাই। এক বেলা খাব, দরকারে একটা রুটি ভাগ করে খাব। আমাদের লোক অত্যাচারিত হোক চাই না।’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভারত সরকার এই বিষয়টি জাতিসংঘের কাছে তুলে ধরতে পারে...যাতে একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানো যায়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার পুরোপুরি নীরব।’বাংলাদেশ বিষয়ে ইসকনের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়ে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কলকাতার ইসকন ইউনিটের প্রধানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন এবং সহানুভূতি ও সমর্থন জানিয়েছেন।’অন্য কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চান না জানিয়ে মমতা বলেন, ‘যখন বাংলাদেশি জেলেরা ভুলবশত ভারতীয় জলসীমায় ঢুকেছে বা কোন বাংলাদেশি ট্রলার ডুবে গেছে, তখন তার সরকার তাদের উদ্ধার করেছে ও ভালভাবে দেখভাল করেছে।’এ দিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধের দাবিতে ভারত-বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত পেট্টাপোলে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের পর পেট্টাপোল এলাকায় বিজেপির সমর্থকরা একত্রিত হতে থাকেন। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। দুপুরের পর সেখানে বক্তব্য দেবেন বিজেপির নেতা ও রাজ্যটির বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী।এই ঘটনায় সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ বাড়তি সর্তকর্তা জারি করেছে। সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছে কোন বিক্ষোভকারীদের ঘেষতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ছাড়াও রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকেও সীমান্ত জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কাবস্থা।
প্রেসিডেন্টের মেয়াদের শেষ সপ্তাহে এসে পুত্র হান্টারকে বাইডেনের ক্ষমা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার (১ ডিসেম্বর) তার মেয়াদের শেষ সপ্তাহে এসে দুইটি ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পুত্র হান্টারের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। পুত্রের কোন আইনগত ঝামেলায় তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না, ইতোপূর্বে বার বার এমন আশ্বাস দেওয়ার পরও তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সংবাদ এএফপির। জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেন, ‘হান্টারের মামলার তথ্য যাচাই করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, শুধু আমার ছেলে হওয়ার কারণে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। আর এটা ভুল।’ বাইডেনের এমন সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে। এমন সময়ে এই ঘটনা ঘটল, যখন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধান ও বিচার বিভাগে অনুগতদের নিজেই নিয়োগ দিচ্ছেন। পুত্র হান্টার বাইডেন এ বছরের শুরুতে মাদক সেবন ও অস্ত্রের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত হন। এ ছাড়া, কর ফাঁকির ঘটনাতেও তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তবে, তার কারাদণ্ড হয়নি। জো বাইডেন বার বারই বলে এসেছেন, ‘তিনি ছেলেকে ক্ষমা করবেন না।’ রোববার (১ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করব না বলে জানিয়েছিলাম, ছেলেকে উদ্দেশ্যমূলক ও অন্যায়ভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে দেখেও আমি আমার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসিনি।’ কংগ্রেসে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের উসকানিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেন বাইডেন। নির্বাচনে বাইডেনের বিরোধিতা করতেই বিরোধী দলগুলো এমন উসকানি দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এমন ক্ষমা প্রদর্শনের উদাহরণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন কোকেন সংক্রান্ত মামলায় তার সৎভাইকে ক্ষমা করেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পও তার আগের মেয়াদে কর ফাঁকির মামলায় পুত্রের শ্বশুরকে ক্ষমা করেন। তারা সবাই কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। গেল সেপ্টেম্বর মাসে কর ফাঁকির মামলায় হান্টার বাইডেনের ১৭ বছরের কারাদণ্ডে এবং এ ছাড়া বন্দুক সংক্রান্ত পৃথক মামলায় তিনি ২৫ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছে।তার আইনজীবীরা বলেছেন, ‘শুধু প্রেসিডেন্টের ছেলে বলেই তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে।’ হান্টার আগের করগুলো ও সেইসাথে কর্তৃপক্ষের দ্বারা আরোপিত জরিমানা শোধ করেছেন এবং জেলের বাইরে থাকতে ইতোপূর্বে একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে চুক্তিতে পৌঁছেছেন - কিন্তু সেই চুক্তিটি শেষ মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়ে। তার মামলাটি দীর্ঘ দিন ধরে বাইডেন পরিবারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, এই নির্বাচনের বছরে যখন রিপাবলিকানরা অভিযোগ করছে যে, হান্টারের সাথে একটু বেশি নম্র আচরণ করা হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা, আরও ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা থামছেই না। দখলদার দেশটির হামলায় গত রোববার আরও ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় হামলায় কমপক্ষে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় এখনো অনেকে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধার স্থানীয় লোকজন আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার একজন শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ ছিটমহলটিতে ‘আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র’ ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন, যা ‘সমস্ত দেহ’কে ‘বাষ্পে পরিণত’ করে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) বলেছে যে ইসরায়েল ও গাজার মধ্যেকারেম আবু সালেম ক্রসিং দিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর একের পর এক হামলার পর জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষুধা ও দুর্ভোগ চরম বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৪২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে আর্তনাদ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশি রোগীদের নির্ধারিত অস্ত্রোপচার ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল ও স্থগিত হতে শুরু করেছে। চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশি রোগীরা কলকাতার হাসপাতালে তাদের অস্ত্রোপচার বাতিল অথবা ভিন্ন গন্তব্যে চিকিৎসা নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তবে, বহু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার কিংবা চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়ার বিষয়ে কলকাতার হাসপাতালগুলোর কাছ থেকে অনুমতি না মেলায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সংবাদ টাইমস অব ইন্ডিয়ার। কলকাতার বিখ্যাত পিয়ারলেস হাসপাতাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) থেকে অন্তত পাঁচজনের অস্ত্রোপচার বাতিল করেছে। বাংলাদেশি এই রোগীরা সেখানে ভর্তির জন্য রিপোর্ট না করায় কর্তৃপক্ষ অস্ত্রোপচার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পিয়ারলেস হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘আমরা তাদের কারও কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি না। আমরা ধারণা করছি, তারা চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসতে পারবেন না। তারা এখন ভ্রমণ করতে পারবেন না। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত আরও ১৫ বাংলাদেশি রোগীর অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারিত রয়েছে। আমাদের সন্দেহ, এই রোগীদের কেউই ভর্তি হবেন না। আমাদের হাসপাতালে অনলাইনে পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ও বাংলাদেশি রোগীরা অনলাইনের এই সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এখন পর্যন্ত, কেউ এটি করেননি।’ কলকাতার ডিসান হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের অনেকেই চিকিৎসা নেওয়ার জন্য যান। এই হাসপাতালে গেল মাসে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা নেওয়ার হার প্রায় ৭৫ শতাংশ কমেছে। তবে, এই সময়ে অন্তত ৫০ জন রোগী হাসপাতালটিতে অনলাইনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাসপাতালের পরিকল্পনা ও ভিসা আমন্ত্রণ পত্র (ভিআইএল) দ্রুত ইস্যু করা সত্ত্বেও বহু রোগীর নির্ধারিত ওপিডি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও ভর্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসান হাসপাতালের পরিচালক শাওলী দত্ত বলেন, ‘যে রোগীরা ভ্রমণ করতে পারছেন না, আমরা বাংলাদেশে তাদের চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নেওয়ার ও শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসককে জানানোর পরামর্শ দিচ্ছি। পাশাপাশি, আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথে অনলাইনে পরামর্শ নেওয়ার প্রস্তাব করছি। এই ভার্চুয়াল পরামর্শ পরিষেবা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে ও সময়মত পরামর্শ পেতে সাহায্য করছে।’ কলকাতার বিপি পোদ্দার হাসপাতালে ডিসেম্বরের শেষ দশ দিনের নির্ধারিত প্রায় ৫০টি অস্ত্রোপচার স্থগিত করা হয়েছে। ক্রিসমাসের সময় বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ওই সময় বাংলাদেশি রোগীদের অনেকেই যেমন- হাঁটু প্রতিস্থাপন ও মেরুদণ্ডের মাইক্রোস্কোপিক অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা করেন। বিপি পোদ্দার গ্রুপের উপদেষ্টা সুপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, ‘এই বছরও আমাদের ২০-৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৫০টি ‘কোল্ড সার্জারি’ সূচি নির্ধারিত ছিল। তবে, মনে হচ্ছে সবই পরবর্তী তারিখের জন্য স্থগিত করতে হবে।’ গেল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) হাসপাতালের ওপিডিতে বাংলাদেশি কোনও রোগীই ছিলেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সোমবারেও আমাদের কোন ওপিডি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেই। বর্তমানে কলকাতায় থাকা তিনজন বাংলাদেশি রোগী মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসককে দেখাতে পারেন।’ হাসপাতালের গাইনোকোলজি এবং ইউরোলজি কিছু রোগীকে অনলাইনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কলকাতার মনিপাল হাসপাতালের (পূর্ব) আঞ্চলিক সিওও আয়নাভ দেবগুপ্ত বলেন, ‘মণিপালের সব হাসপাতালের ওপিডিতে বাংলাদেশি রোগীদের উপস্থিতি ও ভর্তি মারাত্মক পরিমাণে কমে গেছে। এর ফলে, হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বাতিল হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে আমাদের পুরোনো রোগীদের চিকিৎসাসেবার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করছি। তাদের মধ্যে কয়েকজন, যারা জরুরি চিকিৎসার কারণে মেডিকেল ভিসা পেয়েছিলেন, তারা এখানেও চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত নির্ধারিত কোনও অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দেওয়া হয়নি। তবে, অনলাইন পরামর্শ বাড়ছে।’ কলকাতার কয়েকটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘গেল আগস্টে বাংলাদেশি রোগীদের স্বাভাবিক প্রবাহ কমে যায় ও পূজার পর তা বাড়তে শুরু করে।’ কিন্তু, এখনকার মত পরিস্থিতি আগে কখনও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন চক্রবর্তী।