ভারতের চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কীসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:২২ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘চট্টগ্রামে গতকাল একজন আইনজীবীকে খুন করা হয়েছে। আমরা একটি সংগঠনের অভ্যুদয় দেখছি, খুব অল্প কিছু দিন ধরে। এই সংগঠনটি কীভাবে তৈরি করা হল, কে কে এর নেতৃত্বে আছে? গতকাল কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই সংগঠনের নেতাদেরকে, এরা সবাই যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সেজে এই সংগঠনটির মধ্যে ঢুকে সারা দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের একজন নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, এই কারণে ভারত থেকে তার মুক্তির দাবি করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে মুক্তি দাবি করা হয়েছে। এগুলো কীসের আলামত?’
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে মিরপুরে শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
পরে রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘আমাদের প্রায় দুই হাজারের মত সাধারণ মানুষকে বাচ্চা ছেলেদেরকে গুলি করা হয়েছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে। কই তখন তো ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর তো একটা স্টেটমেন্ট দেয়নি? শেখ হাসিনার এই ভয়ঙ্কর নিপীড়নের জন্য এই রক্তক্ষরণের জন্য একটা স্টেটমেন্ট তো দেননি? একটা বিবৃত তো দেননি? আজকে যখন সরকার ও সব মানুষ বুঝতে পারছে, কোন একটা ষড়যন্ত্র চক্রান্তের খেলা চলছে, কোন কিছু একটা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এটাতো একটি সূর্যের আলোর মত একেবারে পরিষ্কার এই সংকটটা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হচ্ছে। হঠাৎ বিভাগীয় শহরগুলোতে নেমে পড়ছেন দাবি জানাচ্ছেন, কই শেখ হাসিনার সময় তো দাবি জানাননি?’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ষড়যন্ত্র এখনও থামছে না, ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ঠিকই, কিন্তু তার যে টাকার যে উৎস, এটা এখনও তৃণমূলে অনেকের কাছে নানাভাবে রয়েছে। ওই টাকাগুলোই খরচ করে তারা এলাকার পর এলাকা অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।’
রহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান পাশাপাশি শান্তিতে সবস্থানে দীর্ঘ দিন বাস করছি। আজকে কেন পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে, এখানে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরাট অংশ এর মধ্যে নেই, তারাও বুঝতে পারছে কোন ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে। কিন্তু তারা নেমে একজন আইনজীবীকে পর্যন্ত হত্যা করার মতে দৃষ্টতা দেখাচ্ছে। এর জন্য ভারতের পরাষ্ট্র দপ্তর কোন বিবৃতি দিলেন না, বিবৃতি দিলেন যে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার কারণে চিন্ময় নামে একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার জন্য। সেতো বাংলাদেশের নাগরিক, তার প্রতি যদি সরকার অন্যায় করে তাহলে বাংলাদেশের সরকার তাদের লোকজন তারা সেখানে দাবি তুলতে পারেন, তাদের দাবি এখান থেকে হবে কেন? বাইরের একটি দেশ থেকে এই ধরনের প্রতিবাদ আসছে। এগুলো তো সব রহস্যজনক বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে তারা মনে হয় বিশ্বাস করতে চায় না। তারা মনে করে, দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে, বাংলাদেশ সেভাবে চলবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা ১৮ কোটি মানুষের দেশ, এই দেশ এভাবে চলতে পারে না। পার্শ্ববর্তী দেশের পলিসি মেকাররা এটা যেন ভুলে না যায়।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ভারতের বহু ছাত্র সংগঠন সমর্থন দিয়েছে, সহানুভূতি দেখিয়েছে। কিন্তু ভারতের যে শাসকগোষ্ঠী, আমার কাছে মনে হচ্ছে- পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ভারত শাসন করছে। এই কারণেই তারা একচোখা নীতি অবলম্বন করে বাংলাদেশকে দেখছে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আশরাফউদ্দিন বকুল, সংগঠনের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, যুবদলনেতা মেহবুব মাসুম শান্ত।