৯০ শতাংশ মানুষ সড়ক আইন মেনে চলেন না
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৩৫ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
সড়কে চলাচলকারী ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ আইন মেনে চলেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান। এদের মধ্যে সমাজের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সব ধরনের মানুষই রয়েছেন।
রাজধানীর তেজগাঁও বিজি প্রেস খেলার মাঠে সোমবার পুলিশ, ছাত্র-জনতা ও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার নাগরিকদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার নজমুল বলেন, পুলিশ সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরূত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশ ছাড়া একটি সভ্য সমাজ কল্পনা করা যায় না। পুলিশ সমাজের সাধারণ মানুষেরই অংশ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ৫ আগস্টের পর থানা ও ট্রাফিক পুলিশ কেউই স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনি। যখন পুলিশ তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে পারেনি তখন জনগণ কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছিলো। সারাদেশে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে গিয়েছিলো। তখন মানুষ পুলিশের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছিলো। পুলিশ সদস্যরা এ সমাজেরই সন্তান। তাই আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়াটা যেমন পুলিশের কাজ তেমনি তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করাও আপনাদের কর্তব্য।
সড়কে আইন না মেলে চলার বিষয়ে দৃষ্টিপাত করে তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এ পরিবহনের জরিমানার টাকা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ছিলো জরিমানা বেশি হলে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে, মানুষ আইন মেনে চলবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তার বিপরীত। আমাদের দেশের ৮০-৯০% লোক যারা সড়কে চলাফেরা করেন তারা হয়তো আইন জানেন না অথবা জানলেও মানেন না। আমরা যারা শিক্ষিত তারাও আইন মানি না। সুতরাং আইন মানার জন্যই আমরা বিভিন্ন পরিবহনের ওপর জরিমানা আরোপ করে থাকি। রাস্তার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ বেপোরোয়া ও বিশৃঙ্খল যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা হলো ব্যবসাবান্ধব অঞ্চল। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস এখানে। আইনশৃঙ্খলা যদি ভালো না থাকে তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য কখনো ভালো হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আইনশৃঙ্খলা একে অপরের পরিপূরক। কাভার্ডভ্যান চুরি ছিলো এই এলাকার একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কাভার্ডভ্যান মালিক প্রতিনিধিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুটি মামলায় চুরি হওয়া কাভার্ডভ্যান ও মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এভাবে যদি আপনারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে আপনাদেরকে পুলিশী সেবা দেওয়া আরও সহজ হবে।
মতবিনিময় সভায় ছাত্র প্রতিনিধি হোসেন বলেন, এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করতে পুলিশ ও ছাত্র-জনতা সমন্বয়ে কমিঠি গঠন করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সমাজ থেকে মাদক দূর করব।
এসময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার নাগরিকবৃন্দ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এবং ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।