অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা নাহিদ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৫২ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে জনগণের মধ্যে এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সে দল যদি সফল হয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যাবে।’
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। এ সময় চিলির সাবেক সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী জর্জিও জ্যাকসন সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
এ সময় উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো চাইছে, দেশের সংস্কার তাদের (রাজনৈতিক সরকার) অধীনেই হোক। তাই, তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।’
সাক্ষাৎকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দায়িত্ব নিয়েছে। এটি একটি অভিনব ঘটনা, যা এর আগে কখনো ঘটেনি। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। আমরা এ রকম পরিস্থিতিতে কাজ করার চেষ্টা করছি।’
স্কটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য লর্ড জেরিমাই পুরভিস অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া, বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ স্থাপন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।’
ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মাট চার্টার অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কাছে কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা চায়, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং গণহত্যার বিচার বিষয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
আন্তর্জাতিকভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই ঠিক মত ব্যাখ্যা করতে পারছেন না। কীভাবে এত অল্প সময় এত বড় এক স্বৈরশাসকের পতন হল, তা মানুষও বুঝতে পারছে না। ফলে, দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ আন্দোলনটা যে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান, তা অনেকেই অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন ধরে মানবাধিকার সংকট চলছে। মানুষ ভোট দিতে পারত না। কয়েক হাজার মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ছিল। তাই, মানবাধিকার রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।’
বৈঠকে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।