৫৭ হাজার কোটা খালি রেখে শেষ হল হজ নিবন্ধন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:৪৭ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী ২০২৫ সালের হজ নিবন্ধনের সময় শেষ হল আজ। গেল বছরের চেয়ে এবার হজের ব্যয় এক লাখ টাকার বেশি কমিয়েও নির্ধারিত কোটা পূরণ করতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। প্রায় ৫৭ হাজার কোটা খালি রেখে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) শেষ হয়েছে চলতি বছরের হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন। তাছাড়া, সৌদি আরবের সরকারের আল্টিমেটামের কারণে হজে নিবন্ধনের সময় আর বাড়ায়নি মন্ত্রণালয়।
হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে রোববার রাত আটটা পর্যন্ত ৬২ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন। আর হজের যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ভাউচার জমা দিয়েছেন প্রায় আট হাজার হজযাত্রী। সবমিলিয়ে ৭০ হাজার হজযাত্রী আগামী বছর হজ করার জন্য নিবন্ধন করেছেন। অন্য দিকে, সৌদির সরকার বাংলাদেশিদের আগামী বছরের হজের জন্য কোটা দিয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি। সে হিসাবে এখনো খালি রয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার হজ কোটা।
হজ পোর্টালের তথ্যমতে, মোট ৬২ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত করেছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে চার হাজার ৭৫৯ ও বেসরকারিভাবে ৫৭ হাজার ৪৫৩ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে প্রায় আট হাজার হজযাত্রী। সাধারণ ব্যাংকে টাকা জমা দিলে এক কর্ম দিবস প্রয়োজন হয় জমা হতে। সে হিসাবে আজ যারা টাকা জমা দিয়েছেন, তাদের টাকা আগামী মঙ্গলবার জমা হবে। কারণ, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের জন্য সরকারি ছুটি।
সময় বাড়োনো হবে কি না- জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ অনুবিভাগ) মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘চলতি বছর তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। সৌদি সরকারের আল্টিমেটামের কারণে আর সময় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে হজযাত্রীদের টাকা সৌদি সরকারকে না পাঠালে বাংলাদেশিদের জন্য নির্ধারিত পাঁচ নম্বর তাঁবু পাওয়া যাবে না। অন্যান্য দেশ তাঁবু বুকিং দেওয়া শুরু করেছে। এ জন্য যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের টাকা সৌদি সরকারকে পাঠানো জরুরি হয়ে গেছে।’
খরচ কমানোর পরও হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় উদ্বিগ্ন ধর্ম মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে হজ কোটা পূরণ করতে বিমান ভাড়া কমাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন আরও ২৭ হাজার ৮২০ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা বিমান ভাড়া নির্ধারণ করতে আধা-সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফকে।
ডিওতে খালিদ হোসেন বলেন, ‘বিমান ভাড়া কমানো হলে বাংলাদেশের হজ কোটা পূরণ সহজ হবে। সৌদি সরকারের কাছে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পাবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।’
গেল ৩০ অক্টোবর আগামী ২০২৫ সালে হজে যেতে সরকারিভাবে দুইটি প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। ঘোষিত সাশ্রয়ী প্যাকেজ অনুযায়ী, খরচ ধরা হয়েছে চার লাখ ৭৯ হাজার ২৪২ টাকা। অন্য প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এসব প্যাকেজে ২০২৪ সালের চেয়ে বিমান ভাড়া অন্তত ২৭ হাজার টাকা কমানো হয়েছে। তবে, সরকারি প্যাকেজে খাবারের টাকা ৪০ হাজার ও কোরবানির জন্য ৭৫০ সৌদি রিয়াল আলাদাভাবে নিতে বলা হয়েছে হজযাত্রীদের। গত বছর খাবারের টাকা প্যাকেজে যুক্ত ছিল। সরকারি প্যাকেজের সঙ্গে সমন্বয় করে বেসরকারি এজেন্সি মালিকরাও একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তারা বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।