সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবি জানালেন মামুনুল হক
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:২০ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
সাদপন্থিদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক। তিনি সাদপন্থিদের একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মামুনুল হক। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হয়।
তিনি বলেন, ‘এটি কোন সংঘর্ষ ছিল না, এটি একপক্ষীয় হামলা। ঘুমন্ত মানুষের ওপর সাদপন্থিরা হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেফতার করতে হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’
মামুনুল হক অভিযোগ করেন, সাদপন্থিরা জোরপূর্বক সন্ত্রাসী কায়দায় ইজতেমা মাঠে ঢুকে। তাদের এ হামলার ফলে জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে, জুবায়েরপন্থিরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে যথাসময়ে ইজতেমা আয়োজনের জন্য সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সাদপন্থিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। যার যা দাবি ছিল, তা আলোচনা করে সমাধানের কথা থাকলেও তারা সব সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই শত্রুকে প্রতিহত করতে হবে।’
মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যেই মামলা দায়ের করা হবে।’
‘এছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ বিষয়ে কথা বলা শুরু করেছেন।’
মামুনুল হক সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের ‘নিষিদ্ধ গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান। ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুবায়েরপন্থিদের টঙ্গী ইজতেমা মাঠ অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি সবার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ দিকে, গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বুধবার দুপুর দুইটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ওই আদেশ বলবত থাকবে বলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়।
টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে শতাধিক। এদের মধ্যে ৩৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) ও বেলাল হোসেন (৫৫)।
মুসল্লিরা জানান, আগামী শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে জোড় ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সে উপলক্ষে মুসল্লিরা আসতে থাকেন টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে মুসল্লিদের একটি পক্ষ মাঠে প্রবেশকে কেন্দ্র করে বাধে বিপত্তি। শুরু হয় হাতাহাতি। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ান তারা। এতে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে টঙ্গী আহসানউল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বেলাল হোসেন নামে আরেক জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।