মামলা বাণিজ্যে জড়িত থাকায় ডিএমপির এক এসআইকে প্রত্যাহার

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন মামলায় নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি এবং মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে শাহিন পারভেজ নামে এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সিলেট রেঞ্জে কর্মরত ছিলেন তিনি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই তথ্য জানান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে মামলা বাণিজ্যে পুলিশও জড়িত। আমার লোক যে সব ভালো তা বলব না। আমার কাছে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যিনি আমার লোক, এই কাজে লিপ্ত ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে আদাবর থানার এসআই শাহিন পারভেজকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদাবর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া বলেন, গতকাল রাতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এসআই শাহিন পারভেজকে প্রত্যাহার করা হয়। বর্তমানে তাকে তেজগাঁও বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, সিলেট রেঞ্জ থেকে ডিএমপিতে বদলি হয়ে আসা শাহিন পারভেজকে জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই দায়িত্ব পেয়ে মামলার এক আসামির কাছে টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী বিষয়টি ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে নয়া দিল্লিকে স্পষ্ট বার্তা

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে নয়া দিল্লিকে ঢাকা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না, অন্য কেউ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্র সচিব জানান, সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেখানে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দুই দেশই একমত হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পিত অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, আমরা বলেছি, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয়। আমি এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য থেকে বিরত থাকে এবং অন্যান্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিত। জসীম উদ্দিন জানান, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য পছন্দ করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এই বার্তা শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গে সীমান্ত হত্যা সঙ্গতিপূর্ণ নয় জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আজকের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কাম্য নয় এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবজসীম উদ্দিন বলেন, আমরা সবসময় বলেছি যে, সীমান্ত হত্যা যেন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়। তাদের দিক থেকে তারা বলেছে, সীমান্তে নানা ধরনের অপরাধ হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব অপরাধের সংযোগ আছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা বলেছি, আমরা কোনো অপরাধ সমর্থন করি না, একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডকেও সমর্থন করি না। কাজেই দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের যে কথা বলছি, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের যে অঙ্গীকার এবং রাজনৈতিক যে অঙ্গীকার হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার, সেটার বিষয়ে তারা যেন শ্রদ্ধাশীল থাকে। দুই দেশের বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত আমাদের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ভারতের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান ট্যারিফ, প্যারা-ট্যারিফ এর মত বাধাসমূহ দূর করার উপর আমরা গুরুত্ব আরোপ করেছি। আমরা ভারত থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছি। পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, আপনারা জানেন যে বর্তমানে ভারতের সাথে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ খাতে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ভারত হতে বর্তমানে প্রায় দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছি। চলমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই সহযোগিতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়েও ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রতি বছর পর্যটন এবং চিকিৎসা উপলক্ষে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি ভারত সফর করে। তাদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজীকরণসহ অন্যান্য কনস্যুলার ইস্যু সহজীকরণের জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। যেসকল বাংলাদেশি নাগরিক ভারতের আদালতের দেওয়া সাজা বাংলাদেশে অথবা ভারতে ভোগ করছে, তাদের সাজা মওকুফের বিষয়ে ভারতের যথাযথ বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া, ভারতে আটক বাংলাদেশের জেলেদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

অপতথ্য ঠেকাতে ইইউ কূটনীতিকদের সহযোগিতা চান প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসে গোটা মাসজুড়ে আমরা বিজয় উদযাপন করি। বিজয়ের মাসে আপনাদের সঙ্গে এমন একটি ইনট্যারক্টিভ আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’ বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরেন। অধ্যাপক ইউনূস অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল সে সব কথা জানান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানান। সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানান ইইউ প্রতিনিধিরা। বেশ কিছু পরামর্শ ও সুপারিশ তুলে ধরে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তারা।

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

আরিফ সোহেলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় বাংলা মোটরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকা থেকে বান্দরবানের লামা যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়াপাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটে।সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আটজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বান্দরবানের লামায় যাওয়ার সময় সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়ার মেঘনা ব্রিজ অংশে পৌঁছালে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা সমন্বয়কদের গাড়ি ভাঙচুর করে সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগসহ মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয়। ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ। তিনি বলেন, ‘সমন্বয়কদের গাড়ি আটকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।’ ‘তারা আমাদের বলেছেন, এক দল ছিনতাইকারী তাদের গাড়ি আটকে মোবাইল, মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। মোট আটজন সমন্বয়ক ছিলেন।’ এ দিকে, রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতের হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করারও ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।

শুরুর পূর্বেই স্থগিত ৪৭তম বিসিএসের আবেদন

৪৭তম বিসিএসের আবেদন কাল মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত ঘোষণা করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এসএম মতিউর রহমান। তিনি জানান, বিসিএসসহ সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি ২০০ টাকা করা হয়েছে। তবে, এ সংক্রান্ত কোন প্রজ্ঞাপন এখনো জারি করা হয়নি। এ জন্য ৪৭তম বিসিএসের আবেদন স্থগিত করা হয়েছে। মতিউর রহমান আরও জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চাকরিতে আবেদনের ফি কমানোর প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর ৪৭তম বিসিএসের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। অল্প সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। গেল ২৮ নভেম্বর ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, ৪৭তম বিসিএসের আবেদনপত্র পূরণ ও ফি জমাধান শুরু হওয়ার কথা ছিল ১০ ডিসেম্বর সকাল দশটায় থেকে। শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। তবে, তার আগের দিন এ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হল।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী ভারত। দিল্লি আশা করছে, দুই কাছে প্রতিবেশীর সম্পর্ক একটা ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাবে। একই সাথে সংল্যাঘলুদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছে দেশটি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘জসীম উদ্দিনের আমন্ত্রণে আমি ঢাকায় এসেছি। অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মুহূর্তে আমি ঢাকায় এসেছি, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য। এ বছর আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে আমাদের উভয় দেশের নেতাদের মধ্যে প্রথম কথা হয়েছে। তাদের মধ্যে টেলিফোন আলাপ হয়েছে। নিউইয়র্কে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে।’ বিক্রম মিশ্রি আরো বলেন, ‘আমার এ সফর তারই অংশ। নতুন সরকারের সঙ্গে এটা প্রথম ফরেন সচিব মিটিং। আজকের এই আলোচনা আমাদের উভয়পক্ষকে এই সুযোগটা করে দিয়েছে। আমাদের মধ্যে খোলামেলা ও গঠনমূলক মত বিনিময় হয়েছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হল- ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক ও লাভজনক সম্পর্ক, যেটা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমরা অতীতে দেখেছি এবং আমরা ভবিষ্যতেও এটা দেখতে চাই।’ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উভয় দেশের মানুষ কেন্দ্রিক হবে জানিয়ে মিশ্রি বলেন, ‘এই সম্পর্ক হবে মানুষকেন্দ্রিক। এটা উভয় দেশের জনগণের উপকারে আসবে এবং এর প্রতিফলন আমাদের প্রাত্যহিক ঘটনার মধ্যে পাচ্ছি। যার মধ্যে আমাদের ব্যবসায়-বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, পানি, এনার্জি, উন্নয়ন সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রয়েছে। এই বিষয়গুলোর ওপর আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’ অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘ভারতের আকাঙ্ক্ষা হল- অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করা। একইসঙ্গে আমরা সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি আলোচনা করেছি। সংখ্যালঘু ইস্যুতে আমি আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। সংখ্যালঘুর বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিষয়টি দেখবে।’ বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে কিছু দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে আক্রমণের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সার্বিকভাবে উভয়পক্ষের মধ্যে গঠনমূলক মনোভাব চাই। অপেক্ষায় আছি, আমাদের সম্পর্ক একটা ইতিবাচক ও গঠনমুলক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাবে।’ সংক্ষিপ্ত সফরে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। আজ রাতে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।

দিল্লি থেকে ভিসা অফিস ঢাকা বা অন্য দেশে সরাতে বললেন ড. ইউনূস

ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় বহু শিক্ষার্থী দিল্লি গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে, তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী কোন দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) উভয়ই উপকৃত হবে বলে রাষ্ট্রদূতদের জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান ইইউর ২১ জন রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎ করতে গেলে এ অনুরোধ জানান তিনি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এ বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরো ডিসেম্বরজুড়ে আমরা বিজয় উদ্‌যাপন করি। বিজয়ের মাসে আপনাদের সঙ্গে এমন একটি ইন্টারেক্টিভ আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’ বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন তিনি। এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল, সেসব কথা জানান। বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা এই মিস-ইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে, তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি। সম্প্রীতি জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত মিনিময়ের কথাও আজকের বৈঠকে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তৌহিদ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। তিনি অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান। সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ইইউর প্রতিনিধিরা। পরামর্শ ও সুপারিশ জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় বিক্রম মিশ্রি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢুকেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল চারটা ১৮ মিনিটে তিনি সেখানে ঢুকেন। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের আগমন ঘিরে আগে থেকেই পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সীমিত করা হয় যান চলাচল। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশের প্রতিটি সড়কেই বাড়ানো হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর আগে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর লক্ষ্যে ঢাকায় এসে তিনি প্রথমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই প্রথম ভারতের উচ্চ পর্যায়ের কোন কর্মকর্তা ঢাকায় এলেন। আর পররাষ্ট্র সচিব হওয়ার পর মিশ্রির প্রথম ঢাকা সফরও এটি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতেই বিক্রম মিশ্রির দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক জোরদারে আমরা আগ্রহী: ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভারত। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে চায় দেশটি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এমন কথা বলেন।ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের আশ্বাস দেন। আমরা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চাই। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদারে ভারত আগ্রহী।’এ সময় তিনি পর্যটন ও ব্যবসায়ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, সেসব সমস্যা দূর করতে কাজ চলছে বলেও জানান।বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পারস্পরিক স্বার্থ নির্ভর সম্পর্ক চায় ভারত।’এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর আক্রমণের মত সাম্প্রতিক দুঃখজনক কিছু ঘটনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত আশা করে, সম্পর্ক বেগবান করতে বাংলাদেশ ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে বিষয়গুলো দেখবে।’এ দিকে, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কিছুটা উত্তেজনা চলছে। ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী প্রচার, দেশটিতে বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে জরুরিভাবে তলবও করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক খুব ভাল যাচ্ছিল না। এরই মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করছেন।সফর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘ভারত থেকে যে বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভরশীলতা এবং তাদেরকে বাংলাদেশে প্রতিনিধি মনে করাটাই ভারতের পররাষ্ট্র নীতির একটি বড় ভুল। ভারতের উচিত বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা।’দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব এমন বার্তাই দিলেন।

পররাষ্ট্র মস্ত্রণালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র স‌চিব বিক্রম মি‌শ্রি

অন্তর্বর্তী সরকা‌রের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌ‌হিদ হো‌সে‌নের স‌াথে সাক্ষাৎ কর‌তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ে গেছেন ভার‌তের পররাষ্ট্র স‌চিব বিক্রম মি‌শ্রি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলা‌দেশ ও ভারতের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শেষে বিকাল তিনটা ৪০ মি‌নি‌টে পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ে যান তিনি। সংক্ষিপ্ত সফ‌রে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকা‌লে ঢাকায় আসেন ভার‌তের পররাষ্ট্র স‌চিব। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর দিল্লির উচ্চ পর্যায়ের কোন কর্মকর্তা প্রথম ঢাকায় এলেন। আর পররাষ্ট্র সচিব হওয়া মিশ্রির প্রথম ঢাকা সফর এটি। সফরের শুরুর কর্মসূ‌চি‌তে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দি‌ল্লির নেতৃ‌ত্ব দিতে পদ্মায় যান মি‌শ্রি। বাংলা‌দে‌শের পররাষ্ট্র স‌চিব মো. জসীম উ‌দ্দিন তাকে স্বাগত জানান। পরে দুই পররাষ্ট্র স‌চিব একান্তে কিছু সময় আলাপ-আলোচনা করেন। এরপর এফওসিতে বসে উভয়পক্ষ। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বে‌শি সময় বৈঠক মধ্যাহ্নভোজের মধ‌্য দিয়ে শেষ হয়। এফওসিতে আলোচনার বিষ‌য়ে এখনও গণমাধ‌্যমের স‌ঙ্গে শেয়ার করে‌নি ঢাকা-‌দি‌ল্লি। তবে, কূটনৈতিক সূত্রগু‌লোর ধারণা, বৈঠকে উভয়পক্ষ রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা। ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সক্রিয়তা বন্ধ, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার ও ভিসার জট খোলার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা। অন্য দিকে, দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার পাশাপাশি সংখ্যালঘু স্বার্থ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আর্জি জানাতে পারে ব‌লে ইঙ্গিত রয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার স‌ঙ্গে সাক্ষাৎ শে‌ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় যাবেন ভার‌তের পররাষ্ট্র স‌চিব। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতেই বিক্রম মিশ্রির দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে বসেছেন ইউরোপের ২৮ রাষ্ট্রদূত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠকে বসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৮ জন রাষ্ট্রদূত। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে শুরু হয় বৈঠকটি। বৈঠকে ইইউর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। পট পরিবর্তনের পরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সব সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত একত্রিত হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগটি এবারই প্রথম। বৈঠকে সমসাময়িক ইস্যু ও অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় থাকছে বলে জানা গেছে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেছিলেন, ‘এ সভা বাংলাদেশ এবং ইইউর সম্পর্ককে আরও সুসংহত করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’ দিল্লি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২০ দেশের রাষ্ট্রদূতের ঢাকায় আসার খবর ১৭ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানিয়েছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থন পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেছিলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যে দিল্লিতে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২০ দেশের রাষ্ট্রদূত একযোগে তার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন, যা বাংলাদেশে আগে কখনও ঘটেনি।’

দুদক ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল: আসিফ নজরুল

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল।’ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন। গেল ১৬ বছরে সরকারি-বেসরকারি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল। কিন্তু, বিচার হয়নি। কিন্তু, বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার।’ বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলেও জানান এই উপদেষ্টা। দুর্নীতির বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি যে একটা খারাপ জিনিস, এটা ভাবার সংস্কৃতি আমাদের সমাজ থেকে চলে গেছে। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, ১০০ টাকার বালিশ নাকি চার হাজার, পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা দেখলাম ছয়টা ব্যাংক লুটপাট হয়েছে। বাংলাদেশের একজন সাধারণ ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বড় লোক হয়ে গেছে। আমরা দেখলাম একটা বেহায়া প্রধানমন্ত্রী, তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এটা হাসতে হাসতে সে জাতির সামনে বলছে।’ আসিফ নজরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া তিন কোটি টাকা এক জায়গায় রেখেছে প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে। একটা টাকা সেখান থেকে আত্মসাৎ করেনি। তিন কোটি টাকা ছয় কোটি টাকা হয়েছে। ওই টাকা কেউ স্পর্শ করেনি। সেজন্য তিন বারের প্রধানমন্ত্রীকে দশ বছরের জেল দিয়েছে এই দেশের দুদক, বিচার বিভাগ মিলে। আর সেই চোর প্রধানমন্ত্রী, যার পুরো পরিবার ছিল চোর সে সারা দেশে বলে বেড়াত এতিমের টাকা নাকি খালেদা জিয়া আত্মসাৎ করেছেন।’ দুদকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘এ রকম পরিস্থিতিতে আপনারা কাজ করতে পারেন নাই। এমন এক্সকিউজ দিতে পারেন। তার মধ্যেও কেউ কেউ কাজ করার চেষ্টা করেছেন। এখন সেই পরিবেশ নাই। এখন কোন উপদেষ্টার তরফ থেকে কেউ ফোন করেছে কোন দিন? কেউ আপনাদের কোন রকম হস্তক্ষেপ করছে না। আপনারা প্রমাণ করেন যে, ভাল পরিবেশ পেলে আপনারা ভাল কাজ করতে পারেন।’ আসিফ নজরুল আরো বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের অবশ্যই আমরা দোষ দেব, সবাইকে দোষ দেব। কিন্তু, এই দোষ দিয়ে নিজের অন্যায় থেকে নিজে যেন পার পাওয়ার চেষ্টা না করি। নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, আমরা কী সৎ আছি। সব সময় কী বলপ্রয়োগের কারণে আমরা অসৎ হই। সব সময় কী আদেশ, নির্দেশের কারণে আমরা সৎ লোকের বিরুদ্ধে লাগি।’ বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলেও জানান এই উপদেষ্টা। বিগত কমিশন প্রায় শতাধিক মন্ত্রী, সাংসদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দিয়ে গেছে। সেই অনুসন্ধানের বর্তমান অবস্থা কী সেটা জানানোর জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানান তিনি। পরে বের হয়ে সাংবাদিকদের আসিফ নজরুল বলেন, ‘যে সব কাজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাহায্যে করা সম্ভব, সেগুলো আমরা করে ফেলব। আমরা দেরি করব না, আমাদের খুব বেশি সময় নেই।’ তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন কোন প্রতিবেদন দেয়নি। আমি তাদের বললাম উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য আমরা একটা আইন করব; আপনারা কী আইন করে দিতে পারবেন কি না। পরে ওই কমিশনের রিপোর্ট ছাড়াই আমাদের আইনটা (আইনের খসড়া) করে দিল।’ উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন ও প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে দুইটি আলাদা আইনের খসড়া পাওয়া গেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই দুইটি আইন অবলম্বনে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনটি যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হবে।’ দুদক কমিশন নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুদকের ব্যাপারটা আমি দেখছি না। যারা দেখছেন বা যিনি দেখছেন তারা এ বিষয়ে সচেতন আছেন। দুদককে অচল রাখা যাবে না। এত বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে দুদককে অবশ্যই সচল করতে হবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদকে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।’ খোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, ‘শুধু দমন নয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণের দায়িত্ব দুদকের। আমরা এই দায়িত্ব পালনে নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছি।’ দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন করা সহজ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেবল প্রতিকারমূলক কার্যক্রম নেয়া নয়, সবার মনে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।’

বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরু

বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক বা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় এই বৈঠক শুরু হয়। এফওসিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এ বৈঠকে অংশ নিতে বিক্রম মিশ্রি সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজে ঢাকায় এসেছেন। এই এফওসিতে বেশ কয়েকটি বিষয় আলোচনায় থাকছে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতীয় গণমাধ্যম এখন বাংলাদেশবিরোধী যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, সে বিষয়টি ঢাকার পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হতে পারে। এছাড়া ভারতে বাংলাদেশ মিশনের নিরাপত্তা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নিত্যপণ্য আমদানি, ভিসা ইস্যু ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম জানিয়েছেন, এফওসিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে যত উপাদান আছে সবই রাখার চেষ্টা করা হয়। আলোচ্যসূচি ঠিক করার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সম্মতিও লাগে। তবে সাধারণভাবে যেটা বলা যায়, বাণিজ্য আছে, কানেক্টিভিটি আছে, সীমান্ত আছে, পানি আছে। রাজনৈতিক পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম ভারতের কোনো শীর্ষ কূটনীতিক ঢাকায় এলেন। যদিও ৫ আগস্টের পর গত চার মাসে দুদেশের তিনটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হয়েছে। তবে এমন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এখনো হয়নি। এই বৈঠকের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন অনেকটা প্রশমিত হতে পারে বলে ইতোমধ্যেই ঈঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা (ঢাকা-দিল্লি) স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। আর এফওসি সেদিকে এগোনোর প্রথম পদক্ষেপ। এফওসির মধ্যে দিয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে বাস্তবসম্মতভাবেই এগিয়ে যেতে পারে। ’ গত বছরের ২৪ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে এফওসি বৈঠক হয়েছি। সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা। এক বছরের ব্যবধানে দুই দেশেরই পররাষ্ট্র সচিব পরিবর্তন হয়েছে।

ভয়াবহ দূষণের কবলে ঢাকার বাতাস

শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ঢাকার বাতাসে ভয়াবহ রকমের দুষণ দেখা দিয়েছে। সোমবার সকালে বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে জনবহুল এই শহরটি। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ৩৮৮ স্কোর নিয়ে বায়ুদুষণে ঢাকার অবস্থান প্রথম। বায়ুর এই মান গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্দেশ করে। মানসূচক অনুযায়ী, এদিন একই সময়ে ২২১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিশরের রাজধানী কায়রো। ১৯৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটর, ১৭৮ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ইরাকের রাজধানী বাগদাদের স্কোর ১৭৬। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’বায়ু বলে মনে করা হয়। আর ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি

একদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর এই প্রথম দিল্লির কোনো নীতিনির্ধারক ঢাকা সফরে এলেন। বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। সেই বৈঠকে দিল্লিতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া, তার রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করা, তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও ভিসা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার বিষয়ে জোর দেবে ঢাকা। এই বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বিক্রম মিশ্রি। এরপর আজই ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি। ঢাকা ও দিল্লির উভয় পক্ষের আশা, এর মধ্য দিয়ে চলমান উত্তেজনা কমানোর পথ সহজ হতে পারে। এর আগে নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া ঢাকায় আরও কয়েকটি বৈঠক করবেন তিনি।

দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইউরোপের ২৭ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বৈঠকে বসবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুপুর ১২টার দিকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক রফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, ইউ’র ২৭ দেশ ছাড়াও আরও একটি দেশের রাষ্ট্রদূত অংশগ্রহণ করবেন এ বৈঠকে। এ বৈঠকে সমসাময়িক ইস্যু ও অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহরে হামলা

ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টা ৩ মিনিটের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘ঢাকা থেকে বান্দরবানের লামা যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জে হামলার শিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহর। সেখানে তাদের ব্যাগ এবং মোবাইল নিয়ে নেয়া হয়েছে এবং অনেকেই হামলায় আহত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি বাংলাদেশ সরকারের নিকট।’

‘নির্বাচিত সরকার’ নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার মন্তব্য ‘ব্যক্তিগত’: প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

আগামী বছর নির্বাচিত সরকার দেখা যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ যে বক্তব্য রেখেছেন, তা ‘ব্যক্তিগত’ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের বিষয়ে ঘোষণা আসবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের পক্ষ থেকে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গতকাল শনিবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন নিয়ে একটি ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। …প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নির্বাচন বিষয়ক কোন ঘোষণা আসেনি।’ ‘প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নির্বাচন বিষয় ঘোষণা আসবে।’ নির্বাচন প্রশ্নে কবে ঘোষণা আসতে পারে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যখন ঘোষণা আসবে তখন সবার আগে আপনারা জানতে পারবেন।’ গেল ৮ আগস্ট সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিচ্ছে, তারা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট কোন রূপরেখা ঘোষণা করেনি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোটের কথা বলা আছে। দৈব দুর্বিপাকে সেটি করা না গেলে পরের ৯০ দিনের মধ্যে করতে হবে। তবে, অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু বিষয়ে সংস্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছে। শুরুর দিকে বিএনপি সরকারকে সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন নির্বাচন চাইছে, অন্তত নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে ঘোষণার দেওয়ার দাবিও জানাচ্ছেন নেতারা। এর মধ্যে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) চার দিনের সেমিনারে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী বছরই রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার দেখা যাবে।’ তিনি এও বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, জানি না আসলে কী হবে।’ নির্বাচন প্রশ্নে এর আগে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যের পরও এমন পাল্টা বক্তব্যই এসেছে সরকারের তরফে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, রিয়েলিস্টিক্যালি আগামী বছরের মধ্যে (২০২৫) ইলেকশন করাটা হয়ত সম্ভব হতে পারে।’ এর প্রতিক্রিয়ায় ১৯ অক্টোবর ধর্ম উপদেষ্টা ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও সেনা প্রধানের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়। সরকার যত দিন নির্দিষ্ট করে বলবে না তত দিন নির্বাচনের সময় নির্ধারিত নয়।’ সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধানও নির্বাচন হবে হতে পারে, সে বিষয়ে আভাস দিয়েছিলেন। তিনি তখন বলেন, ‘সংস্কারের মধ্য দিয়ে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ‘গণতন্ত্রে উত্তরণ’ ঘটা উচিত। তবে, সেজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।’ ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বলেন, ‘সেনাপ্রধানের বক্তব্য ‘ব্যক্তিগত’।’

সোমবার ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি

ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) জন্য সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম ভারতের কোন কূটনৈতিক বাংলাদেশে আসছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এফওসিতে অংশ নিতে আগামী ৯ ডিসেম্বর ঢাকা যাচ্ছেন। ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিমউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।’ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিক্রম মিশ্রি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে। এফওসি সম্পর্কে জানতে চাইলে জয়সওয়াল বলেন, ‘ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা করবেন।’

ফেসবুক পেজ খুলে দুই ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণা, ব্যবস্থা নিতে চিঠি

লাইসেন্সবিহীন দুইটি ভূয়া ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। রোববার (৮ ডিসেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-২শাখা হতে আকবর হজ গ্রুপ বাংলাদেশ ও আকবর ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল নামে এই দুইটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো এই পত্রে বলা হয়েছে, ‘আকবর হজ গ্রুপ বাংলাদেশ ও আকবর ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল ফেসবুক পেজ খুলে হজযাত্রী সংগ্রহের জন্য নানা ধরনের বিজ্ঞাপন ও ভিডিও প্রচার করে নিরীহ হজযাত্রীদের প্রতারিত করছে। হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ এবং হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ অনুসারে একাধিক এজেন্সি একত্রিত হয়ে হজ গ্রুপ নামে কোন গ্রুপ গঠনের সুযোগ নেই।’ চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের হজে বৈধ হজ এজেন্সির তালিকাভুক্ত না থেকেও আকবর হজ গ্রুপ বাংলাদেশ ও আকবর ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল অবৈধভাবে গ্রুপ খুলে পাঁচ লাখ তিন হাজার টাকায় হারাম শরীফ হতে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে হোটেলে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হজযাত্রী সংগ্রহের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। এমনকি ফাইনাল নিবন্ধন করলেই নিশ্চিত ২০ হাজার টাকা ক্যাশব্যাক ওবং উন্নতমানের সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হজযাত্রীদের সাথে প্রতারণা করছে। নিবন্ধনের জন্য সারা দেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে এই গ্রুপে একাধিক হজ এজেন্সি গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।’ এই গ্রুপের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অবৈধ উল্লেখ করে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে তাদের অফিস বন্ধ করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে। অন্যথায়, হজের নামে বড় ধরনের প্রতারণার আশঙ্কা করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বিজিবি পিট দেখাবে না, বুক দেখাবে

সীমান্তে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিন বলেছেন, ‘ওই রকমই নির্দেশ দেয়া হয়েছে, প্রস্তুতিও সেই রকমই।’ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্বাবলম্বীকরণে বিজিবির সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে শেষে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পিলখানা বিজিবির সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোন সময় বিজিবি পিট দেখাবে না, বুক দেখাবে। বিজিবিকে বলা হয়েছে, সীমান্তের কোন ধরনের উত্তেজনায় কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোন উসকানি এলে প্রতিহত করতে হবে, ছাড় দেয়া হবে না।’ পঞ্চগড় সীমান্তে হত্যা ও সীমান্ত উত্তেজনা প্রসঙ্গ সম্পর্কে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিজিবিকে নির্দেশনা দিয়েছি, যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি রাখার জন্য। বিজিবি সীমান্তে সব সময় প্রস্তুত থাকবে। তবে, সীমান্তে ওই অর্থে সে ধরনের কোন বড় উত্তেজনা নাই।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্তবর্তী বাংলাদেশি নাগরিকদের বলবো উদ্বেগের কোন কারণ নাই। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা সব সময় প্রস্তুত। সীমান্তবর্তী নাগরিকরা সম্পূর্ণ নিরাপদ।’ বিজিবিকে কী ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিজিবি অভ্যন্তরীণ ও সীমান্তে নিরাপত্তায় কাজ করবে। তবে, অভ্যন্তরীণ কাজ কমিয়ে সীমান্তে মনোযোগ দিতে বলেছি।’ এর আগে একই অনুষ্ঠানে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার র‌্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছিলেন। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা র‌্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। ভারত যদি সীমান্ত উত্তেজনা বাড়ায় তাহলে বিজিবির উদ্দেশ্যে আপনাদের নির্দেশনা কি থাকবে- জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ভারত একটা, ভারতের জনগণ অন্য বিষয়। ভারতের জনগণের উত্তেজনায় প্রতিকার করবে গণমাধ্যম, জনগণ আপনারা, আমরা। ওই রকমই নির্দেশনা রয়েছে, ওই রকমই নির্দেশা দেওয়া হয়েছে, প্রস্তুতিও সেই রকমই।’ এর আগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের স্বাবলম্বীকরণে বিজিবি কর্তৃক পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায় স্থানীয় প্রতিনিধিরা

জাতীয় সংসদসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই সব সময়ের জন্য চায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা। একইসাথে ডিসি, ইউএনওদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের তাগিদ দিয়েছেন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারবিষয়ক কমিশনপ্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বৈঠকে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ছিলেন। তারা সবাই বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়া উচিত। যে পদ্ধতিতে আছে, সেই পদ্ধতিতেই যেন হয়, সংসদীয় পদ্ধতিতে যেন না হয়। তারা নারী প্রতিনিধিত্ব অর্থবহ করতে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির কথা বলেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অর্থবহ করতে সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং সাংসদদের ভোটে চেয়েছেন। সর্বজন গ্রাহ্য ব্যক্তি যেন এ পদে আসতে পারেন, সেই কথাও তারা বলেছেন।’ সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক জানান, অনেকেই স্থানীয় সরকার ভোট বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে অধীনেই সংসদ নির্বাচনের আগেই করার জন্য বলেছেন। একইসঙ্গে তারা সব সময় সব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে ভোটের জন্য বলেছেন। এ জন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির কর্মকর্তাদের চেয়েছেন। তাদের পদচ্যুত করায় মনক্ষুণ্ন, সবাই প্রায় অন্তুষ্ট। কিন্তু, সবাই চান সত্যিকারের স্থানীয় সরকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। কর্তৃত্ববাদী সরকার হয়েছিল সেখানে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হত। একইসঙ্গে তারা সাংসদ ও কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত যেন হয় সেটা চেয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করে নারীদের জন্য অন্যভাবে নির্বাচনের সুপারিশ এসেছে। সবাই দাবি করেছেন, স্থানীয় সরকার যেন শক্তিশালী হয়। তারা যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যেন ভূমিকা রাখতে পারেন, এ জন্য জাতীয় সংসদের মত স্থানীয় নির্বাচনেও যেন ভাল ব্যক্তিরা আসতে পারেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হবে, সে কথা বলেছেন। তাদের অনেকেই আজ প্রথম বারের মত জাতীয় সংসদ ভবনে এসে নিজেরা সম্মানিত বোধ করেছেন। তারা বলেছেন, এ সুন্দর ভবনে যেন কখনোই আর অসুন্দর ব্যক্তিরা ঢুকতে না পারেন। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপক দাবি উঠেছে।’ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা সময়মত কাজ শেষ করতে চাই। আমরা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ শেষ করতে চাই। শেষ পর্যন্ত আমরা প্রস্তাব নেব। তারপর সরকারের কাছে সুপারিশ করব।’ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। কমিশন যেন কঠোর হয়। আমরা মতামত দিয়েছি, যেন অল্প সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পারি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসি কর্মকর্তা যেন হয়। ডিসি বা ইউএনওকে চাই না। বিচার বিভাগ ছাড়া সব ইসির নিয়ন্ত্রণে চাই। আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচনের কথা বলেছি।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি যেন ন্যূনতম ডিগ্রি পাস হয়। স্থানীয় নির্বাচনে যে দলীয় মার্কা না থাকে।’ সাবেক এক ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল ফেরদৌস বলেন, ‘আগের সরকারের আমলের কেউ যেন পুনর্বহাল হতে না পারে। সঠিক সময়ে, সঠিক উপায়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন না করা হয়, সে প্রস্তাব আমরা করেছি।’ অন্য এক সাবেক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘দ্রুত সব নির্বাচন চাই। দিনের ভোট রাতে চাই না। নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ হয়।’

এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি: প্রধান বিচারপতি

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। রোববার (৮ ডেসেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সিটিজেন কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।কনফারেন্সে সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। আর ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে।’প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আজ থেকে জনগণকেন্দ্রিক বিচার বিভাগকে আপনাদের পাশে পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার যেন করতে পারি, তা খেয়াল রাখতে হবে। বিচার ব্যবস্থায় কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার চলছে। আগামীতে জনগণের বিচার বিভাগকে পাশে পাবে মানুষ।’ সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মুর্শেদ বলেন, ‘অন্যায় যেখানে হবে, সেখানে সোচ্চার হতে হবে।’ এসডিজিতে যে অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

অবৈধ বিদেশিদের বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবে না

অবৈধ বিদেশিদের বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রোববার (৮ ডিসেম্বর) থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কোন বিদেশিকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবে না। এটি হঠাৎ কোন সিদ্ধান্ত নয়। কতজন বিদেশি আছেন, কোন কোন দেশের বিদেশিরা আছেন, সেই তালিকা পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, তারা কত দিন পর্যন্ত এ দেশে থাকতে পারবেন।’ সীমান্ত এলাকা পুরোপুরি নিরাপত্তার মধ্যে আছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না।’ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে আসছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে।’এ সময় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোন ধরনের আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুস ওড়ানো যাবে না। এ ছাড়া, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ইয়াং জেনারেশন একটু পানি টানি খায়, প্রকাশ্যে ওইটা করা যাবে না।’