ঢাকায় পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট
চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছান পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট। বিমানবন্দরে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। জোসে রামোস হোর্তা ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন। তার সফরে অফিসিয়াল এবং কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি চুক্তি হবে। এছাড়া তার সফরকালে ঢাকায় পূর্ব তিমুরের অনারারি কনস্যুলেট খোলার বিষয়ে ঘোষণা আসবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট সফরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। অফিসিয়াল এবং কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি। আর দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক। হোর্তার সফরকালে বাংলাদেশে তিমুর-লেস্তে অনারারি কনস্যুলেট খোলার বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিমুর লেস্তের একজন তরুণ কূটনীতিককে বছরব্যাপী বিশেষ কূটনীতিক প্রশিক্ষণ কোর্স এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং কূটনীতির ওপর প্রফেশনাল মাস্টার্স ২০২৫-এ অংশগ্রহণের জন্য বৃত্তি প্রদান করেছে। কূটনৈতিক প্রশিক্ষণটি ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ যৌথভাবে পরিচালনা করে থাকে। জসীম উদ্দিন বলেন, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সফরের দ্বিতীয় দিন ১৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি হোর্তা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এর পরপরই দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান পরিষেবা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, শিক্ষা, পেশাদার ও কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) এবং ক্ষুদ্র অর্থ ও ক্ষুদ্রঋণ সহ দারিদ্র বিমোচনের বিষয়ে চুক্তি/সমঝোতা স্মারক /সমঝোতা সহযোগিতা স্বাক্ষররে সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আজও ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর
চলতি বছর শীতের শুরুতেই টানা কয়েক দিন বাতাসের মান খুবই অস্বাস্থ্যকর ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকালেও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে। রোববার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে একিউআই স্কোর ২৮৩ নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কুয়েতের কুয়েত সিটি এবং বাগদাদের ইরাক যথাক্রমে ৬৫৯ এবং ৬০০ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: চিকিসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু
রাজধানীর মিরপুরে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে স্বপ্না আক্তার (২৪) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচজন মারা গেলেন। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বপ্নার মৃত্যু হয়। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. মো. শাওন বিন রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিস্ফোরণে স্বপ্নার শরীরের ১৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ওই ঘটনার তার শ্বাসনালিও পুড়ে গিয়েছিল। শনিবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় স্বপ্না। বর্তমানে ওই ঘটনায় ২০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে ইসমাইল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ নভেম্বর ভোরে মিরপুর-১১ নম্বরের সি-ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় রং মিস্ত্রী খলিলসহ দগ্ধ হন তার স্ত্রী রুমা আক্তার (৩২), ছেলে হাফেজ আব্দুল্লাহ (১৩), মাদরাসা ছাত্র মোহাম্মদ (১০) ও ইসমাইল (৪)। এছাড়া একই ঘটনায় পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. শাহজাহান (২৫) ও তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তারও (২২) দগ্ধ হয়েছিলেন। তারা দু’জনই গার্মেন্টস কর্মী। ঘটনার পর দগ্ধ সবাইকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল্লাহ ছাড়াও তার ভাই মোহাম্মদ, মা রুমা আক্তার ও বাবা আব্দুল খলিল মারা যান। সবশেষ শনিবার বিস্ফোরণে দগ্ধ স্বপ্নাও না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। স্বপ্নার স্বামী মো. শাহজাহান জানান, তাদের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলায়। স্বপ্নার বাবার নাম আব্দুল মালেক। মিরপুরের ওই বাসাতে ভাড়া থেকে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। ঘটনার দিন রাতে তারা বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পান। এতে ঘুম ভাঙলে চারদিকে আগুন জ্বলতে দেখেন। ওই সময় শরীরেও আগুন জ্বলতে দেখে তারা নিজেরাই বাসার বাইরে বের হন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়। শাহজাহান জানান, তাদের বাসায় কোনো গ্যাস সিলিন্ডার নেই। তবে বাসার সামনে দিয়ে গ্যাস লাইন রয়েছে। ঘটনার দুই দিন আগে রাস্তার পাশে থাকা সেই গ্যাস লাইনে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠেছিল। পরে স্থানীয়রা সেই আগুন নেভান। তার ধারণা, সেই লাইন থেকে লিকেজ হয়ে তাদের রুমের ভেতরে গ্যাস জমে ছিল। পরবর্তীতে পাশের বাসার খলিল যখন মশার কয়েল জ্বালানোর জন্য দিয়াশলাই জ্বালান, তখনই জমে থাকা গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
কি পাপে হাসিনার মত শাসক পেয়েছিলাম?
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আমরা যদি আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে অনেক ভাল বাংলাদেশ গড়তে না পারি, তাহলে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে। এটা মনে রাখতে হবে।’ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় জাতীয় যাদুঘরের মিলনায়তনে নিজের লেখা উপন্যাস ‘আমি আবু বকর’ নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বঙ্গীয় সাহিত্য সভা’ এ সভার আয়োজন করে। সভায় মাহবুব মুর্শেদ, আন্দালিব রাশদী, পাপড়ি রহমান, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, মো. রাশেদ খাঁন, সালাহ উদ্দিন শুভ্রসহ বিভিন্ন লেখক ‘আমি আবু বকর’ উপন্যাস রচনার প্রাসঙ্গিকতাসহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখক আসিফ নজরুলের অবদানের কথা তুলে ধরেন। উপন্যাসটি রচনার প্রেক্ষাপট ও প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরতে গিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আমরা যে নারকীয় শাসন সহ্য করেছি, এটার পিছনে আমাদের ‘কালেক্টিভ’ কাপুরুষতা ছিল। জানি না, আমরা কি পাপ করেছিলাম, যে দেশে শেখ হাসিনার মত একটা শাসক পেয়েছিলাম। তিনি আমাদের সব সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছিলেন।’ আইন উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘ট্যাগের রাজনীতি দিয়ে মানুষকে ভিক্টিমাইজ করার আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে আমরা ঘৃণা করতাম। সেটা আমরা এখনো করে চলেছি।’ তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সন্দেহ করে নয়, বরং নিশ্চিতভাবে জেনে বুঝেই বহু ছাত্রকে মিথ্যাভাবে শিবির ট্যাগ দেওয়া হত। তারা জানত, এ ছেলেটা শিবির না, ছাত্রদল না; তা সত্ত্বেও তার ল্যাপটপটা নেওয়ার জন্য, বিনোদন করার জন্য, নিজেকে আরও বড় লিডার বানানোর জন্য বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হত। গত ১৫ বছরের এই সব ব্যাধি থেকে আমরা এখনো মুক্ত হতে পারিনি। হাসিনার সরকারের দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে আমরা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মুক্তি পেয়েছি।’ আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা গত সরকারের যে নিষ্ঠুরতা, নারকীয়তা, অনাচার, ট্যাগের রাজনীতি, অশ্লীলতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, সেগুলো থেকে আমাদের বহু ভাল হতে হবে। না হলে এত ছাত্র-তরুণ মারা গেল, এত মানুষের অঙ্গ হানি হল, তাদের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা হবে।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে অলিখিত নিয়ম হয়েছিল বাংলাদেশে- তিনটা বিষয়ে কথা বলা যাবে না। এর একটা হল শেখ হাসিনা সম্পর্কে। দ্বিতীয়টা হল ভারত সম্পর্কে। আর তৃতীয়টা বললাম না। কারণ, এটা খুবই বিতর্কিত।’
র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ গুম কমিশনের
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকাল পাঁচটায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাবের সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হচ্ছে। সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছিল বিএনপিও। ২০০৪ সালে বিএনপির সরকারের আমলে গঠিত এই বাহিনীর বিলুপ্তি কেন চান তা ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর হাফিজ বলেন, ‘এটা মেডিকেল বিদ্যাতেও আছে। যখন একেবারে গ্যাংরিন হয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তখন কেটে ফেলা ছাড়া কোন উপায় থাকে না।’ এই মুহূর্তে র্যাবকে বিলুপ্ত করা হলে জনগণের কাছে একটা ভাল সিগন্যাল যাবে বলে মনে করেন হাফিজ। বলে রাখা ভাল, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। জমা দেওয়া রিপোর্টে কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেন।
সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনার সুযোগ পেলেন বিচারকরাও
বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদেরও সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছে সরকার। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন তারা। বিচারকদের সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার সুযোগ দিতে ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়িসেবা নগদায়ন নীতিমালা-২০২৪’ জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগ। এই নীতিমালার আওতায় সর্বোচ্চ কত টাকা ঋণ পাওয়া যাবে এবং গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে কত টাকা করে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগের বাজেট শাখা। সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে কমপক্ষে তিন বছর পার করেছেন- এমন কর্মকর্তা, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব ও সিনিয়র সচিবরা গাড়ি সুবিধা পান। এরা গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণ পান। এ কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য ঋণ সুবিধার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। নীতিমালা অনুযায়ী, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিকাল ১৫ বছর পূর্ণ হওয়া যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, জেলা জজ পদমর্যাদার সদস্য, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োজিতরা সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনতে পারবেন। এ জন্য এক শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে। সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনার পর বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা গাড়ি মেরামত, সংরক্ষণ, জ্বালানি, ড্রাইভারের বেতন বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার পরেও যারা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করবেন, তাদের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘সুদমুক্ত ঋণ পেতে অবসরোত্তর ছুটি শুরুর তারিখ পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর থাকতে হবে। লিয়েন বা চুক্তিতে চাকরিতে নিয়োজিতরা এই সুবিধা পাবেন না।’ শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত বিভাগীয় মামলা বা ফৌজদারি মামলা চলমান থাকলে, বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ড হলে সেই দণ্ডভোগের দুই বছর পার না হলে এবং লঘুদণ্ড হলে সেই দণ্ডভোগের এক বছর পার না হলে ঋণ পাওয়া যাবে না। এছাড়া, পদের স্থায়িত্ব বা যথার্থতা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকলেও এই ঋণ দেওয়া হবে না। কীভাবে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনা যাবে, গাড়ি হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে কি হবে, কীভাবে ঋণ পরিশোধ করতে হবে, সেসব বিষয়েও নীতিমালায় উল্লেখ করা আছে।
আয়নাঘর দেখতে যাবেন ড. ইউনূস
জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল যা আয়নাঘর নামে যেগুলো পরিচিতি পেয়েছে, সেগুলো দেখতে যাবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকাল পাঁচটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তার সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা ড. ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তারা বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিক্টিমরা অভয় পেতে পারেন।’ প্রধান উপদেষ্টা তাদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে, সেগুলো দেখতে যাবেন।তিনি কমিশনের সদস্যদের তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে জমা দেয়া রিপোর্টে কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেন বলে জানান। গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এছাড়াও হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে; যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন। কমিশনের প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছে যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে ও পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে। তিনি আরও জানান, গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তারা এখনো ট্রমায় ভুগছেন। কমিশনের প্রধান জানান, তারা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি ইন্টেরিম রিপোর্ট দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি। কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ।
গুমের ঘটনায় হাসিনার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী অভিযুক্ত করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। একইসাথে জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘সত্যের উন্মোচন’ শীর্ষক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে গেল ২৭ আগস্ট পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করে সরকার।২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গুমের ঘটনা তদন্ত, গুমদের শনাক্ত ও কোন পরিস্থিতিতে তারা গুম হয়েছেন, তা নির্ধারণের জন্য এই কমিশন গঠন করা হয়।
রাতে ঢাকায় আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট
চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। তার সঙ্গে থাকবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১৯ সদস্যের একটি দল। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি। হোর্তাকে স্বাগত জানাবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেইসঙ্গে গার্ড অব অনার ও লাল গালিচা অভ্যর্থনাও দেয়া হবে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৪-১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রেসিডেন্ট হোর্তা। পরে প্রতিনিধি দল নিয়ে বৈঠকে বসবেন ইউনূস-হোর্তা। বৈঠক শেষে তারা যৌথ প্রেস কনফারেন্স করবেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি ও ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ দিন, বিকালে পূর্ব তিমুরের অনারারি কনসাল কুতুবউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি ও বিএনপির নেতা তাবিথ আউয়াল সফররত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।তৃতীয় দিন সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রেসিডেন্ট হোর্তা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি এই দিন সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। তিনি বাংলাদেশের ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।শেষ দিন মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রেসিডেন্ট হোর্তা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএস) অডিটরিয়ামে ‘দা চ্যালেঞ্জেস অব পিস ইন দা কনটেম্পোরারি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক থিমের ওপর বক্তব্য দেবেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও তরুণ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। একই দিন বিকালে তিমুরের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের ছাত্র ও তরুণদের উদ্দেশে তার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিজ্ঞতা, তার নেতৃত্ব, দীর্ঘ সংগ্রামে জনগণের ভূমিকা ও স্বাধীনতা পরবর্তী তিমুর লেস্তের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে সম্যক বক্তব্য রাখবেন। এ দিন তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন
কবিতাই কবি হেলাল হাফিজকে বাঁচিয়ে রাখবে: সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা
কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে ঢালিউড নির্মাতা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, কবিরা তার কবিতার মাধ্যমে বেঁচে থাকবে। হেলাল হাফিজও তার কবিতার মাধ্যমেই বেঁচে থাকবে। আজ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা শেষে ফারুকী এ মন্তব্য করেন। এসময় কবির পরিবার, ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। কবি হেলাল হাফিজের একাকী জীবন নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, তিনি তার পছন্দ অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি এই জীবনেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। আমার মনে হয় না, এ জীবন নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ বা অভিযোগ ছিলো। কবি হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর কোনো পদক দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, কবি কখনও পুরস্কার বা পদকের জন্য লেখেন না। তবে, কবির প্রতি কৃতজ্ঞতা হিসেবে জাতির পুরস্কার দেয়া উচিৎ। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমরা বেঁচে থাকা অবস্থায় তাকে একুশে পদক বা স্বাধীনতা পদকের মতো কোনো পুরস্কারে ভূষিত করতে পারিনি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
সরকারের লক্ষ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে চূড়ান্তভাবে একটি নিরপেক্ষ এবং সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলাব উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। সভার শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে চূড়ান্তভাবে একটি নিরপেক্ষ এবং সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর। এটা নিয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নেই। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। বাংলাদেশ ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। সে লক্ষ্যেই এই সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ভারতকে আমরা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, আমরা ভালো সম্পর্ক চাই তবে সেটা দুপক্ষেরই স্বার্থের ভিত্তিতে। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. জাহিদ হোসেন, এমআরডিআইর অ্যাডভাইজার মো. সাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি) চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক এয়ার কমোডর মো. খালিদ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন প্রমুখ।
বিশ্বে বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা
বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। তালিকায় ঢাকার স্কোর ২৮৫। অর্থাৎ আজ এই শহরটির বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর। শনিবার সকাল (১৪ ডিসেম্বর) ৯টা ৪৩ মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এ তথ্য। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া তালিকায় ২২৪ স্কোরে দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তানের লাহোর। মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে, যার স্কোর হচ্ছে ২০১। এই দুই শহরের বাতাসও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। মূলত একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। অন্যদিকে ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে। এটি বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণের সমস্যায় জর্জরিত। শহরটির বাতাসের মান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় ও বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আ.লীগ পাক হানাদার বাহিনীর জুলুমের পুনরাবৃত্তি করেছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমরা পুরো জুলাই গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানে যারা ছিলেন তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মতাদর্শ, তাঁদের দেশ গড়ার যে স্বপ্ন তা আমরা পুরোপুরি ধারণ করি। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। একাত্তরের হানাদার বাহিনী জুলুমের পুনরাবৃত্তি ২৪ এ করেছে আওয়ামী লীগ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। শফিকুল আলম বলেন, যে নতুন বাংলাদেশ আমরা স্বপ্নে দেখছি, যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ড. ইউনূস এগিয়ে যাচ্ছেন, এটা সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যে স্বপ্ন ছিল তারই একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেই আলোকেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তাঁরা যে জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, যে জন্য তাঁরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বুদ্ধিজীবীদের যে আদর্শ তা ড. ইউনূস ও তাঁর দল ধারণ করে। একাত্তরের সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের মিল খুঁজে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ১৯৭১ সালে যেভাবে ঠকঠক করে ওনাদের (বুদ্ধিজীবী) ধরে নিয়ে গিয়েছিল পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা, এরকম পুনরাবৃত্তি আমরা জুলাইতে দেখেছি। আপনারা দেখেছেন, আমাদের যে ছয়জন শীর্ষ ছাত্রনেতা তাঁদের কীভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের উত্তরসূরিদের জন্য যেভাবে তাঁদের লেখা লিখে গিয়েছিলেন, আহনাফ বা শিক্ষার্থীরাও তাঁদের মায়ের কাছে চিঠি লিখছে যে, তাঁরা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। এর আগে, শনিবার সকাল ৭টার দিকে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, পরে ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেল গঠন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেল গঠন করা হয়েছে। সেলের সম্পাদক করা হয়েছে আল মাসনূনকে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন— নাবিল মোস্তফা, রিদুয়ান রিফাত, মুহাম্মদ রাইয়্যান ইসলাম, জাবের বিন নূর, আবু বকর সাঈম, রায়হান, আহমেদ তামিম, আরাফাত নূর, মুহম্মদ ইউসুফ হোসাইন, মোস্তাফিজুর রহমান সামি, শেখ মাহিন আহমেদ, হাসনাত মাহমুদ, সাব্বির হোসাইন ও আহমেদ সামরান। সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে এই মিডিয়া সেল গঠন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
৩ ডিগ্রিতে নামতে পারে তাপমাত্রা
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। রাজধানীসহ দেশের সব অঞ্চলেই জেঁকে বসেছে শীত। বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা অন্য জায়গার তুলনায় কিছুটা বেশি। এমন অবস্থার মধ্যে পঞ্চগড়, রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ ডিগ্রির ঘরে, যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগামী সপ্তাহ থেকে শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। একইসঙ্গে জানুয়ারি মাসে তাপমাত্রা কমে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। দেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহ ১৯ ডিসেম্বরের পর আরও বিস্তার লাভ করতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ। তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ হানা না দিলেও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা এর কাছাকাছি আসতে পারে। বজলুর রশিদ আরও বলেন, গত বছরের মতো এবারও ঘন কুয়াশার প্রবণতা থাকতে পারে। পাশাপাশি শীতের পরিমাণ বেশি থাকতে পারে। জানুয়ারিতে তিন-চার ডিগ্রিতে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। এদিকে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের শ্রীলঙ্কা উপকূলে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে এবং গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়টি পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এমন অবস্থায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া পঞ্চগড়, রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেটি তা অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এতে এ সময়ের মধ্যে শীতের অনুভূতি আরও বাড়তে পারে। তাছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ
স্বাধীনতার উষালগ্নে জাতির সূর্য সন্তানদের হারানোর বিষাদময় দিনটি স্মরণ করছে বাংলাদেশ। শোষিত আর বঞ্চিত বাঙালিকে মুক্তির পথ দেখাতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা অকাতরে নিজের বিলিয়ে দিয়েছেন, জাতির সেইসব সন্তানদের স্মরণে পালিত হচ্ছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে লাখো জনতার ঢল নেমেছে। মানুষের স্রোত নেমেছে রায়েরবাজারে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে ভোরেই শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে আসেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বহু মানুষ। রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টা আসার আগেই আশপাশের এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, নতুন প্রজন্মের তরুণেরা সাতসকালেই হাজির হন। তারা নিজস্ব ব্যানার হাতে এসেছেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। সবাই সারিবদ্ধভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা বেশিরভাগ মানুষই শোকের প্রতীক কালো পোশাক পরে এসেছেন। অনেক শিক্ষার্থীরাও হাতে ফুলের তোড়া ও ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। পুষ্পস্তবকগুলো একটির পর আরেকটি শহীদ বেদিতে রাখা হচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ, রাজনৈতিক দলের পক্ষ-বিপক্ষ, কিংবা শ্রেণি-পেশা-নির্বিশেষে বিভিন্ন দল, সংগঠনের প্রতিনিধি ও ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আর নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে স্মরণ করছেন ভয়াল ও নৃশংস সেই হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ভোর থেকেই জড়ো হতে থাকে নানা বয়সী মানুষেরা। সকাল সাতটা থেকে শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানো। শোক, বিনম্র শ্রদ্ধা আর গভীর ভালোবাসায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে সর্বস্তরের মানুষ। সকাল সাতটার কিছু সময় পর শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানো। সাতটা ৫ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সেখানে তারা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে উঠে। পরে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন। মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ছাড়াও রায়েরবাজারে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে ফুল জানাতে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বাঙালির চিরগৌরবের অর্জন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সূর্য যখন উদিত হতে চলেছে, তখন নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে বাঙালিকে মেধা-মননহীন করে দেওয়ার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল নরঘাতক পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করেছিল এদেশি কতিপয় অনুচর। তারা দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, রাজনীতিকসহ মেধাবী সন্তানদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তুলে আনে। ঘাতকের দল বুদ্ধিজীবীদের গুম ও নির্মমভাবে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে রাজধানীর রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে জল্লাদখানায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হাতবাঁধা, নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া গেলে পাকিস্তানি ঘাতকদের বুদ্ধিজীবী হত্যার এই ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়। বাঙালি জাতি বরাবরই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের আগে এই দিনটিতে শ্রদ্ধা ও বেদনার সঙ্গে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে থাকে। এবারও দিনটি উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশ গড়ার দ্বিতীয় সুযোগ যেন নষ্ট না হয়: আসিফ নজরুল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়কে দেশ গড়ার দ্বিতীয় সুযোগ বলে অভিহিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। দেশবাসীর প্রতি এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে রাষ্ট্র গঠনের যে দ্বিতীয় সুযোগ এসেছে, তা যেন কোনোভাবেই নষ্ট না হয়। সেটাই যেন সবার প্রত্যয় হয়। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যে স্বপ্ন, প্রত্যয় এবং দেশপ্রেম নিয়ে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেটারই কন্টিনিউশন ছিল আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান। আমাদের তরুণরা, ছাত্ররা জীবনের মায়া উপেক্ষা করে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে।’ আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে বহু মানুষের আত্মত্যাগের পর, বহু বুদ্ধিজীবীর আত্মত্যাগের পর আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ব্যর্থ হয়েছিলাম। একদলীয় মানসিকতা এবং একটা দলের ব্যর্থতার কারণে তা নষ্ট হতে বসেছিল। আজ কোনোভাবেই যেন সে ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন এবং আদর্শকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।’ এর আগে সকাল ৭টার দিকে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ৫ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর শ্রদ্ধা জানান প্রধান উপদেষ্টা। স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। এ সময় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল। শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর ঘটনা। মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করে। তারা এদেশের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে ১৪ ডিসেম্বর তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ইটখোলা ও মিরপুরের বধ্যভূমিসহ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়। ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্তও করতে পারেননি।
কয়েক দিন থাকতে পারে গ্যাসের ভোগান্তি, জানাল তিতাস কর্তৃপক্ষ
শীতকালে এমনিতেই গ্যাসের চাপ কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ গ্রাহকদের। এর মধ্যে বিবিয়ানা ও তিতাস গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে আগামী কয়েক দিন গ্রাহকদের অসুবিধায় পড়তে হবে বলে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এক বার্তায় জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সাময়িক অসুবিধার জন্য গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তিতাসের বার্তায় বলা হয়, বিবিয়ানা ও তিতাস গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য কয়েক দিন গ্যাস উৎপাদন কিছুটা হ্রাস পাবে। এর ফলে তিতাস গ্যাস অধিভুক্ত কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে। এদিকে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) আমিনবাজার সিজিএস-এ মোডিফিকেশন কাজের জন্য আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। বার্তায় বলা হয়, শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা তিতাস গ্যাস অধিভুক্ত সমগ্র সাভার, আমিনবাজার ও হেমায়েতপুর এবং ঢাকা মহানগরীর সমগ্র মিরপুর এলাকা, মিরপুর রোডের উভয় পাশের এলাকা, শ্যামলী, আদাবর, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ, কামরাঙ্গির চর, কেরাণীগঞ্জ (খোলামোড়া হতে কলাতিয়া, হযরতপুর পর্যন্ত), হাতিরপুল, ফার্মগেট, আজিমপুর, নিউমার্কেট, লালবাগ, শাহবাগ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। এছাড়া কোথাও কোথাও গ্যাসের চাপ শূন্যে নেমে যেতে পারে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আগামীকাল (শনিবার) ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান। শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। ড. ইউনূস বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করে। তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, শহীদুল্লাহ কায়সার, গিয়াসউদ্দিন, ডা. ফজলে রাব্বি, আবদুল আলীম চৌধুরী, সিরাজউদ্দীন হোসেন, সেলিনা পারভীন, ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতাসহ আরও অনেকে। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়।শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সিরাতুন্নবী (সা.) মানবজাতির জন্য একটি বিশ্বজনীন বার্তা: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সিরাতুন্নবী (সা.) মানবজাতির জন্য একটি বিশ্বজনীন বার্তা। রাসুল (সা) এর জীবনাদর্শ কেবল মুসলমানদের জন্য নয়, বরং সকল মানুষের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। তাঁর জীবনচর্চা সকল যুগ, সমাজ ও মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা দেয়।আজ (শুক্রবার) সকালে লন্ডনের ইস্ট মসজিদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে টিভি ওয়ান আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সিরাতুন্নবী (সা.) কেবল একটি জীবনী নয়, এটি অনন্য এক জীবনধারা। এটি পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য সিরাতুন্নবী (সা.) এর গুরুত্ব অপরিহার্য। তাঁর জীবনী অধ্যয়ন ও অনুসরণের মাধ্যমেই জীবনের প্রকৃত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, রাসুল (সা) সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ ও জাতি-বর্ণের মধ্যে সমানাধিকারের নীতি প্রবর্তন করেন। তিনি মদিনায় হিজরতের পর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরকে নিয়ে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এ রাষ্ট্রে সংবিধান প্রণয়ন, আইন প্রয়োগ এবং নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করেন।ড. খালিদ বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা) এর রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি আজকের দিনেও অনুকরণীয়। তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শ ও শান্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেও অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন।ব্রিটেনের প্রবীণ আলেম মাওলানা আসগর হোসেনের সভাপতিত্বে এ কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে মাওলানা আবদুল কাইউম, মাওলানা আবদুর রহমান মাদানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা শাহ মিজান ও টিভি ওয়ানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার রিজওয়ান বক্তব্য প্রদান করেন।
কবি হেলাল হাফিজ আর নেই
মারা গেছেন দেশের খ্যাতিমান কবি হেলাল হাফিজ। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। প্রতিভাবান কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি। দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে। ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
দ্রুতই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনের গেজেট হবে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
দ্রুতই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই এই গেজেট হবে। গেজেটে আইন প্রয়োগে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হবে। শুক্রবার সকালে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি ও গাড়িচালকদের পুনঃপ্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, হর্নের শব্দে সচিবালয়ে কাজ করা দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা একটি নরকে পরিণত হচ্ছে। হর্নের যন্ত্রণায় মানুষ বিকার গ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। শব্দ দূষণের কারণে একটা অস্থির প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। রাজধানীতে যতগুলো সোসাইটি আছে পর্যায়ক্রমে সবাইকে এ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। বিদেশে হর্ন বাজানো মানে গালি দেওয়া। গবেষণা বলছে, যানবাহনের হর্ন, নির্মাণকাজ, শিল্পাঞ্চলের মেশিন এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে মাইক্রোফোনের অপব্যবহারের ফলে দেশে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, মানসিক চাপ, বধিরতা বাড়ছে। এমনকি শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। সচেতন নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরেই এটি নিয়ন্ত্রণে আইনের প্রয়োগের দাবি জানিয়ে আসছেন। আর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথা বলছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের আকাশে যে মেঘ এসেছিল, দুদেশের স্বার্থেই সে মেঘ সরাতে হয়েছে।’ দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঠিক রাখতে গিয়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানকে অস্বীকার করার উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বেশ কদিন ধরেই ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি। দলটি বলছে, রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসে বাকি সংস্কার করবে। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। বলেন, রাজনৈতিক দল ছাড়া যদি সংস্কার সম্ভব না হয়, তাহলে গত ৫৩ বছরে কেন সংস্কার হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোকে এই জবাবটা দিতে হবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড: কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দাবি
পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলার পুনঃতদন্ত, কারাবন্দি তৎকালীন বিডিআর (বিজিবি) সদস্যদের মুক্তি, মামলার সব রায় বাতিলসহ আটটি দাবি জানানো হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় ‘কারা নির্যাতিত বিডিআর পরিবার’ নামে একটি সংগঠন। নির্যাতিত বিডিআর পরিবারের সদস্যরা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনার নিজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। কারাবন্দিদের সাজা শেষ হলেও বিনা বিচারে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিচারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ঢালাওভাবে আসামি করায় নির্দোষ ব্যক্তিরাও আজ কারাবন্দি।এ সময় অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। ২৭৬ জনের হত্যা মামলায় জামিন পেলেও বিস্ফোরক আইনের মামলায় আটকে আছে সবাই।’আট দাবি হলো:> প্রহসনমূলক মামলা প্রত্যাহার ও রায় বাতিল করা> ১৬ বছর যাবৎ কারাগারে বন্দি নির্দোষ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি> মামলার পুনঃতদন্ত করা> রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে বিডিআর সদস্যদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন ও দোষীদের শাস্তির প্রদান> বিডিআর সদস্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়া> ক্ষতিগ্রস্ত সেনা ও বিডিআর সদস্যদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পূর্নবাসন করা> পুনরায় বাংলাদেশ রাইফেলস নামকরণ করা> ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করা