ভারত-পাকিস্তানের কিছু ইস্যুর কারণে সার্ক সক্রিয় হচ্ছে না: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘সার্ক আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপর সার্ককে সক্রিয় করার বিষয়ে বলেছি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার কিছু ইস্যুর কারণে সার্ক সক্রিয় হচ্ছে না।’ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন অনকোলজির (এসএফও) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন প্রধান। বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত হন তিনি। এ সময় মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, দুইটি দেশের মধ্যকার সমস্যা দ্বারা অন্য দেশগুলোকে প্রভাবিত করা উচিত নয়। প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা যদি সাক্ষাৎ করেন, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন, তাহলে গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা যায় যে, আমরা একসঙ্গে আছি। এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করবে এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’ এ সময় তিনি সার্ক ফেডারেশন অব অঙ্কোলজিস্টসের (এসএফও) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডাক্তার এবিএমএফ করিমের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। এ সময় নিজের ছোট ভাই, লেখক, সাংবাদিক, সমালোচক ও খ্যাতনামা টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। ভাইয়ের ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসার সময় তার পুরো পরিবারকে কী ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল, সেসব অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। সে সময় ডাক্তার করিম কীভাবে তার চিকিৎসায় সাহায্য করেছিলেন, সেকথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসায় যে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন, তা এখনো আমরা পাচ্ছি না। সার্ক যে ক্যানসার চিকিৎসাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে, এটা অত্যন্ত জরুরি ও অনুপ্রেরণামূলক।’ আজকের কনফারেন্সে সার্ককে সক্রিয় করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে ফের আহ্বান জানান মুহাম্মদ ইউনূস।

জাহিদ-পলক-আজমের বিরুদ্ধে ১৫৫ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা

প্রায় ১৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক ও তার ছেলে, সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী এবং সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক ছয় মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পৃথক পৃথক মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। দুদক পরিচালক আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় জাহিদ মালিকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ও তার ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য দিকে, জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা দুই মামলায় ৭২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাহিদ মালেক ও তার ছেলে, জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী এবং মির্জা আজম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলার অনুমোদন দিয়েছিল দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নতুন নিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে প্রথম সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

জাহিদ-পলক-আজমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার অনুমোদন

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার ছেলে, সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি পলক ও তার স্ত্রী এবং সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম। দুদকের নতুন নিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পাঁচ সাংসদ ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। তারা হলেন ফেনী-১ আসনের সাবেক সাংসদ আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সাংসদ নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আবু জাহির, নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সাংসদ এইচএম ইব্রাহিম ও লক্ষীপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। অনুমোদিত সিদ্ধান্তে একই সঙ্গে তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকল্পে অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাতসহ দেশে বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক পাঁচ সাংসদ ও তাদের পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পাঁচ সাংসদ ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের নতুন নিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই যা আদালতে পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এ সভায় হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে বিদেশ যাত্রার নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন ফেনী-১ আসনের সাবেক সাংসদ আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সাংসদ নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আবু জাহির, নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সাংসদ এইচএম ইব্রাহিম ও লক্ষীপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। অনুমোদিত সিদ্ধান্তে একই সঙ্গে তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকল্পে অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাতসহ দেশে বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে।

র‌্যাব আর কারও নির্দেশে গুম-খুনে জড়াবে না : মহাপরিচালক

কারও নির্দেশে র‍্যাব আর গুম, খুনে জড়াবে না বলে জানিয়েছেন এলিট ফোর্সটির মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি বলেন, আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করব ততদিন র‍্যাব গুম, খুনে জড়িত হবে না এমন নিশ্চয়তা দিচ্ছি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শহিদুর রহমান। র‌্যাবের নেতিবাচক কাজের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে এলিট ফোর্সটির মহাপরিচালক বলেন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের কিছু অভিযোগ আছে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ সেসব বিষয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। সবকিছু সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হতে চাই। কারও নির্দেশে এসব অপরাধে র‍্যাব আর জড়িত হবে না, সেটি আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি। শহিদুর রহমান আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন হয়েছে, তবে প্রত্যাশিত জায়গা এখনও যায়নি। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র‍্যাব তার দায়িত্ব আন্তরিকতা সঙ্গে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবে। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে র‍্যাবের ১৬ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের ডিজি। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটে। পরে র‍্যাবের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। এ কাজ করতে গিয়ে র‍্যাবের ১৬ জন সদস্য বিভিন্ন অপরাধে সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তারা চাঁদাবাজি, মাদক ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অপরাধের কারণে এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চলছে। র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্রোহ, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে র‍্যাব।

বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক

গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে র‍্যাবের ১৬ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। পরে র‍্যাবের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। এ কাজ করতে গিয়ে র‍্যাবের ১৬ জন সদস্য বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‍্যাবের ৫৮ জন কর্মকর্তা ও ৪ হাজার ২৪৬ সদস্যকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্রোহ, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে র‍্যাব। তিনি আরও বলেন, আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করবো ততদিন র‍্যাব গুম, খুনে জড়িত হবে না বলে নিশ্চয়তা দিচ্ছি।

মতিঝিলে হোটেল থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

রাজধানীর মতিঝিলে একটি আবাসিক হোটেল থেকে হাসানুজ্জামান চৌধুরী (৫২) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানায় পুলিশ। এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে খবর পেয়ে আবাসিক হোটেল পারাবতের ৯০৫ নম্বর রুম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, ওই ব্যক্তির বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ানা উপজেলার বৈরাগ গ্রামে। তিনি মাঝে মধ্যে ঢাকা আসতেন। গত ১১ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা এসে ওই হোটেলের ৯০৫ নম্বর রুমে উঠেন তিনি। গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে ফোন কলে না পেয়ে থানায় খবর দেওয়া হয়। পরে হোটেলে গিয়ে রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে অচেতন অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওসি জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর বড় অংশজুড়ে থাকবে না গ্যাস

জিটিসিএলের আমিনবাজার সিজিএস-এ মোডিফিকেশন কাজের জন্য শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার কিছু এলাকাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই বার্তায় বলা হয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা তিতাস গ্যাস অধিভুক্ত সমগ্র সাভার, আমিনবাজার ও হেমায়েতপুর এবং ঢাকা মহানগরীর সমগ্র মিরপুর এলাকা, মিরপুর রোডের উভয় পাশের এলাকা, শ্যামলী, আদাবর, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীর চর, কেরাণীগঞ্জ (খোলামোড়া হতে কলাতিয়া, হযরতপুর পর্যন্ত), হাতিরপুল, ফার্মগেট, আজিমপুর, নিউমার্কেট, লালবাগ, শাহবাগ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। কোথাও কোথাও গ্যাসের চাপ শূন্যে নেমে যেতে পারে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

দু-এক দিনের মধ্যেই আসছে প্রথম শৈত্যপ্রবাহ

মধ্য ডিসেম্বরে এসে দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা কমে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে কাঁপন ধরিয়েছে শীত। দু-এক দিনের মধ্যেই বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। ফলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর, যা চলতি মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সকালে গণমাধ্যমে জানান, আগামী ১৬ তারিখ থেকে কুয়াশা আরও বাড়বে। শাহানাজ সুলতানা আরও বলেন, ঘন কুয়াশা থাকবে অন্তত আরও এক সপ্তাহ। দু-একদিনের মধ্যেই বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। এ কয়দিন সূর্যের দেখা পেতে পেতে দুপুর হবে এবং আজ থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, এখনও দেশে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও দু–এক দিনেই হবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সূর্য না উঠলে শীতের অনুভব বেশি হবে। বঙ্গোপসাগরের সুস্পষ্ট লঘুচপের প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস এ মাসে একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে উত্তরবঙ্গে। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিরাজমান লঘুচাপটি বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এমন অবস্থায় সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিকে চুয়াডাঙ্গায় বৃহস্পতিবার সকালে সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে কনকনে হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন।

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের দখলে সীমান্ত এলাকা, বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে?

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এলাকা এখন তাদের দখলে। এর পরেই নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা, যা বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন— এই পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকটকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে এবং সীমান্তে অনুপ্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র ইউ খাইং থু খা বলেছেন, তারা ইতোমধ্যে পশ্চিমের জান্তা বাহিনীর কমান্ড হেডকোয়ার্টার দখল করেছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখাইন রাজ্যের পুরো এলাকা নিতে যুদ্ধ চালাচ্ছে। আরাকান আর্মি এও ঘোষণা করেছে, তারা মিয়ানমারের অংশ নাফ নদীর মিয়ানমার সীমান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ ঘোষণা দেওয়ার পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নৌ চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিজিবির টহলও বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, ‘সীমান্তের ওপার বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে, তাই আমরা সীমান্তে কঠোর সতর্কতা বজায় রেখেছি যাতে কোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে।’ এদিকে, প্রায় আট মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত থাকা আরাকান আর্মি, সীমান্ত এলাকা মংডু, বুথিডং এবং পালেতাওয়া দখল করার দাবি করেছে। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষআরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের পশ্চিম অঞ্চলের ব্যাটেলিয়ান সদর দফতর এবং সীমান্ত চৌকিগুলো দখল করেছে। তারা জান্তা বাহিনীর ৫ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নকে দখলে নেওয়ার পর সামরিক হামলা প্রতিহত করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর, আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা রাখাইন রাজ্যের ৩০টিরও বেশি জান্তা ক্যাম্প দখল করেছে। এছাড়া, ২৮ নভেম্বর এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি জানায়, মাগোয়ে অঞ্চলের সামরিক বাহিনীর একটি বহরে হামলা চালাতে গিয়ে তাদের ১০০ সৈন্য নিহত হয়েছে। তারা এই সময় সশস্ত্র বাহিনীর সাপোর্ট ও রসদ সরবরাহের পথেও হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আরাকান আর্মির এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, বিবিসি বার্মিজের খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরিন তুনকে আটক করা হয়েছে। নাফ নদীতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সীমান্তে সতর্কতাআরাকান আর্মি তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষণা করেছে, মংডু শহর এবং আশপাশের এলাকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে, নিরাপত্তার জন্য নাফ নদীর মিয়ানমারের অংশে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সাথে, বাংলাদেশ সীমান্তের নাফ নদী এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে এবং সেখানে ছোট নৌকাগুলোর চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে স্থানীয় সাংবাদিক আজিম নিহাদ জানান, ‘সীমান্তে আরাকান আর্মির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের খবর আসার পর, গত দুই দিন ধরে টেকনাফ ও কক্সবাজারসহ বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে।’ জেলা প্রশাসন মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করছে এবং বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সীমান্তে যাতায়াত বন্ধ রাখার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে।’ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কাআরাকান আর্মির রাখাইন রাজ্যের পুরো অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন— যেহেতু এই অঞ্চলটি আরাকান আর্মির দখলে, রোহিঙ্গা ইস্যু আরো বেশি জটিল হয়ে উঠতে পারে। মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে রোহিঙ্গারা জান্তা বাহিনীর পক্ষ নিয়ে থাকায় এই সংকট আরো বাড়বে।’ বিশ্লেষকদের মতে— আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত সশস্ত্র রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তারা মনে করছেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এই অস্থিরতা বাংলাদেশের মিয়ানমারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে এই নতুন অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে নরওয়ে : রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নরওয়ের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্রানসেন আজ বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত আজ সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে দুই দেশ তাদের মধ্যকার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ধীরে ধীরে উন্নয়ন সহযোগিতা থেকে বাণিজ্য কেন্দ্রিক অংশীদারিত্বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশে টেলিনরের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন এবং ভবিষ্যতে আরো বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের আশা প্রকাশ করেন। দুই দেশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নরওয়ের সমর্থনকে স্বাগত জানান। তিনি বর্তমান সরকারের সংস্কার উদ্যোগ বিশেষ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, শাসন ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে জোর দেন। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গুরুত্ব বিবেচনা করে উপদেষ্টা কার্যকর ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’সহ একটি সুন্দর ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সরকারের চলমান প্রচেষ্টার আলোকে বাংলাদেশে আরও বেশি নরওয়েজিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত উল্লেখ করেন এবং আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং ইলেক্ট্রনিক্সসহ সম্ভাব্য অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। মানবাধিকার ইস্যুতে উপদেষ্টা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি ও আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন। পরারাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে জানান বাংলাদেশ গত আগস্টে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ ও সুরক্ষা সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে এবং সদ্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জাপানের

বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, জাপান সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক— এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে। কিমিনোরি বলেন, ‘আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’ তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে টোকিওর ‘দৃঢ় সমর্থনের’ কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সম্পর্ক সবসময় খুব শক্তিশালী ছিল।’ সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে জাপানি কোন কোম্পানিও চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী।’ তিনি নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে তাদের বাড়িতে ফেরার পূর্বে সাময়িকভাবে পুনর্বাসিত করা যেতে পারে। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

পোশাক খাতের অস্থিরতায় পতিত সরকার ও তাদের বন্ধুরাষ্ট্র: এম সাখাওয়াত

পতিত সরকার ও তাদের বন্ধুরাষ্ট্র মিলে পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা কার্যকম নিয়ে আয়োজিত ‘নাগরিক উৎসব’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এম সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, ‘শ্রমিকরা সমস্যা তৈরি করছেন না, তাদের দিয়ে সমস্যা তৈরি করানো হচ্ছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। যারা দেশের বাইরে থেকে অস্থিরতা তৈরিতে ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশ থেকে ভোটের উৎসব চলে গেছে। তখন দেখেছি, লম্বা লম্বা লাইন। নারীরা ঠাণ্ডার মধ্যে সুন্দর কাপড় পরে বেরিয়ে এসেছে। এরপর আর মহিলাদের উপস্থিতিই দেখি নাই। গণ্ডগোল যদি হয়, আমাদের মহিলারা যায় না, যেখানে আমাদের ৫১ শতাংশ মহিলা ভোটার। এখানে অনেক তরুণ আছে, আমার মনে হয় তারা ভোট দেয়ও নাই। ভোটকেন্দ্র কী জিনিস ওরা তা দেখেও নাই, যায়ও নাই।’ সুজন সম্পাদক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সবাই চায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসুক। আশা করছি, ১৭ ডিসেম্বর আদালতের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসবে। এটা যাতে আর কখনো বাতিল না হয়, সে জন্য সবাইকে ‘ওয়াচ ডগের ভূমিকা’ পালন করতে হবে।”

পরিবেশ সুরক্ষায় ৪০ শতাংশ অক্সিজেন পাওয়া যায় পার্বত্য ৩ জেলা থেকে : পার্বত্য উপদেষ্টা

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় ৪০ শতাংশ অক্সিজেন পাওয়া যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা থেকে। এর মধ্যে আমাদের খাদ্য পাওয়া যায় ২২ শতাংশ গাছপালা থেকে। বাকি ৭৮ ভাগ গাছপালা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। আজ বুধবার রাজধানীর বেইলী রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স সেমিনার হলে আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা এ কথা বলেন। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, নিজেদের গুণগত মান, দক্ষতা ও ক্ষমতায়ন বাড়ানোসহ উদ্ভাবনী শক্তিতে পারদর্শী হওয়ার জন্য পার্বত্যবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বাঁশ খুবই কার্যকরী উপাদান। বাঁশকে কৃষিজ সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় কি না তা দেখা উচিত। তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারে আমাদের আরও যত্নশীল হতে হবে। নদী-নালার পানি সঠিক পদ্ধতিতে ধরে রাখা ও ব্যবহারে আরও উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া বের করা দরকার। আমাদেরকে পরিবেশ রক্ষায় খুব বেশি সচেতন হতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক পার্বত্য দিবসের উপর বক্তব্য রাখেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা) সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রিপন চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই।

বিসিএসে আবেদন ফি ২০০ টাকা, কমল মৌখিক পরীক্ষার নম্বরও

বিসিএস পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোর পাশাপাশি ভাইভায় নম্বর কমিয়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বিধিমালা-২০১৪ সংশোধন করেছে সরকার। এর মাধ্যমে বিসিএসে আবেদনে ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘অনগ্রসর’ জনগোষ্ঠীর জন্য ফি ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। আর বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিসিএসে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪’-এর বিধি ৯’-এর উপবিধি ৪ (ক) সংশোধন করে সাধারণ প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত ৭০০ টাকা আবেদন ফি ২০০ টাকা করা হয়েছে। বিধি ৯’-এর উপবিধি ৪ (খ) সংশোধন করে ‘অনাগ্রসর’ জনগোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত ১০০ টাকা ফি ৫০ টাকা করা হয়েছে। বিধি ১৪’-এর উপবিধি (১) সংশোধন করে বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছরকে ৩২ বছর করা হয়েছে। এই বিধির উপবিধি (২) ও (৩) বাতিল করা হয়েছে। আর বিধি ১৮ সংশোধন করে বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০’-এর বদলে ১০০ করা হয়েছে এবং মোট নম্বর এক হাজার ১০০ পরিবর্তন করে ১০০০ করা হয়েছে।’ এসব সংশোধনী গেল ২৭ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। সবশেষ গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই দাবির মুখে বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করে সরকার। গেল ১৮ নভেম্বর বয়স বাড়ানোর অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সেখানে সরকারির পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানসিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে একই বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়। অপর দিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নতুন সরকারি কর্ম কমিশন বিসিএসে আবেদন ফি কমানোর পাশাপাশি ভাইভায় নম্বর কমানোর প্রস্তাব করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। এরপর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বিধিমালা-২০১৪ সংশোধনের মাধ্যমে আবেদন ফি ২০০ টাকা আর ভাইভায় নম্বর ১০০ নির্ধারণ করা হল। ৪৭তম বিসিএস থেকেই এই আবেদন ফি ও বয়সসীমা কার্যকর হবে।

শ্রমিক অসন্তোষেও আওয়ামী লীগের হাত দেখছেন শ্রম উপদেষ্টা

বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনেও আওয়ামী লীগের হাত দেখছেন শ্রম উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে শ্রম উপদেষ্টা দাবি করেন, পতিত সরকারের লোকজন পোশাক খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। সরকার ঘোষিত বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট চার শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাখান করে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন আশুলিয়ার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। অব্যাহত শ্রমিক আন্দোলন ও কর্মবিরতির মুখে সোমবার (৯ি ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে আশুলিয়ার অন্তত ১২টি কারখানা। শিল্প পুলিশ বলছে, ‘শ্রমিকরা কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে না। তবে, বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছে।’ অনুষ্ঠানে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘একটা সরকার যেহতু পতিত হয়েছে, তারাও এর সাথে জড়িত হয়ে, তাদের বন্ধুরাষ্ট্রের সাথে জড়িত হয়ে কিছু সমস্যা তৈরি করছে।’ দেশের পোশাক খাতকে টার্গেট করে করা ষড়যন্ত্রে শ্রমিকরা না বুঝেই জড়িয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য উপদেষ্টার। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কিছু সমস্যা আমাদের ওয়ার্কাররা না বুঝে করছে। কোন কিছু নিয়ে একটা অ্যাগ্রিমেন্ট হলে পরে আবার বলে যে না এটা মানি না। কয়েক দিন আগেই একটা করলাম, নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিয়ে। রাজি হল। আজকে শুনলাম যে না নয় শতাংশ হবে না, ১৫ শতাংশ লাগবে।’ ‘স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের’ লোকজনের ৫ আগস্ট পরবর্তী অপতৎপরতা রুখতে দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে বলে তাগিদ দেন শ্রম উপদেষ্টা।

বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে দুর্নীতির সুযোগ দেয়াই ছিল গত সরকারের লক্ষ্য: ফাওজুল কবির

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। তিনি বলেছেন, ‘টেকসই উন্নয়নের পথে না হেঁটে উল্টো বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়াই গত সরকারের মূল্য লক্ষ্য ছিল বলে মনে হচ্ছে।’ ‘তবে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়া ওইসব পদ্ধতি বন্ধ করে দিয়ে টেকসই বিদ্যুৎ নীতিমালার পথে অগ্রসর হচ্ছে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশনে ‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ শীর্ষক সম্মেলনে ফাওজুল কবির এসব কথা বলেন। বুধবার তিন দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে, শেষ হবে আগামী শুক্রবার। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বিদ্যুতের ট্যারিফ ঠিক করতে জ্বালানি নিয়ন্ত্রক কমিশনকে (বিইআরসি) পুনর্গঠন করেছি আমরা। একইসঙ্গে সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধনে কাজ করছি। নবায়নযোগ্য শক্তি নীতিমালা পর্যালোচনা করে দেখছি। স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদকদের (আইপিপি) কাছ থেকেও সরে আসছি।’ উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েল (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম, রহিম আফরোজ নবায়নযোগ্য শক্তি লিমিটেডের (আরআরইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট ফর ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিএমডিডি) সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল।

ভারত থেকে প্রিন্ট হয়ে আসছে মেট্রোরেলের নয়া টিকিট

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেলের একক যাত্রার টিকিট সংকট দূর করতে চার লক্ষ নতুন টিকিট কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। জাপান, থাইল্যান্ড ও ভারত যৌথভাবে এসব টিকিট সরবরাহ করে থাকে। টিকিটের মূল জোগানদাতা জাপান। তবে, কার্ডগুলো প্রিন্ট হয় ভারত থেকে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ২০ হাজার টিকিট ভারত থেকে প্রিন্ট হয়ে আসবে। বাকি টিকিটগুলো ধাপে ধাপে আসবে। সংবাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, ‘১৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার টিকিটের একটি চালান ভারত থেকে রওনা হবে। এগুলো পৌঁছাবে মাসের শেষ দিকে। কার্ডগুলো ট্রেনে আসছে। এ জন্য কিছুটা সময় লাগছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সেগুলো আমরা হাতে পাব। পর্যায়ক্রমে আমাদের হাতে সবগুলো কার্ড পৌঁছাবে।’ তিনি বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার একক যাত্রার টিকিট হলে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলে। কিন্তু, এই মুহূর্তে আছে ৪০ হাজার কার্ড। তাই, সংকট তৈরি হয়েছে। মানুষজন নিয়ে গেছে। কিছু কার্ড টেকনিক্যাল কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কার্ড গ্রাহকরা হারিয়েছে।’ আবদুর রউফ আরো বলেন, ‘কার্ডের ডিজাইন নিয়েও একটা আলোচনা ছিল। নতুন ডিজাইনের কার্ড থাকছে না। আগের ডিজাইনেই মেট্রো কার্ড হচ্ছে, কালারটার শুধু বদলাচ্ছে। আর একক যাত্রার কার্ডের রং লাল করে দিচ্ছি, যেন সহজে আইডেন্টিফাই করা যায়।’ ঢাকায় মেট্রো রেলের যাত্রীদের জন্য দুই ধরনের টিকিট ইস্যু করা হয়। একটি এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস, অন্যটি একক যাত্রার টিকিট। যাত্রী র‍্যাপিড পাস কেনার পর টাকা না ফুরানো পর্যন্ত তা ব্যবহার করতে পারেন, কার্ডটি নিজের কাছে রাখতে পারেন। একক যাত্রার যাত্রীরা স্টেশন থেকে তাৎক্ষণিক টিকিট কিনে যাত্রা করতে পারেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় সেই টিকিট ফেরত দেয়া বাধ্যতামূলক।

সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করা হয়েছে। এটি হচ্ছে দেশের একমাত্র উপকূলীয় নদীবন্দর। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপকূলীয় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ওই প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এদিকে একই দিনে পৃথক গেজেটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) সন্দ্বীপ উপকূলীয় নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নদীবন্দরের চারদিকের সীমানার অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ উল্লেখ করা হয়। ভূ-ভাগের সীমানার বর্ণনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সন্দ্বীপ দ্বীপের চারপাশের তীরের সাধারণ ভরাকটালের সময় সর্বোচ্চ পানি সমতল থেকে ভূ-ভাগের দিকে ৫০ মিটার পর্যন্ত এর সীমানা বিস্তৃত। সন্দ্বীপ উপকূলীয় এলাকার ওই সীমানার মধ্যে খালগুলো নদীবন্দরের সীমানার আওতাভুক্ত হবে। এ নিয়ে নদীবন্দরের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৪টিতে। এর মধ্যে ৪টি বড় নদী বন্দর হচ্ছে ঢাকা (সদরঘাট), নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশাল। এছাড়া দেশের কন্টেইনার টার্মিনাল নদীবন্দর হচ্ছে ঢাকার পানগাঁও।

বিজয় দিবসে যেসব কর্মসূচি পালন করবে সরকার

যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস-২০২৪ উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা আলোকসজ্জায় সজ্জিত হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা বাণী দেবেন।দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন বিভিন্ন সংবাদপত্র বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। এছাড়াও, দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা (চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের) আয়োজন করা হয়েছে। শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হবে। বিকালে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারগুলোকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। এছাড়াও, সিটি, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাদ্য দেয়া হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করব: দুদকের নতুন চেয়ারম্যান

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারব, সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া ঠিক হবে না। আমরা যেন সাধ্যমত কাজ করতে পারি, সেটি দেখতে হবে। ন্যায়নিষ্ঠভাবে আমরা আইন মেনে কাজ করব।’ নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রথম দিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিকাল তিনটার পর আবদুল মোমেন ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির অন্য কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তার সঙ্গে কমিশন ভবনে ঢুকেন দুদকে নিয়োগ পাওয়া নতুন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রসঙ্গে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি তিনটি রাজনৈতিক সরকার ও দুইটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে কাজ করেছি। এই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্য রাজনৈতিক দলের মত কোন রাজনৈতিক চরিত্র নেই। রাজনৈতিক চাওয়া নেই। এই সরকারের চাওয়া হচ্ছে জনগণকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে রাজনৈতিক সরকার প্রভাবিত করবে না। আমরাও প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাব।’ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমাজ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, দুদকও খানিকটা দুর্নীতিগ্রস্ত হতেও পারে। আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে, সেটিও আপনারা দেখবেন। যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ন্যায়নিষ্ঠভাবে আপনারা দেখবেন।’ আগামী সাত দিনের মধ্যে নতুন কমিশনের স্থাবর, অস্থাবর আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হবে বলে জানান নতুন চেয়ারম্যান। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে। কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গী হয়েছেন মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ২৯ অক্টোবর দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন পদত্যাগ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা নাহিদ

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে জনগণের মধ্যে এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সে দল যদি সফল হয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যাবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। এ সময় চিলির সাবেক সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী জর্জিও জ্যাকসন সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো চাইছে, দেশের সংস্কার তাদের (রাজনৈতিক সরকার) অধীনেই হোক। তাই, তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।’ সাক্ষাৎকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দায়িত্ব নিয়েছে। এটি একটি অভিনব ঘটনা, যা এর আগে কখনো ঘটেনি। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। আমরা এ রকম পরিস্থিতিতে কাজ করার চেষ্টা করছি।’ স্কটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য লর্ড জেরিমাই পুরভিস অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া, বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ স্থাপন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।’ ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মাট চার্টার অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কাছে কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা চায়, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং গণহত্যার বিচার বিষয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ আন্তর্জাতিকভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই ঠিক মত ব্যাখ্যা করতে পারছেন না। কীভাবে এত অল্প সময় এত বড় এক স্বৈরশাসকের পতন হল, তা মানুষও বুঝতে পারছে না। ফলে, দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ আন্দোলনটা যে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান, তা অনেকেই অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন ধরে মানবাধিকার সংকট চলছে। মানুষ ভোট দিতে পারত না। কয়েক হাজার মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ছিল। তাই, মানবাধিকার রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।’ বৈঠকে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

ব্যয় সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন জ্বালানি নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার

জ্বালানি সেক্টরকে টেকসই করতে এবং ব্যয় সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন জ্বালানি নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘এ লক্ষ্যে সরকারের প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও আইনি কাঠামো নেবে। এক্ষেত্রে, জনগণের মতামত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। জ্বালানি সেক্টরের সংশোধিত কর্মপরিকল্পনায় জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ শক্তি সমৃদ্ধি ২০৫০’ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, বিদ্যুৎ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সরকার কাজ করছে। বিদ্যমান চুক্তিগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও সেগুলো বাতিল করা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। তাই, পরিকল্পনা করে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এনার্জি সাশ্রয়ে ভবনের ডিজাইন যুগোপযোগী করতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমিতে বৃক্ষরোপণ করা যেতে পারে।’ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ তামিম, রহিম আফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের (আরআরইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, ব্রাইট গ্রীন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন। সম্মেলনে সরকারি কর্মকর্তা, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। আলোচনায় জ্বালানি সংকট মোকাবিলা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ও দক্ষ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বেচ্ছায় সরে গেলে সাধারণ ক্ষমা

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা সনদ বাতিল করে সরে গেলে সাধারণ ক্ষমা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বহু অভিযোগ আছে যে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অনেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়েছেন, গেজেটভুক্ত হয়েছেন ও সুবিধাদি নিচ্ছেন। আমার দৃষ্টিতে এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছোটখাটো অপরাধ নয়, অনেক বড় অপরাধ।’ ১২ বছর ছয় মাস বয়সী দুই হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করার পর এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আদালতের কাছ থেকে যখন এই বিষয়টি নির্ণিত হবে, তখন তাদের বাতিল করবই। এটার প্রয়োজনীয় সাজার জন্য আমরা ব্যবস্থা করব। এরা যাতে শাস্তি ভোগ করে। অন্য যেসব মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন, আমরা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করতে পারলে, তাদের ক্ষেত্রেও একই রকমের ঘটনা ও বিষয় হবে। তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাওয়া উচিত।’ ফারুক-ই-আজম আরো বলেন, ‘আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা এ বিষয়ে একটা কার্যকর ব্যবস্থায় যেতে পারবো। আমাদের নীল, তালিকা, লাল তালিকা, ভারতীয় তালিকা- অনেকগুলো তালিকা রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অনুরাগের বশে বা কারো আত্মীয়তার বশে বা অন্য কোন প্রলোভনে এখানে বহু মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে একটু সময় তো লাগবেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা, কোনভাবে যাতে তাদের মর্যাদা নষ্ট না হয়। সেটা অক্ষুন্ন রেখেই বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য দুুরুহ কাজ। প্রচেষ্টা রাখছি, আশা করছি, এক্ষেত্রেও সফলতা আসবে।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটা ইনডেমনিটিও হয়তো দেব, যারা অমুক্তিযোদ্ধা এভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এসেছেন, তারা যাতে স্বেচ্ছায় এখান থেকে চলে যান। যদি যান, তারা হয়তো তখন সাধারণ ক্ষমাও পেতে পারেন। আর যদি সেটা না হয়, আমরা যেটা বলেছি, প্রতারণার দায়ে আমরা তাদের অভিযুক্ত করব।’