শ্রমিক অসন্তোষেও আওয়ামী লীগের হাত দেখছেন শ্রম উপদেষ্টা

বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনেও আওয়ামী লীগের হাত দেখছেন শ্রম উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে শ্রম উপদেষ্টা দাবি করেন, পতিত সরকারের লোকজন পোশাক খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। সরকার ঘোষিত বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট চার শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাখান করে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন আশুলিয়ার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। অব্যাহত শ্রমিক আন্দোলন ও কর্মবিরতির মুখে সোমবার (৯ি ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে আশুলিয়ার অন্তত ১২টি কারখানা। শিল্প পুলিশ বলছে, ‘শ্রমিকরা কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে না। তবে, বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছে।’ অনুষ্ঠানে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘একটা সরকার যেহতু পতিত হয়েছে, তারাও এর সাথে জড়িত হয়ে, তাদের বন্ধুরাষ্ট্রের সাথে জড়িত হয়ে কিছু সমস্যা তৈরি করছে।’ দেশের পোশাক খাতকে টার্গেট করে করা ষড়যন্ত্রে শ্রমিকরা না বুঝেই জড়িয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য উপদেষ্টার। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কিছু সমস্যা আমাদের ওয়ার্কাররা না বুঝে করছে। কোন কিছু নিয়ে একটা অ্যাগ্রিমেন্ট হলে পরে আবার বলে যে না এটা মানি না। কয়েক দিন আগেই একটা করলাম, নয় শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিয়ে। রাজি হল। আজকে শুনলাম যে না নয় শতাংশ হবে না, ১৫ শতাংশ লাগবে।’ ‘স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের’ লোকজনের ৫ আগস্ট পরবর্তী অপতৎপরতা রুখতে দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে বলে তাগিদ দেন শ্রম উপদেষ্টা।

বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে দুর্নীতির সুযোগ দেয়াই ছিল গত সরকারের লক্ষ্য: ফাওজুল কবির

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। তিনি বলেছেন, ‘টেকসই উন্নয়নের পথে না হেঁটে উল্টো বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়াই গত সরকারের মূল্য লক্ষ্য ছিল বলে মনে হচ্ছে।’ ‘তবে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়া ওইসব পদ্ধতি বন্ধ করে দিয়ে টেকসই বিদ্যুৎ নীতিমালার পথে অগ্রসর হচ্ছে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশনে ‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ শীর্ষক সম্মেলনে ফাওজুল কবির এসব কথা বলেন। বুধবার তিন দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে, শেষ হবে আগামী শুক্রবার। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বিদ্যুতের ট্যারিফ ঠিক করতে জ্বালানি নিয়ন্ত্রক কমিশনকে (বিইআরসি) পুনর্গঠন করেছি আমরা। একইসঙ্গে সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধনে কাজ করছি। নবায়নযোগ্য শক্তি নীতিমালা পর্যালোচনা করে দেখছি। স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদকদের (আইপিপি) কাছ থেকেও সরে আসছি।’ উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েল (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম, রহিম আফরোজ নবায়নযোগ্য শক্তি লিমিটেডের (আরআরইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট ফর ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিএমডিডি) সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল।

ভারত থেকে প্রিন্ট হয়ে আসছে মেট্রোরেলের নয়া টিকিট

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেলের একক যাত্রার টিকিট সংকট দূর করতে চার লক্ষ নতুন টিকিট কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। জাপান, থাইল্যান্ড ও ভারত যৌথভাবে এসব টিকিট সরবরাহ করে থাকে। টিকিটের মূল জোগানদাতা জাপান। তবে, কার্ডগুলো প্রিন্ট হয় ভারত থেকে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ২০ হাজার টিকিট ভারত থেকে প্রিন্ট হয়ে আসবে। বাকি টিকিটগুলো ধাপে ধাপে আসবে। সংবাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, ‘১৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার টিকিটের একটি চালান ভারত থেকে রওনা হবে। এগুলো পৌঁছাবে মাসের শেষ দিকে। কার্ডগুলো ট্রেনে আসছে। এ জন্য কিছুটা সময় লাগছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সেগুলো আমরা হাতে পাব। পর্যায়ক্রমে আমাদের হাতে সবগুলো কার্ড পৌঁছাবে।’ তিনি বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার একক যাত্রার টিকিট হলে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলে। কিন্তু, এই মুহূর্তে আছে ৪০ হাজার কার্ড। তাই, সংকট তৈরি হয়েছে। মানুষজন নিয়ে গেছে। কিছু কার্ড টেকনিক্যাল কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কার্ড গ্রাহকরা হারিয়েছে।’ আবদুর রউফ আরো বলেন, ‘কার্ডের ডিজাইন নিয়েও একটা আলোচনা ছিল। নতুন ডিজাইনের কার্ড থাকছে না। আগের ডিজাইনেই মেট্রো কার্ড হচ্ছে, কালারটার শুধু বদলাচ্ছে। আর একক যাত্রার কার্ডের রং লাল করে দিচ্ছি, যেন সহজে আইডেন্টিফাই করা যায়।’ ঢাকায় মেট্রো রেলের যাত্রীদের জন্য দুই ধরনের টিকিট ইস্যু করা হয়। একটি এমআরটি পাস বা র‍্যাপিড পাস, অন্যটি একক যাত্রার টিকিট। যাত্রী র‍্যাপিড পাস কেনার পর টাকা না ফুরানো পর্যন্ত তা ব্যবহার করতে পারেন, কার্ডটি নিজের কাছে রাখতে পারেন। একক যাত্রার যাত্রীরা স্টেশন থেকে তাৎক্ষণিক টিকিট কিনে যাত্রা করতে পারেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় সেই টিকিট ফেরত দেয়া বাধ্যতামূলক।

সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করা হয়েছে। এটি হচ্ছে দেশের একমাত্র উপকূলীয় নদীবন্দর। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপকূলীয় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ওই প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এদিকে একই দিনে পৃথক গেজেটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) সন্দ্বীপ উপকূলীয় নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সন্দ্বীপকে নদীবন্দর ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নদীবন্দরের চারদিকের সীমানার অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ উল্লেখ করা হয়। ভূ-ভাগের সীমানার বর্ণনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সন্দ্বীপ দ্বীপের চারপাশের তীরের সাধারণ ভরাকটালের সময় সর্বোচ্চ পানি সমতল থেকে ভূ-ভাগের দিকে ৫০ মিটার পর্যন্ত এর সীমানা বিস্তৃত। সন্দ্বীপ উপকূলীয় এলাকার ওই সীমানার মধ্যে খালগুলো নদীবন্দরের সীমানার আওতাভুক্ত হবে। এ নিয়ে নদীবন্দরের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৪টিতে। এর মধ্যে ৪টি বড় নদী বন্দর হচ্ছে ঢাকা (সদরঘাট), নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশাল। এছাড়া দেশের কন্টেইনার টার্মিনাল নদীবন্দর হচ্ছে ঢাকার পানগাঁও।

বিজয় দিবসে যেসব কর্মসূচি পালন করবে সরকার

যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস-২০২৪ উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা আলোকসজ্জায় সজ্জিত হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা বাণী দেবেন।দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন বিভিন্ন সংবাদপত্র বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। এছাড়াও, দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা (চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের) আয়োজন করা হয়েছে। শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হবে। বিকালে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারগুলোকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। এছাড়াও, সিটি, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাদ্য দেয়া হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করব: দুদকের নতুন চেয়ারম্যান

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারব, সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া ঠিক হবে না। আমরা যেন সাধ্যমত কাজ করতে পারি, সেটি দেখতে হবে। ন্যায়নিষ্ঠভাবে আমরা আইন মেনে কাজ করব।’ নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রথম দিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিকাল তিনটার পর আবদুল মোমেন ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির অন্য কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তার সঙ্গে কমিশন ভবনে ঢুকেন দুদকে নিয়োগ পাওয়া নতুন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রসঙ্গে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি তিনটি রাজনৈতিক সরকার ও দুইটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে কাজ করেছি। এই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্য রাজনৈতিক দলের মত কোন রাজনৈতিক চরিত্র নেই। রাজনৈতিক চাওয়া নেই। এই সরকারের চাওয়া হচ্ছে জনগণকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে রাজনৈতিক সরকার প্রভাবিত করবে না। আমরাও প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাব।’ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমাজ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, দুদকও খানিকটা দুর্নীতিগ্রস্ত হতেও পারে। আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে, সেটিও আপনারা দেখবেন। যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ন্যায়নিষ্ঠভাবে আপনারা দেখবেন।’ আগামী সাত দিনের মধ্যে নতুন কমিশনের স্থাবর, অস্থাবর আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হবে বলে জানান নতুন চেয়ারম্যান। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে। কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গী হয়েছেন মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ২৯ অক্টোবর দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন পদত্যাগ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা নাহিদ

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে জনগণের মধ্যে এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সে দল যদি সফল হয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যাবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। এ সময় চিলির সাবেক সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী জর্জিও জ্যাকসন সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো চাইছে, দেশের সংস্কার তাদের (রাজনৈতিক সরকার) অধীনেই হোক। তাই, তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।’ সাক্ষাৎকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দায়িত্ব নিয়েছে। এটি একটি অভিনব ঘটনা, যা এর আগে কখনো ঘটেনি। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। আমরা এ রকম পরিস্থিতিতে কাজ করার চেষ্টা করছি।’ স্কটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য লর্ড জেরিমাই পুরভিস অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া, বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ স্থাপন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।’ ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মাট চার্টার অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কাছে কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা চায়, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং গণহত্যার বিচার বিষয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ আন্তর্জাতিকভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই ঠিক মত ব্যাখ্যা করতে পারছেন না। কীভাবে এত অল্প সময় এত বড় এক স্বৈরশাসকের পতন হল, তা মানুষও বুঝতে পারছে না। ফলে, দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ আন্দোলনটা যে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান, তা অনেকেই অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন ধরে মানবাধিকার সংকট চলছে। মানুষ ভোট দিতে পারত না। কয়েক হাজার মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ছিল। তাই, মানবাধিকার রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।’ বৈঠকে ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্ন্যান্স (জিপিজি) প্রতিনিধি দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

ব্যয় সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন জ্বালানি নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার

জ্বালানি সেক্টরকে টেকসই করতে এবং ব্যয় সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন জ্বালানি নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘এ লক্ষ্যে সরকারের প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও আইনি কাঠামো নেবে। এক্ষেত্রে, জনগণের মতামত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। জ্বালানি সেক্টরের সংশোধিত কর্মপরিকল্পনায় জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ শক্তি সমৃদ্ধি ২০৫০’ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, বিদ্যুৎ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সরকার কাজ করছে। বিদ্যমান চুক্তিগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও সেগুলো বাতিল করা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। তাই, পরিকল্পনা করে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এনার্জি সাশ্রয়ে ভবনের ডিজাইন যুগোপযোগী করতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমিতে বৃক্ষরোপণ করা যেতে পারে।’ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ তামিম, রহিম আফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের (আরআরইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, ব্রাইট গ্রীন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন। সম্মেলনে সরকারি কর্মকর্তা, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। আলোচনায় জ্বালানি সংকট মোকাবিলা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ও দক্ষ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বেচ্ছায় সরে গেলে সাধারণ ক্ষমা

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা সনদ বাতিল করে সরে গেলে সাধারণ ক্ষমা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বহু অভিযোগ আছে যে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অনেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়েছেন, গেজেটভুক্ত হয়েছেন ও সুবিধাদি নিচ্ছেন। আমার দৃষ্টিতে এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছোটখাটো অপরাধ নয়, অনেক বড় অপরাধ।’ ১২ বছর ছয় মাস বয়সী দুই হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করার পর এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আদালতের কাছ থেকে যখন এই বিষয়টি নির্ণিত হবে, তখন তাদের বাতিল করবই। এটার প্রয়োজনীয় সাজার জন্য আমরা ব্যবস্থা করব। এরা যাতে শাস্তি ভোগ করে। অন্য যেসব মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন, আমরা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করতে পারলে, তাদের ক্ষেত্রেও একই রকমের ঘটনা ও বিষয় হবে। তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাওয়া উচিত।’ ফারুক-ই-আজম আরো বলেন, ‘আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা এ বিষয়ে একটা কার্যকর ব্যবস্থায় যেতে পারবো। আমাদের নীল, তালিকা, লাল তালিকা, ভারতীয় তালিকা- অনেকগুলো তালিকা রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অনুরাগের বশে বা কারো আত্মীয়তার বশে বা অন্য কোন প্রলোভনে এখানে বহু মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে একটু সময় তো লাগবেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা, কোনভাবে যাতে তাদের মর্যাদা নষ্ট না হয়। সেটা অক্ষুন্ন রেখেই বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য দুুরুহ কাজ। প্রচেষ্টা রাখছি, আশা করছি, এক্ষেত্রেও সফলতা আসবে।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটা ইনডেমনিটিও হয়তো দেব, যারা অমুক্তিযোদ্ধা এভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এসেছেন, তারা যাতে স্বেচ্ছায় এখান থেকে চলে যান। যদি যান, তারা হয়তো তখন সাধারণ ক্ষমাও পেতে পারেন। আর যদি সেটা না হয়, আমরা যেটা বলেছি, প্রতারণার দায়ে আমরা তাদের অভিযুক্ত করব।’

কটন ডে উদযাপন করল মার্কিন দূতাবাস

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) ও সহযোগী সংগঠন কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের (সিসিআই) উদ্যোগে আয়োজিত কটন ডে ২০২৪ উদযাপন করেছে মার্কিন দূতাবাস। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) নবম বারের মত এ আয়োজন ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অনুষ্ঠিত হয়। এতে তুলা ও তৈরি পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা অংশ নেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবহার করে টেকসই পোশাক সরবরাহ চেইন নিয়ে আলোচনা করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোল্ডিন বলেন, ‘আমেরিকার তুলা চাষীরা উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের সেরা মানের তুলা উৎপাদন করেন। এই উৎকর্ষের প্রতি প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে যে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা সর্বোচ্চ মান ও টেকসই চাহিদা পূরণ করে, যা বৈশ্বিক টেক্সটাইল প্রস্তুতকারকদের জন্য পছন্দের উৎস।’ কটন ডে অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘ইউএস কটন ট্রাস্ট প্রোটোকল’। যুক্তরাষ্ট্রের তুলা শিল্পের ডিজাইন করা এই কর্মসূচি ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের জন্য সঠিক তথ্য ও টেকসইভাবে উৎপাদিত তুলা সরবরাহ করে। ইউএস কটন ট্রাস্ট প্রোটোকল এখন বাংলাদেশের ২০০’-এর বেশি সরবরাহকারী সদস্য এবং ৩০টির বেশি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে মানসম্পন্ন কাঁচামালের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন, যেখানে ২০২৩ সালে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার রপ্তানি মূল্য ছিল ৩৩৭ মিলিয়ন ডলার। অনুষ্ঠানে টেকসই চর্চার প্রচার, পোশাক শিল্পে সহযোগিতা এবং জ্ঞান বিনিময়ে সহায়তা করতে একত্রিত হয়েছিলেন তুলা স্পিনিং মিল, তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক, ব্র্যান্ড ও বাণিজ্য প্রতিনিধিরা। কটন ডে বাংলাদেশ ২০২৪ অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা ছিল। এতে টেকসই পোশাক সরবরাহ চেইনের ভবিষ্যৎ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি দেয়া হয়। আলোচনাগুলোতে টেকসই উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক টেক্সটাইল শিল্পে নিয়ম মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ৫৭৯ কর্তা

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মাঠ পর্যায়ের উপ-পরিচালক থেকে উপ-পরিদর্শক পর্যায়ের ৫৭৯ জন কর্মকর্তা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসাথে তাদের ৯ এমএম সিএম অটোমেটিক পিস্তল টি-৫৪ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা ২০২৪’ জারি করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ নীতিমালা জারি করা হয়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধকল্পে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নোডাল এজেন্সি হিসেবে কাজ করে। অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত জনবল নিয়মিত মাদক উদ্ধার অভিযান, মাদক চোরাকারবারিদের গ্রেফতার, মামলা তদন্ত ও পরিচালনার কাজে নিয়োজিত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করতে এবং অভিযানকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘অধিদপ্তরের বর্তমান মোট জনবল তিন হাজার ৫৯ জন। এর মধ্যে মহাপরিচালক একজন, পরিচালক চারজন, অতিরিক্ত পরিচালক নয়জন, উপ-পরিচালক ৯০ জন, সহকারী পরিচালক ৯৩ জন, পরিদর্শক ১৮৬ জন, উপ-পরিদর্শক ২১০ জন, সহকারী উপ-পরিদর্শক ২৮৫ জন ও ৯২৮ জন সিপাইসহ মোট এক হাজার ৮০৬ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী মাদক অপরাধ দমন কাজে জড়িত। এর মধ্যে মাঠ পর্যায়ে উপ-পরিচালক ৯০ জন, সহকারী পরিচালক ৯৩ জন, পরিদর্শক ১৮৬ জন, উপ-পরিদর্শক ২১০ জনসহ মোট ৫৭৯ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য (প্রাধিকার অনুযায়ী) অস্ত্র সংগ্রহ করা আবশ্যক।’

২০১৮ সালের মত নির্বাচন হলে আম-ছালা দুইটাই যাবে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘আগামীতে যদি ২০১৮ সালের মত নির্বাচন হয়, তাহলে আম ও ছালা দুইটাই যাবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি আশা করি, আগামীতে যে নির্বাচন হবে, তারা এটা থেকে শিক্ষা নেবেন। আর একই রকম নির্বাচন হলে আম ও ছালা দুইটাই যাবে। গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থা কিভাবে নষ্ট করতে হয়, তা নিয়ে পিএইচডি করার জন্য বাংলাদেশের বাইরে যেতে হবে না। বিগত তিনটি নির্বাচন স্টাডি করলেই হবে।’ ভোট যেন হাইজ্যাক হয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে ভোটারদের সচেতন থাকার আহ্বান জানান এ উপদেষ্টা।এ দিকে, নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কার কমিটিতে প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই পারে সেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে। আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের ব্যাপারেও আশাবাদী এই সংস্কার কমিশনের প্রধান।

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে আবারো নতুন নির্দেশনা

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। নতুন এ নির্দেশনায় সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। এর আগে ০৯ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্রে বলা হয়, সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে, বছরের সম্ভাব্য বিদেশ ভ্রমণের একটা তালিকা জানিয়ে রাখতে হবে, বিদেশ ভ্রমণের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে, প্রধান উপদেষ্টার অফিস কাঠামো তৈরি করে দেবে এবং এর তথ্য সংরক্ষণ করবে। আরও বলা হয়েছে, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা একাধারে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করবেন। তবে জাতীয় স্বার্থে অনুরূপ ভ্রমণ একান্ত অপরিহার্য হলে তেমন অপরিহার্যতার বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধীনস্থ অধিদপ্তর বা সংস্থার প্রধানরা একান্ত অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ ছাড়া একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন না। বিদেশে সেমিনার বা ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে অংশ নিতে উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশ নেওয়ার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে আমন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং অপরাপর অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাতে অংশ নিচ্ছেন সেই তথ্য জানাতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পেশ করার সময়ে ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রস্তাবিত কর্মকর্তার ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা ও উপযোগিতার বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে। কেনা-কাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন কিংবা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্টেন্স টেস্ট-ইত্যাদির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ পাঠানোর বিষয় বিবেচনা করতে হবে। সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে বিনোদন ভ্রমণ পরিহার করবেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার আগের এক বছরের বিদেশ ভ্রমণ বৃত্তান্ত সংযুক্ত করতে হবে। ডলার-সংকটের কারণে গত অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল তৎকালীন সরকার।

শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জোর দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নত অঞ্চল হতে পারত, কিন্তু সবচেয়ে পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। তিনি বলেন, আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়। আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এই দুরত্ব জয় করা যাবে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের নিয়ে আয়োজিত ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নারী ফুটবল টিমে পার্বত্য জেলা থেকে আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত খেললো! কীভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি! কত কষ্ট করে পাহাড় ভেঙে বাড়ি পৌঁছাতে হয়! বাবা-মা ঢাকায় আসলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে। পার্বত্য এলাকার তরুণরা যেন বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে এ আশাবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আপনাদের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বজয় এনে দিয়েছে। তরুণদের শুধু বাংলাদেশের নাগরিক না, বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। দুর্গম এলাকা বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না। সীমাবদ্ধতা থাকবে, কিন্তু মনের সীমারেখাকে বাড়িয়ে দিতে হবে। সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে নিজ কৃতিত্ব দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে। জানুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসবে পার্বত্য অঞ্চলের তরুণদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আপনাদের শিশুদের, তরুণদের এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব। উৎসবটি বৈচিত্র্যময় হোক। সরকারি নির্দেশ তাই অংশ নেবে এরকম না। তাদেরকে আপনারা উৎসাহ দিন, যেন নিজ থেকেই তারা উদ্যোমী হয়ে এ উৎসবে অংশ নেয়। পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও সঠিক পদ্ধতি, প্রশিক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক কঠিন সংকটে আছে। আপনাদের অঞ্চলে এটা আরও বেশি কঠিন। শিক্ষকদের কষ্ট হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট হয়। অনিয়মের পরিমাণ সারা বাংলাদেশে আছে, আপনাদের অঞ্চলে আরও বেশি করে আছে। আপনাদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমরাও চেষ্টা করব রাষ্ট্রীয় দিক থেকে কীভাবে কী করা যায়। পার্বত্য জেলার তরুণরা দুর্গম অঞ্চলে আছে বলে বড় শহর থেকে লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না। লেখাপড়ায় তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রবাসীদের জন্য ‘সুখবর’ দিলেন আসিফ নজরুল

পাসপোর্টের জন্য সারা বিশ্বে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে হাহাকার চলছে। বিশেষ করে শ্রমিক অধ্যুষিত দেশগুলোতে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সৌদি আরব, ইতালি, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় ভিসা নবায়ন বন্ধ, দেশে জরুরি কাজে ভ্রমণে আসতে না পারাসহ নানা জটিলতায় দিন পার করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এমন অবস্থায় হতাশ হয়ে পড়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট নিয়ে সুখবর দিলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ১৫ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসীরা এমআরপি পাসপোর্ট পাওয়া শুরু করবেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিওতে এই সুখবরে দেন আইন উপদেষ্টা। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে আসিফ নজরুল বলেন, ‘গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি মিটিং ছিল। পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন। আমাদের পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরাও ছিলেন। আপনাদের পাসপোর্টে খুবই সমস্যা হচ্ছে আমরা জানি। এমআরপি পাসপোর্টে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে আপনারা এমআরপি পাসপোর্ট পাওয়া শুরু করবেন। যারা আবেদন করেছে তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে তারা এমআরপি পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।’ পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে সৌদি ও মালয়েশিয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রথম প্রয়োরিটি দেওয়া হবে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াতে। এরপর যেসব কান্ট্রিতে ডিমান্ড বেশি তাদের ক্ষেত্রে প্রায়োরিটি দিয়ে সমস্যাটা তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করা হবে।

বিশ্বে বায়ু দূষণে ঢাকা দ্বিতীয়

বিশ্বের মোট ১২৬টি শহরের মধ্যে বায়ু দূষণের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানানো হয়েছে। একিউ ইনডেক্সে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু মান খুব অস্বাস্থ্যকর, সেগুলো হলো— ইস্টার্ন হাউজিং-২, বেচারাম দেউড়ী, কল্যাণপুর, হেমায়েতপুর, গুলশান-২ ইত্যাদি। এদিন ওই সময়ে ২৮১ স্কোর নিয়ে বায়ু দূষণে শীর্ষ স্থানে ছিল পাকিস্তানের শহর লাহোর। এদিকে, ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকার বায়ুমান প্রায়ই খুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় সবাইকে ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় থেকে আরও বলা হয় যে যারা বেশি সংবেদনশীল, তারা যেন পারতপক্ষে ঘরের বাইরে না যায়। এছাড়াও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনি স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে দুইবার পানি ছিটানো, পুরনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কলকাতায় ডিএনএ নমুনা দিলেন আনারকন্যা ডরিন

ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের কন্যা ফিরদৌস মুমতারিন ডরিন অবশেষে ভারতের কলকাতায় গিয়ে ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আনারকন্যার ডিএনএ নমুনা সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ নমুনা এবং দেহাংশ মিলে গেলে অপরাধের জোরালো প্রমাণ হাতে আসবে। আট মাস আগে কলকাতার নিউটাউনের একটি অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে খুন হন আনোয়ারুল আজিম। নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করতে তার দেহাংশের সঙ্গে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সিআইডি। নানা কারণে তারা সেখানে যেতে পারেননি। ফলে তদন্তের কাজ আটকে ছিল। পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া দেহাংশ যে সংসদ সদস্যেরই তা নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি ছিল। গত ১২ মে চিকিৎসা করাতে কলকাতায় গিয়েছিলেন ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম। ১৩ মে চিকিৎসার নাম করে বরাহনগরের আবাসস্থল থেকে বেরেনোর পর নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের মামলাও করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং বরাহনগর থানা জানতে পারে, নিউটাউনের একটি আবাসনে নিয়ে গিয়ে তাকে খুন করেছে কয়েকজন বাংলাদেশি। সেই মামলায় সিআইডি জিহাদ হাওলাদার এবং মুহম্মদ সিয়ামকে গ্রেফতার করে। বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে শিমূল ভুঁইয়া, শেলাস্তি রহমান, ফয়জল এবং মুস্তাফিজুর নামে চার অভিযুক্তকে। তবে ঘটনার মূল চক্রান্তকারী নিহতের বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামান শাহিন ফেরারি। কলকাতায় আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সংসদ সদস্যের দেহাংশ আবাসনের সেপটিক ট্যাংকে ও হাড়গোড় কাছাকাছি একটি খাল থেকে উদ্ধার করেছিল। জানা গেছে, নৃশংসভাবে খুন করার কাহিনী। সিআইডি ইতোমধ্যেই জিহাদ এবং সিয়ামের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে। তবে তিন মাস আগে বারাসত আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হলেও এখনো চার্জ গঠন হয়নি। সিআইডির সূত্রে বলা হয়েছে, শিগগিরই চার্জ গঠন করে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।

আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রসঙ্গে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন ও ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ ও ভারতকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। সাংবাদিকের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় সব পক্ষ যেন তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করে। ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলার ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশনের ওপর সহিংস হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হামলার সেই ঘটনা এবং বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে (ভারত থেকে) ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী বক্তব্য সম্পর্কে আপনার কোনো মন্তব্য আছে? জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে— বাংলাদেশ ও ভারত শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মধ্যকার বিবাদমান মতপার্থক্য দূর করবে। সব পক্ষ তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করুক, এটিই আমরা দেখতে চাই।’ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটে। সহকারী হাইকমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিসহ ব্যাপক বিক্ষোভের আয়োজন করে হিন্দুত্ববাদীরা। এসময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নিপীড়নের নিন্দা এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তি দাবি জানান। একপর্যায়ে সমবেত হওয়াদের একটি অংশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে হাইকমিশন অফিসের পতাকা ছিঁড়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেন। ভাঙচুর করেন আসবাবপত্র। হাইকমিশন চত্বরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার তীব্র প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন হওয়ায় তলব করা হয় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে। অবশ্য ঘটনার পরপরই দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ভারত।

আরো ২০ রাষ্ট্রদূত বদল হচ্ছেন

ক্ষমতারা পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে রদবদলের অংশ হিসেবে আরো ২০ দেশে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের সরিয়ে আনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো থেকে যে সুপারিশ আসছে, সেটাও সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রদূত পিএলআরে চলে যাবেন। তাদের রিকল করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০টির মত দেশে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। সেই নিয়োগের উদ্যোগও ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।’ অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর সরকার ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তনের ধারায় এরই মধ্যে বেশ কিছু দেশ থেকে রাষ্ট্রদূতদের সরানোর পাশাপাশি ফেরত আনা হয়েছে। চু্ক্তি বা প্রেষণে বিদেশি মিশনে দায়িত্ব পালন করা অনেকের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। সেই ধারা এখনও চলমান রয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে আজাদ মজুমদার বলেন, ‘এগুলোর কিছু বিষয় আছে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু, এ প্রক্রিয়া চলমান আছে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস অপূর্ব জাহাঙ্গীর।

জুলাইয়ের বিপ্লবী নারীদের কথা শুনলেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা বয়সী নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। সেই উত্তাল সময়ে সাহস করে আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীদের সাথে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি নারী শিক্ষার্থীদের নিজেদের ও দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেন এবং তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও নানা দাবির কথা শোনেন। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সময়ের সাহসী নারীদের সাক্ষাতের এ আয়োজন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘জুলাইয়ের কন্যারা... আমরা তোমাদের হারিয়ে যেতে দেব না’। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ বহু উচ্ছ্বাসের দিন, ক্ষোভের দিন, ইমোশনের দিন। আজ সব একসঙ্গে প্রকাশ করার দিন। উচ্ছ্বাস আছে বলেই তো আমরা এখানে আছি। উচ্ছ্বাস-ক্ষোভ না থাকলে আমরা তো মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারতাম না। এগুলো আছে থাকবে। যখনই দরকার তখন প্রকাশ করব। যখন যেখানে যতটুকু দরকার ততটুকু প্রকাশ করব। সেই শক্তি যেন আমাদের থাকে।’ জুলাইয়ের বিপ্লবী নারীদের উদ্দেশে ইউনূস বলেন, ‘আজ তোমাদের সাক্ষাৎ পেয়েছি, এটা আমার জন্য ঐতিহাসিক দিন। তোমরা বাংলাদেশকে আজ যে পর্যায়ে নিয়ে গেছ, সেটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ঐতিহাসিক ঘটনার যারা নায়িকা তাদেরকে আমি মনেপ্রাণে ধন্যবাদ জানাই।’ তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই মাসে বাংলাদেশে যেটা হয়ে গেল, এটার নজির পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। পৃথিবীতে বহু অভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু, এটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। এটা ছিল তোমাদের নিজের হাতে গড়া একটা জিনিস। এখানে কোন বড় নেতা এসে হুকুম দেয়নি। তোমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছ।’ ড. ইউনূস বলেন, ‘স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-কর্মজীবী মেয়ে এমনকি বাসায় থাকে.. যে যেখানে থাকে সেখান থেকে এসে এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে এবং সমানভাবে এগিয়ে এসেছে। এটা বাংলাদেশকে একেবারে পরিবর্তন করে দিয়েছে। ফলে, ৫ আগস্টের আগের বাংলাদেশ আর নেই। এটা নতুন বাংলাদেশ। নতুন এই বাংলাদেশ আমরা গড়ব। দেশ বদলানোর যে প্রতিজ্ঞা তোমরা নিয়েছ সেটা ধরে রাখবা।’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, জুলাই বিপ্লবের কন্যাদের কীর্তিগাথা ও অবদানকে উপজীব্য করে ‘জুলাইয়ের কন্যারা... আমরা তোমাদের হারিয়ে যেতে দেব না’ শীর্ষক এ নারী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ ছাড়া, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী নারীরাও আয়োজনে অংশ নেন।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ শুরু হচ্ছে বুধবার

১১তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ কাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) শুরু হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে সংলাপটি চলবে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর জানায়, সামরিক সংলাপে বাংলাদেশ হতে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশন্স ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন। প্রসঙ্গত, এই সামরিক সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও, এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দূর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালাসহ নানা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচিত হবে। প্রতিনিধি দলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।

তেজগাঁওয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

ট্রাক ও কভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার মো. মনিরকে আটকের প্রতিবাদে ঢাকা উত্তর সিটির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সামনের সড়ক অবরোধ করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। শ্রমিকদের দাবি, মনিরকে মুক্তি না দিলে শিল্পাঞ্চল থানা ঘেরাও করবেন তারা। বিক্ষুব্ধ এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা বিভিন্ন সময় আমাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। এর প্রতিবাদ করেছিলেন মনির। গত ৫ আগস্টের আগে তার নামে একটি মিথ্যা মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের নেতাকে ছেড়ে দিলেই আমরা রাস্তা ছেড়ে দেব।’ শ্রমিকদের অবরোধের কারণে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে বাংলাদেশ নির্বাচিত

সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের আন্তঃসরকার এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার জোরদার ও সুরক্ষার জন্য কাজ করে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে মানবাধিকার কাউন্সিলের সাংগঠনিক অধিবেশনে ২০২৫ সালের জন্যে তাদের কর্মকাণ্ড নির্ধারণী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’ নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেনেভায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার কাউন্সিলের ব্যুরোতে কাজ করবেন। মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যালয়ে একজন প্রেসিডেন্ট এবং চারজন ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেন। ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের (এপিজি) প্রতিনিধিত্বকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্থায় কাজ করার সময় এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এপিজি সর্বসম্মতিক্রমে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বাংলাদেশের প্রার্থিতা সমর্থন করে এবং কাউন্সিলের বৃহত্তর সদস্যপদ বিবেচনার জন্য মনোনয়ন প্রদান করে। অবশেষে, প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সমাপ্ত হয়, যখন বাংলাদেশ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য কাউন্সিল সদস্যদের সর্বসম্মত সমর্থন অর্জন করে। ২০০৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম বারের মত জাতিসংঘের এই মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নির্বাচন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাস এবং বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্বীকৃতির আরেকটি উদাহরণ।

নেচারের সেরা দশ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. ইউনূস

প্রখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের সেরা দশ ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নেচার তাকে ‘নেশন বিল্ডার’ আখ্যা দিয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নেচার সাময়িকীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে কীভাবে গবেষকেরা পৃথিবীকে গড়ছেন, তার স্বীকৃতি এই তালিকা।’এ বছরের তালিকায় আবহাওয়া পূর্বাভাসের নতুন ধারণা থেকে শুরু করে একটি জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার মত বিষয় স্থান পেয়েছে।ড. ইউনূস সম্পর্কে নেচার বলেছে, ‘বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের পতনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীরা শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব দিতে আমন্ত্রণ জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন। এটি ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, ছয় দশকের পেশাজীবনে তিনি কখনো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেননি। ড. ইউনূসের সাথে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেন, ‘তিনি আশির কোঠায়, কিন্তু তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। তার সহানুভূতি রয়েছে ও তিনি একজন চমৎকার যোগাযোগকারী।’বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া ড. ইউনূস ১৯৬০’-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে যান ও পরিবেশগত অর্থনীতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস জর্জেসকু-রোগেনের অধীনে পড়াশোনা করেন।তার যুগান্তকারী উদ্ভাবন হল ‘ক্ষুদ্র ঋণ’। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে ক্ষুদ্রঋণ সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র অংশের জীবন বদলে দিতে পারে।