বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ শুরু হচ্ছে বুধবার

১১তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ কাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) শুরু হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে সংলাপটি চলবে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর জানায়, সামরিক সংলাপে বাংলাদেশ হতে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশন্স ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন। প্রসঙ্গত, এই সামরিক সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও, এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দূর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালাসহ নানা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচিত হবে। প্রতিনিধি দলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।

তেজগাঁওয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

ট্রাক ও কভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার মো. মনিরকে আটকের প্রতিবাদে ঢাকা উত্তর সিটির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সামনের সড়ক অবরোধ করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। শ্রমিকদের দাবি, মনিরকে মুক্তি না দিলে শিল্পাঞ্চল থানা ঘেরাও করবেন তারা। বিক্ষুব্ধ এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা বিভিন্ন সময় আমাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। এর প্রতিবাদ করেছিলেন মনির। গত ৫ আগস্টের আগে তার নামে একটি মিথ্যা মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের নেতাকে ছেড়ে দিলেই আমরা রাস্তা ছেড়ে দেব।’ শ্রমিকদের অবরোধের কারণে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে বাংলাদেশ নির্বাচিত

সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের আন্তঃসরকার এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার জোরদার ও সুরক্ষার জন্য কাজ করে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে মানবাধিকার কাউন্সিলের সাংগঠনিক অধিবেশনে ২০২৫ সালের জন্যে তাদের কর্মকাণ্ড নির্ধারণী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’ নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেনেভায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার কাউন্সিলের ব্যুরোতে কাজ করবেন। মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যালয়ে একজন প্রেসিডেন্ট এবং চারজন ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেন। ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের (এপিজি) প্রতিনিধিত্বকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্থায় কাজ করার সময় এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এপিজি সর্বসম্মতিক্রমে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বাংলাদেশের প্রার্থিতা সমর্থন করে এবং কাউন্সিলের বৃহত্তর সদস্যপদ বিবেচনার জন্য মনোনয়ন প্রদান করে। অবশেষে, প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সমাপ্ত হয়, যখন বাংলাদেশ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য কাউন্সিল সদস্যদের সর্বসম্মত সমর্থন অর্জন করে। ২০০৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম বারের মত জাতিসংঘের এই মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নির্বাচন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাস এবং বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্বীকৃতির আরেকটি উদাহরণ।

নেচারের সেরা দশ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. ইউনূস

প্রখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের সেরা দশ ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নেচার তাকে ‘নেশন বিল্ডার’ আখ্যা দিয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নেচার সাময়িকীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে কীভাবে গবেষকেরা পৃথিবীকে গড়ছেন, তার স্বীকৃতি এই তালিকা।’এ বছরের তালিকায় আবহাওয়া পূর্বাভাসের নতুন ধারণা থেকে শুরু করে একটি জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার মত বিষয় স্থান পেয়েছে।ড. ইউনূস সম্পর্কে নেচার বলেছে, ‘বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের পতনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীরা শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব দিতে আমন্ত্রণ জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন। এটি ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, ছয় দশকের পেশাজীবনে তিনি কখনো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেননি। ড. ইউনূসের সাথে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেন, ‘তিনি আশির কোঠায়, কিন্তু তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। তার সহানুভূতি রয়েছে ও তিনি একজন চমৎকার যোগাযোগকারী।’বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া ড. ইউনূস ১৯৬০’-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে যান ও পরিবেশগত অর্থনীতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস জর্জেসকু-রোগেনের অধীনে পড়াশোনা করেন।তার যুগান্তকারী উদ্ভাবন হল ‘ক্ষুদ্র ঋণ’। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে ক্ষুদ্রঋণ সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র অংশের জীবন বদলে দিতে পারে।

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় ৮৮ মামলা, গ্রেফতার ৭০

দেশের বিভিন্ন স্থানে মাইনোরিটি রিলেটেড (সংখ্যালঘু) সহিংসতায় ৭০ আসামি গ্রেফতার হয়েছে এবং এসব ঘটনায় ৮৮ মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘যারা ন্যাক্কারজনক এসব ঘটনায় জড়িত, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে, তাদের কোন ছাড় নয়।’ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতায় যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হবে। চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও নরসিংদীর ঘটনায় সময়মত আপডেট দেব।’ সংখ্যালঘু হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বহু সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, সদ্য পলায়ন করা দল আওয়ামী লীগের পদধারী ছিলেন। সেই কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে, যে কোন ক্রাইম হলেই আমরা এগুলো সিরিয়াসলি নিচ্ছি।’

ঢাকার বায়ুমান ঝুঁকিপূর্ণ: জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার বায়ুমান বর্তমানে মাঝে মাঝে অস্বাস্থ্যকর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছাচ্ছে (একিউআই>২৫০)। এ অবস্থায় সবাইকে বাইরে গেলে মাস্ক পরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গণ মাধ্যমকে পাঠানো পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বায়ুমানের তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করা হয়।’ জনগণকে এ তথ্য দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে বিজ্ঞপ্তিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিকদের ও সাধারণ মানুষকে কয়েকটি পদক্ষেপগুলো নিতে বলা হয়েছে। এগুলো হল কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা; নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা; নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেয়া; নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুই বার পানি ছিটানো এবং পুরনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করা। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

দেশের এক হাজার ১৫৬ নদ-নদীর খসড়া তালিকা প্রকাশ

দেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এক হাজার ১৫৬টি নদ-নদীর খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার পান্থপথে পানি ভবনে আয়োজিত বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা নির্ধারণ অবহিতকরণ শীর্ষক সেমিনারে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞাসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে নাজমুল আহসান জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর এই খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এটি জমির সিএস এবং আরএসের মাধ্যমে হয়েছে। এই তালিকায় ৩৬৫টি এমন নদীর নাম যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো ২০১১ সালে বাপাউবোর প্রকাশ করা ৪০৫টি নদী এবং ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রস্তুত করা এক হাজার আটটি নদীর তালিকায় ছিল না। তিনি জানান, ২০১১ সালে বাপাউবো কর্তৃক প্রকাশিত ৪০৫টি নদীর তালিকায় থাকা ১৮টি নদী এবং ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রকাশ করা এক হাজার আট নদীর তালিকায় থাকা ২২৪টি নদীর নাম পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রাখা হয়নি। এই বিষয়ে অধিকতর যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী পহেলা বৈশাখে নদ-নদীর এই তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘এই খসড়া তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জড়িত। আমরা এখানে ভূমি মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করব। আমরা তিনটি মন্ত্রণালয় মিলে একসঙ্গে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এই তালিকা চূড়ান্ত করে আমাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে চাই।’ রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘যে নদীগুলোর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সেগুলোর যদি রেকর্ড থাকে তাহলে ডিসিদের বলব, যাচাই করে আমাদের পাঠিয়ে দিতে। নদীর সংখ্যাটা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। পহেলা বৈশাখের মধ্যে নদীর সংখ্যার চূড়ান্ত তালিকা দিয়েই আমরা থেমে থাকব না। এরপর পর্যায়ক্রমে নদীর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, অবস্থাসহ অন্যান্য তথ্য সেই তালিকায় যুক্ত করা হবে। তালিকায় নদীর অফিশিয়াল নামের পাশাপাশি স্থানীয় নামও থাকবে।’ মৃত নদী বলে কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাহহীন নদী বলা যায়, কিন্তু মৃত নদী বলার সুযোগ নেই। মৃত নদী বলেই ডিসিদের কেউ কেউ নদীকে লিজ দিয়ে ফেলেন। প্রবাহহীন নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকে। কিন্তু, মৃত ঘোষণা করলে নদীর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এটা আমরা হতে দেব না।’ রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘আমরা হাওর ও বিলের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এরপরে আমরা খালের তালিকা চূড়ান্ত করব। আজকে থেকে তিন মাসের মধ্যে ডিসিরা এই তালিকা করবেন।’ এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘অসম্ভব রকমের নদী দূষণ হচ্ছে। এই দূষণ যে শুধু ব্যবসায়ীরা করছে তা নয়, নদীর ভেতরে বহু ড্রেজার ও ছোট ছোট জাহাজ ডুবে আছে। এভাবে নদীগুলো মরে যাচ্ছে। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। নইলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে চর পড়ে যাবে।’ তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) ব্যবহার না করে যেসব কারখানার নদীর মধ্যে বর্জ্য ফেলছে, তাদের ড্রেনগুলো পাকা করে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নদী উদ্ধার করার এখনই সময়। অবৈধ বালুমহালগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা না করে নদীগুলো কী অবস্থায় আছে তা বিবেচনা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আমলে বঞ্চিত ৭৫৪ জনের পদায়নের সুপারিশ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়ে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা ও যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগে নেয় সরকার। সেজন্য বঞ্চিত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হয়। করা হয় উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি। সেই কমিটি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করেছেন। কমিটি প্রধান জাকির আহমেদ খান কমিটির অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদনটি পেশ করেন। কমিটি নির্ধারিত ৯০ দিনের আগেই প্রতিবেদন পেশ করায় কমিটির সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান। প্রতিবেদনটি পেশ করার সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কমিটি আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার ৭৫৪ জনকে পদায়নের সুপারিশ করেছে। তার মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের ১১৯ জনকে সচিব, ৪১ জনকে সচিব পদমর্যাদায় গ্রেড-১ পদ ও ৫২৮ জনকে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং উল্লিখিত সময়কালের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনাপূর্বক যথাবিহিত সুপারিশ প্রণয়নের জন্য সরকার গেল ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থ সচিব এবং বিশ্ব ব্যাংকে বাংলাদেশে সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিতে অর্থ বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সদস্য হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়া, কমিটিতে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব সদস্য হিসেবে ছিলেন। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমিটি গত তিন মাসে প্রায় ১৯টি সভা করে। আবেদনকারী ১৬ বছরে পারিবারিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত হয়েছেন, কোন পদোন্নতি পাননি- এ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমেও প্রতিবেদন নেয় কমিটি। সেই রিপোর্ট নেতিবাচক না হওয়ায় বিভিন্নভাবে মূল্যায়ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। যাদের চাকরির মেয়াদ বেশি আছে, তাদের পর্যায়ক্রমে সচিব করা যেতে পারে- এমন সুপারিশ করা হয়েছে। যাদের সময় কম আছে, তাদের সরকারের এক্সটেনশন বহু পদ আছে, সেখানে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। বঞ্চিত হয়ে অবসরে যাওয়াদের সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থায় গ্রেড-১ পদমর্যাদা দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হতে পারে বলে রিপোর্টে বলা হয়।

সশস্ত্র বাহিনীতে ব্রিটিশ সামরিক আইন সংস্কারের দাবি জানিয়েছে জাস্টিস ফর কমরেডস

স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীতে ব্রিটিশ সামরিক আইন সংস্কারের দাবিসহ ৫ দফা রূপরেখা দিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যের সংগঠন ‘জাস্টিস ফর কমরেডস’। সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরিচ্যুতি, সাবেক সদস্যদের আটক ও গুমের চেষ্টা নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জাস্টিস ফর কমরেডসের বক্তারা। এসময় বক্তারা বলেন, যারা সাবেক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পতিত শেখ হাসিনার দোসররা বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে থেকে দেশে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মো. শাহনুর রহমান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট ইমরান কাজলসহ আরও অনেকে।

মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে: পার্বত্য উপদেষ্টা

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনাদের এম্পাওয়ারমেন্ট হওয়া দরকার। আপনাদের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। আজ রাজধানীর বেইলী রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স সেমিনার হলে রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের জন্য 'পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা' বিষয়ক তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা এ কথা বলেন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, আপনাদের কর্ম অনুযায়ী আপনারা নির্বাচিত হয়েছেন। জেলা পরিষদের সার্বিক উন্নয়ন আপনাদের হাতে। আপনারা জানেন, কোথায় কীভাবে কাজ করলে এই সমাজ উন্নতি হবে, সঠিক কাজটি বিধিসম্মতভাবে আপনারা করবেন। উপদেষ্টা বলেন, আপনাদেরকে সুসংহত হতে হবে। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, সরকারের হ্যান্ডওভারকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই তিনদিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পার্বত্য তিন জেলার জন্য প্রযোজ্য বিভিন্ন আইন, টেকসই উন্নয়ন, জেলার উন্নয়ন কৌশল এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনার দিক নির্দেশনা সম্পর্কে ধারণা পাবেন আপনারা। হয়তোবা টিআর, জিআর ডিস্ট্রিবিউশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন কীভাবে হবে তা আপনাদের ভাবতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা পদ্ধতির মান উন্নয়ন, লাইভলিহুড ডেভেলপমেন্ট, দারিদ্র্য দূরীকরণ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন, পানির সমস্যা দুর করার মতো চ্যালেঞ্জগুলো আপনাদের নিতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রীয় আইন কানুনগুলো ভালোভাবে অবহিত হয়ে, আপনাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্ক ফোর্স চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা) সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, এনডিসি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কাজল ত্রিপুরা, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব থানজামাল লুসাই প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী দিনে জেলা পরিষদের আইন, বিধি ও প্রবিধান সম্পর্কিত সম্পদ ব্যক্তি হিসেবে প্রজেকশন উপস্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী।

দুদকের নতুন চেয়ারম্যান হলেন ড. মোমেন

সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. আবদুল মোমেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে তার নিযুক্তি অনুমোদন করেছেন। প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কমিশনের অপর দুজন সদস্য হচ্ছেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিয়া আলী আকবর আজিজি ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ। যেকোনো সময় তাদের নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। গত ২৯ অক্টোবর দুদকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং দুই কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন। এর পর থেকে দুদকের চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার পদ খালি ছিল। ড. এম এ মোমেন সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের পদ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্র গৃহিত হলে দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের জন্য ফাইল রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়। আজ সকালেই সেটি অনুমোদন করা হয়। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ১৭ আগস্ট আবদুল মোমেনকে জ্যেষ্ঠ সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। তিনি ১৮ আগস্ট এই পদে যোগদান করেন। গত ১ অক্টোবর তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৮ বয়সী সকলকে ভোটার করবে ইসি

২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর হবে বা যারা এরই মধ্যে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করেছেন কিন্তু ভোটার হননি, তাদের ভোটার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে তারা যদি ভোটার না হয়ে থাকেন তাদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগপূর্বক ভোটার হওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি বছর হালনাগাদ ভোটার তালিকা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ তথ্য আমাদের হাতে আছে, যেটা ২ জানুয়ারি ২০২৫ সালে আমরা সন্নিবেশ করব এবং তারা নতুন ভোটার হিসেবে তালিকায় যুক্ত হবেন। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এই তথ্যটা পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ অনেকেই অফিসে এসে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন না। আনুমানিক ৪৫ লাখ হতে পারত এই সংখ্যাটা। আমাদের হাতে যে ১৭ লাখ তথ্য আছে তার মধ্যে ১৩ লাখ আমরা ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিলাম। আর বাকি ৪ লাখ আমাদের বিভিন্ন অফিসে এসে এই বছরে নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ আমাদের ধারণা ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার, কম-বেশি হতে পারে, যারা কিন্তু ভোটার হওয়ার যোগ্য। যারা বাদ পড়লেন আমরা চাই তারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হোক। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ করব।

সিনিয়র সচিব মোমেন হচ্ছেন দুদক চেয়ারম্যান

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন পদত্যাগ করেছেন। গত ৮ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন আবদুল মোমেন। গতকাল সোমবার তার পদত্যাগপত্র প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয় এবং তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। পদত্যাগের কারণ হিসেবে আবদুল মোমেন ‘ব্যক্তিগত’ কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। আবদুল মোমেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হচ্ছেন। বুধবারই (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি তাকে এ পদে নিয়োগ দিতে পারেন বলে জানা গেছে। আবদুল মোমেন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর (খালেদা জিয়ার) সহকারী একান্ত সচিব ও পরিচালক, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক, কক্সবাজার জেলায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিমানের এমডি ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে অতিরিক্ত সচিব থাকা অবস্থায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৭ আগস্ট আবদুল মোমেনকে দুই বছরের চুক্তিতে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বও দেওয়া হয়।

এ মাসেই সংস্কার-নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে ঘোষণার ইঙ্গিত প্রধান উপদেষ্টার

সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে চলতি মাসেই ঘোষণা আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে নেওয়া উচিত। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পুরোনো প্রচলিত সমস্যা পরিহারে নির্বাচন সংক্রান্ত কতিপয় সংস্কার নির্বাচনের আগেই শেষ করা জরুরি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাদের সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি এখন নির্বাচন দেয়, তবে সেটা হবে সেকেলে এবং তখন পুরোনো সব সমস্যা আবারও ফিরে আসবে। প্রধান উপদেষ্টা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন, যার জন্য নতুন নীতি এবং নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রয়োজন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করতে খুবই আগ্রহী, আমরাও নির্বাচন করতে আগ্রহী। কূটনীতিকদের উদ্দেশে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি জনগণকে সরকারের দুটি দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করার চেষ্টা করছেন- একটি হলো নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং অন্যটি হলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করা। তিনি বলেন, ১৫টি বিভিন্ন কমিশন রয়েছে এবং সরকার আশা করছে, চলতি মাসের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এই কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন পেশ করবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংস্কার হলে সরকার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দুটি প্রক্রিয়া আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই রোমাঞ্চকর মুহূর্ত যে, এটি আমাদের বিজয়ের মাস এবং বৈঠকটি একটি বিশেষ মুহূর্ত। এটাই বাংলাদেশের প্রতি আপনাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু অপপ্রচার ও ভুল তথ্য প্রচারের পরও বাংলাদেশে শক্তিশালী ঐক্য বিরাজ করছে, বলেন অধ্যাপক ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও শ্রম খাতে সংস্কারের বিভিন্ন উদ্যোগ উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রদূতরা হলেন- ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, রাষ্ট্রদূত ও ইইউ প্রধান মাইকেল মিলার, ঢাকায় নেদারল্যান্ডসের অন্তবর্তী চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আন্দ্রে কারস্টেন্স এবং বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল। বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভ্যান্ডারহ্যাসেল্ট, বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলেই ইয়ানকভ, এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত মার্জে লুউপ, লুক্সেমবার্গের রাষ্ট্রদূত পেগি ফ্রানৎজেন, স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রদূত রবার্ট ম্যাক্সিন, সাইপ্রাসের হাইকমিশনার ইভাগোরাস ভ্রায়োনাইডস, হাঙ্গেরিয়ান দূতাবাসের প্রথম সচিব গাবর জুকস, পোল্যান্ডের কাউন্সেলর জারোস্লো জেরজ গ্রোবেরেক, পর্তুগালের ডেপুটি হেড অব মিশন সোফিয়া বাতালহা, স্লোভেনিয়ার প্রথম সচিব ইরমা সিনকোভেক, রোমানিয়ার দ্বিতীয় সচিব রুক্সান্দ্রা সিওকানেলিয়া।

গণহত্যার পুনরাবৃত্তি না ঘটা নিশ্চিতে অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলেন ড. ইউনূস

কোনো স্থানে কোনো অজুহাতে গণহত্যার জঘন্য অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটা নিশ্চিতে বাংলাদেশের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গণহত্যা অপরাধের শিকারদের স্মরণ ও মর্যাদা এবং এ অপরাধ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে গণহত্যার অগণিত শিকারদের স্মরণে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতি হিসেবে আমরা সমসাময়িক ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যার শিকার হয়েছি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন এবং গাজা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও ব্যক্তিদের তাদের জাতিগত-রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে লক্ষ্যবস্তু করা কেবল জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ওপর আক্রমণ নয় বরং মানবতার মূল মর্মবাণীর জন্য একটি গুরুতর অপমান। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের ওপর বর্বরতা গভীর যন্ত্রণাদায়ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আইনগুলো প্রত্যেক পুরুষ ও নারীকে এই ধরনের আন্তর্জাতিক অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বদা সতর্ক থাকতে বলে। প্রধান উপদেষ্টা ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি এবং ভুক্তভোগীদের জন্য জবাবদিহিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।তিনি বলেন, গণহত্যা কনভেনশন ও রোম সংবিধির রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ এই আইনি দলিলের সার্বজনীনকরণে অবিচল রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ যাত্রায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে মোকাবিলা, গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের মূল কারণগুলো নিরসন এবং শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতির প্রচার করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা এই দিনটি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে, এই ধরনের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ এবং শান্তি, মর্যাদা এবং মানবতা বিরাজ করবে এমন একটি ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বের একটি গম্ভীর অনুস্মারক হিসাবে কাজ করুক- এ আশা ব্যক্ত করেন।

৯০ শতাংশ মানুষ সড়ক আইন মেনে চলেন না

সড়কে চলাচলকারী ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ আইন মেনে চলেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান। এদের মধ্যে সমাজের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সব ধরনের মানুষই রয়েছেন। রাজধানীর তেজগাঁও বিজি প্রেস খেলার মাঠে সোমবার পুলিশ, ছাত্র-জনতা ও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার নাগরিকদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার নজমুল বলেন, পুলিশ সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরূত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশ ছাড়া একটি সভ্য সমাজ কল্পনা করা যায় না। পুলিশ সমাজের সাধারণ মানুষেরই অংশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ৫ আগস্টের পর থানা ও ট্রাফিক পুলিশ কেউই স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনি। যখন পুলিশ তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে পারেনি তখন জনগণ কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছিলো। সারাদেশে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে গিয়েছিলো। তখন মানুষ পুলিশের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছিলো। পুলিশ সদস্যরা এ সমাজেরই সন্তান। তাই আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়াটা যেমন পুলিশের কাজ তেমনি তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করাও আপনাদের কর্তব্য। সড়কে আইন না মেলে চলার বিষয়ে দৃষ্টিপাত করে তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এ পরিবহনের জরিমানার টাকা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ছিলো জরিমানা বেশি হলে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে, মানুষ আইন মেনে চলবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তার বিপরীত। আমাদের দেশের ৮০-৯০% লোক যারা সড়কে চলাফেরা করেন তারা হয়তো আইন জানেন না অথবা জানলেও মানেন না। আমরা যারা শিক্ষিত তারাও আইন মানি না। সুতরাং আইন মানার জন্যই আমরা বিভিন্ন পরিবহনের ওপর জরিমানা আরোপ করে থাকি। রাস্তার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ বেপোরোয়া ও বিশৃঙ্খল যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করে। তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা হলো ব্যবসাবান্ধব অঞ্চল। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস এখানে। আইনশৃঙ্খলা যদি ভালো না থাকে তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য কখনো ভালো হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আইনশৃঙ্খলা একে অপরের পরিপূরক। কাভার্ডভ্যান চুরি ছিলো এই এলাকার একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কাভার্ডভ্যান মালিক প্রতিনিধিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুটি মামলায় চুরি হওয়া কাভার্ডভ্যান ও মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এভাবে যদি আপনারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে আপনাদেরকে পুলিশী সেবা দেওয়া আরও সহজ হবে। মতবিনিময় সভায় ছাত্র প্রতিনিধি হোসেন বলেন, এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করতে পুলিশ ও ছাত্র-জনতা সমন্বয়ে কমিঠি গঠন করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সমাজ থেকে মাদক দূর করব। এসময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার নাগরিকবৃন্দ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন। তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এবং ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বংশালে ২ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

রাজধানীর বংশালে ফেনসিডিলসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় বংশাল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোছা. আকলিমা খাতুন (৩৮) ও নাঈম হাসান রাব্বী ওরফে হৃদয় (২১)। ডিবির তেজগাঁও বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বংশাল থানার কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের সামনে পাকা রাস্তার ওপর কয়েকজন মাদক কারবারি ফেনসিডিল বিক্রির জন্য অবস্থান এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডিবির তেজগাঁও বিভাগের একটি টিম। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর সময় ওই দুই মাদক কারবারিকে ১৭২ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছ থেকে ফেনসিডিল সংগ্রহ করে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের কাছে বিক্রি করতেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ময়লা ভাগাড় থেকে উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে খাওয়ার ছবিটি  ২০২৩ সালের

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে একটি বৃদ্ধ ময়লার ভাগাড় থেকে খাবারের উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে খাচ্ছেন। ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘দুর্ভিক্ষের বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশের অবস্থা’, এবং দাবি করা হচ্ছে— এটি বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছবিটি সাম্প্রতিক নয়, বরং ২০২৩ সালের। যখন আওয়ামী লীগ টানা তিনবার ক্ষমতায় ছিলেন। জানা গেছে, ছবিটি আলোকচিত্রী জিএমবি আকাশের ফেসবুক পেজে ৮ ডিসেম্বর পোস্ট করা হয়েছে এবং তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করা হয়েছে। আকাশ তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ছবিটি ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর তোলা হয়েছে। তবে, ছবির সত্যতা নিয়ে কিছু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, তাদের দাবি— এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি। এই দাবির পর, রিউমর স্ক্যানার টিম আলোকচিত্রী জিএমবি আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মূল ছবিটি সংগ্রহ করে। ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে, এটি আসল ছবি এবং ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর তোলা। অতএব, এই বৃদ্ধের উচ্ছিষ্ট খাওয়ার ছবিটি পুরনো হলেও, বর্তমানে সেটি বিভ্রান্তিকরভাবে সাম্প্রতিক বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

চলন্ত অটোরিকশা থেকে কান ছিঁড়ে স্বর্ণের দুল ছিনতাই

রাজধানীর গুলিস্তানে আল্পনা কুন্ডু (৫০) নামে এক নারীর কান ছিঁড়ে স্বর্ণের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। আল্পনা কুন্ডুর স্বামী অসীম কুন্ডু জানান, তারা রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় থাকেন। সন্ধ্যার দিকে অটোরিকশায় চড়ে সপরিবারে সুত্রাপুর যাচ্ছিলেন। পথে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের পাশে পৌঁছালে চলন্ত অটোরিকশার পেছন থেকে এক ছিনতাইকারী আল্পনার ডান কানের স্বর্ণের দুল ধরে সজোরে টান দেয়৷ এতে আল্পনার কানের নিচের অংশ ছিঁড়ে যায়। একই সময় স্বর্ণের দুল নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী। ওই ঘটনায় কানের লতি ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে দ্রুত আল্পনাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আল্পনার ডান কানের লতি ছিঁড়ে গেছে। ঢামেকের নাক, কান, গলা বিভাগে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, গুলিস্তানে রিকশায় বসে থাকা অবস্থায় ওই নারীর কান ছিঁড়ে স্বর্ণের দুল নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী। পরে আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়।

খসড়া প্রকাশের আগেই নাগরিকদের ভোটার হতে বলল ইসি

২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম অর্থাৎ আগামী ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর হবে বা যারা এরই মধ্যে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করেছেন কিন্তু ভোটার হননি, তাদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ইসির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. শরিফুল আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার আগে তারা যদি ভোটার না হয়ে থাকেন, তাদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে ভোটার হওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে রোববার (৮ ডিসেম্বর) পাঠানো বিজ্ঞপ্তিটি ওপরের তথ্য দ্বারা সংশোধন করা হল।’ রোববারের (৮ ডিসেম্বর) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশের লক্ষ্যে যাদের এনআইডিতে ভুল আছে, তারা যেন সংশোধনের আবেদন করেন। আইনানুযায়ী, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি।’ সস্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদেন বলেছেন, ‘প্রতি বছর ১ জানুয়ারি অনুযায়ী হালনাগাদ ভোটার তালিকা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ তথ্য আমাদের হাতে আছে, যেটা আগামী ১ জানুয়ারি আমরা সন্নিবেশ করব এবং তারা নতুন ভোটার হিসেবে তালিকায় যুক্ত হবেন। তবে, আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এ তথ্যটা পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ, অনেকেই অফিসে এসে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন না। আনুমানিক ৪৫ লাখ হতে পারত এ সংখ্যাটা। আমাদের হাতে যে ১৭ লাখ তথ্য আছে, তার মধ্যে ১৩ লাখ আমরা ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিলাম। আর বাকি চার লাখ আমাদের বিভিন্ন অফিসে এসে এ বছরে নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ, আমাদের ধারণা ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার, কম-বেশি হতে পারে, যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা বাদ পড়লেন আমরা চাই, তারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হোক। এ জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ করব। এ বাদপড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৫ সালে যারা ভোটার হবেন অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১ জানুযারিতে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন, তাদের তথ্যও আমরা বাড়িবাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করব।’

ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে ভারত: রিজওয়ানা

বাংলাদেশিদের জন্য ভারত ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজওয়ানা হাসান বলেন, `ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে, সে বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অপপ্রচারের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে যে অপপ্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে ভারত সরকার দায়ী না। এটি বিভিন্ন সংগঠনের কাজ।’ তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে বসে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য ও বিবৃতির বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে এবং জোরদার করতে ভারত ইচ্ছা পোষণ করেছে বলেও জানিয়েছেন রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব হয়েছে, সেটি সম্পর্কে ভারত অবগত রয়েছে।’এ দিকে, বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ও বিভিন্ন সময় দেয়া বক্তব্য বাংলাদেশ পছন্দ করছে না, এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটা সরকার পছন্দ করছে না বলে জানানো হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে। উত্তরে বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে বাধা হওয়া উচিত নয়।’ সংখ্যালঘু নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘু বিষয়ে আমরা বলেছি, তাদের কোন সংশয় থাকলে তারা আমাদের দেশে এসে সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।’ এছাড়া, বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও নানা ধরনের হুমকির বিষয়ে জোরালোভাবে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।বৈঠকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দুই দেশকে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।বৈঠকে সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়েও কথা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।এ দিকে, ৫ আগস্টের পর ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া এক ধরনের বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন বিষয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে। জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চিকিৎসাপ্রার্থীদের ভিসা সহজ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহায়তা কামনা করা হয়েছে। দেশটিতে আটক বাংলাদেশি জেলে ও অন্যান্য নাগরিককে ফেরত দেয়ারও আহবান জানানো হয়েছে।’সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। ঢাকায় এসে তিনি প্রথমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বিকাল চারটা ১৮ মিনিটে বিক্রম মিশ্রি যমুনায় যান প্রধান ‍উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই প্রথম দিল্লির উচ্চ পর্যায়ের কোন কর্মকর্তা ঢাকায় এলেন। আর পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার পর মিশ্রির প্রথম ঢাকা সফরও এটি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতেই বিক্রম মিশ্রির দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

সাত দিনে দেশে ৪৬,২৬২ কেজি পলিথিন জব্দ, জরিমাা ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা

দেশে গেল মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) থেকে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে ১৮৫টি মোবাইল কোর্ট অভিযান চালানো হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী এসব অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে ৩৭৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২৩ লাখ ৭০ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া, আনুমানিক ৪৬ হাজার ২৬২ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। চারটি পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সিলগালা করা হয়েছে। এ দিকে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আরও একটি মোবাইল কোর্ট অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি, আনুমানিক ১১ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার ছিলেন রেহানা: আইন উপদেষ্টা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার ছিলেন তারই ছোট বোন শেখ রেহানা। এখানেই শেষ নয়, শেখ রেহানারও ক্যাশিয়ার ছিল। আর তিনি হচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক মন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক। এমনটাই জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্লজ্জভাবে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে থেকে শেখ হাসিনা জনসমক্ষে বলে বেড়ান- তার পিয়ন নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।’ দুদকের ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, ‘অন্যায় না করলে রাজনৈতিক চাপ থাকলেও ভাল কাজ করা যায়। কিন্তু, দুদক বিগত সরকারের দাসে পরিণত হয়েছিল।’ একই অনুষ্ঠানে অপর বক্তা দুদক সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র ধরা পড়ছে। সংস্কার কাজ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নজরে আসছে। এখন সাঁড়াশি অভিযান চালানো ছাড়া উপায় নেই।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।

মামলা বাণিজ্যে জড়িত থাকায় ডিএমপির এক এসআইকে প্রত্যাহার

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন মামলায় নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি এবং মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে শাহিন পারভেজ নামে এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সিলেট রেঞ্জে কর্মরত ছিলেন তিনি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই তথ্য জানান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে মামলা বাণিজ্যে পুলিশও জড়িত। আমার লোক যে সব ভালো তা বলব না। আমার কাছে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যিনি আমার লোক, এই কাজে লিপ্ত ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে আদাবর থানার এসআই শাহিন পারভেজকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদাবর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া বলেন, গতকাল রাতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এসআই শাহিন পারভেজকে প্রত্যাহার করা হয়। বর্তমানে তাকে তেজগাঁও বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, সিলেট রেঞ্জ থেকে ডিএমপিতে বদলি হয়ে আসা শাহিন পারভেজকে জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই দায়িত্ব পেয়ে মামলার এক আসামির কাছে টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী বিষয়টি ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।