রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট কতবার পিছিয়েছে জানা নেই
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:২৪ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০২৪
সাগর রুনি হত্যার তদন্ত রিপোর্ট একশো বারেরও বেশী পিছিয়েছে। কি করে আশা করা যায় যে, একই লাইনআপ রেখে এই বিচারটা হবে! বেহেস্ত যাওয়া সহজ। কিন্তু এই বিচার অসম্ভব!
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার সময় কতবার পিছিয়েছে জানা নেই। কারণ যারা এর সুবিধা ভোগী তারা যে নিজে চেয়ারে বসে এর বিচার করবে না, এটা নিয়ে অগ্রসর হবে না, এটা জানাই। তাই কোন আগ্রহ নাই।
সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগকৃত লোকদের বিদায় নিতে বলে সাধারণ চাকুরেরা। কারণ তারা একটা স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেখতে চায়। দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজদের চেহারা ও দাপট দেখতে দেখতে এরা ক্লান্ত। বিরক্ত।
ক্লান্ত না তারাই যারা এদের কাছ হতে প্রচুর সুযোগ নিয়েছে। পা চেটেছে। মাসে মাসে বিদেশ ট্যুর বাগিয়ে নিয়েছে। অনেকে আবার বিদেশে গিয়ে হোটেল সঙ্গীও হয়েছে কারো কারো। হ্যাঁ। বুঝেই বলছি। কোন রাগ বা অভিমান থেকে না।
আজ সকালে রমনায় কয়েকজন জুনিয়রের সাথে দেখা। কথা প্রসঙ্গে জানালো, বিতাড়িতদের ভেতর হতে দুজন নাকি, একজন উপদেষ্টার বাসায় গেছে। তার পা ধরেছে ফিরে আসতে!
ওরাই জানালো, ২০০ জনের একটা লিষ্টও করেছে এইচআরডি, যারা তাদের বিতাড়িত করেছে, তার মধ্য হতে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিবে! তেল বের করে ছাড়বে!
সত্য হলে ব্যাপারটা উদ্বেগের! বেশ উদ্বেগের! এরা যে কোন কিছুই করতে পারে।
গোপালগঞ্জ এবং মাদারীপুরের দুজন নেতা গোছের কর্মকর্তা নাকি তাতে উৎসাহ দিচ্ছে। এদের মধ্যে একজন এইচআর এই কাজ করে! ডিজি কাজী ছাইদুর রহমানের নির্দেশেই নাকি তা করছে!
আচ্ছা ধরা যাক এই ২০০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো ফিরে এসে। সুবিধা ভোগীরা চুপ থাকলো বা পেছন হতে এদের লাত্থি মারলো, তাতে কি এই কম্পাউন্ডটা সহীহ শুদ্ধ হয়ে যাবে!
উত্তরটা হচ্ছে না।
ডিজি কাজী ছাইদুর রহমান এর বিরুদ্ধে ঐ সময় হওয়া আট মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ চুরির সহায়তাকারী হিসেবে অভিযোগ রয়েছে। ফিরে এসে উনি কি চাইবে যে তার বিরুদ্ধে আসা তদন্তটা রিপোর্টটা আলোর মুখ দেখুক!
উত্তরটা হচ্ছে না!
দ্য গ্রেট আবু ফারাহ মোঃ নাসের ফিরে এলেন। যে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির এর সহায়তা নিয়ে এস আলম এর মতো একটা দানব সৃষ্টি করেছে। দেশের ব্যাংকিং সেক্টর শেষ করে দিয়েছে। সে কি চাইবে যে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত হউক!
উত্তর হচ্ছে না।
জনতা ব্যাংকের টিম লিড দেয়ার সময় একবার ঐ ব্যাংকের এমডি সালাম সাব, দ্যা মোস্ট করাপ্ট ম্যান ইন ব্যাংকিং সেক্টর এবং একজন ডিএমডি, আসাদ নাম বোধ হয়, একটা দালাল এবং আমার টিমের সাথে ত্রিপক্ষীয় মিটিং হয় বোর্ড রুমে।
এ মিটিংয়ে দরবেশ এবং এনন টেক্সের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেয় আমার টিম। জনতার এমডির কথা শুনে মেজাজ হারাই। আশ্চর্য জনক ব্যাপার হলো, মি. ফারাহ তাদের পক্ষ নিয়ে আমাকে রীতিমতো নাজেহাল করে ছাড়ে!
মনে হচ্ছিলো, এই লোক কি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজি, না জনতা ব্যাংকের এমডির সহকর্মী! এতো দালাল হয় কি করে! মিটিংয়ের মাঝেই ফজলে কবির সাব এর কল আসে দুই থেকে তিনবার! সে ফিরে আসলে কি সবাইকে নিয়ে ইমামতি করবে!
উত্তরটা হচ্ছে না।
মি. মাসুদ বিশ্বাস একজন আপদমস্তক, আপাদপেটওয়ালা দুর্নীতিবাজ! এটা সবাই জানে। এর জন্য কোন গবেষণা বা তদন্তের দরকার নেই। ব্যাংক কম্পাাউন্ডে গিয়া নাম বললেই যে কেউ এক নিঃশ্বাসে বলে দেবে, এইডা একটা চোর!
প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার সুযোগ নেয়া এরা সবই একেকটা রাসেল ভাইপার। সবাইকেই এটা বুঝা উচিত।
বিপদের মধ্যে এরা অলস ভান করে পড়ে থাকবে। আর সুযোগ পেলেই এমন ছোবল দেবে যে জানটা আর হইধামে থাকবে না!
এরা কখনোই- "সুখের আশায় নাঙ্গ ধরিয়া ভাতার হারাবে না!"
একটু সাবধানে।
শেষ লাইনটা মিস লিটনের গানের কলি।
যারা বেশী রুচিশীল তারা হয়তো মিস লিটনের গান শুনেন না। ছেলে মানুষ। মেয়েদের সুরে গান গায়। আমি শুনি।
লেখক: গোলাম বহলুল, অতিরিক্ত পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংক।