ঢাকা থেকে আগরতলা পর্যন্ত লং মার্চ করবে বিএনপির তিন সংগঠন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:০১ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা, পতাকা অবমাননা, ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্যসন্ত্রাস ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার দাবিতে লং মার্চ করবে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন।
আগামী বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল আটটায় ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই লং মার্চ শুরু করবে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়। বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র, যুবক ও স্বেচ্ছাসেবী জনতাকে এই লং মার্চে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘গেল ২ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভারতের হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির এক দল উচ্ছৃঙ্খল সদস্যদের মাধ্যমে সহিংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। উচ্ছৃঙ্খল সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছে, মিশনের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। আমরা ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদল মনে করছি, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাতের শামিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথা বলে এক দিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অবমাননা করেছেন, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পরে ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগামহীন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে যুবদলের সভাপতি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত ছাত্র জনতার সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে তারা ক্রমাগত ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত খবর প্রচার করছে। তাদের অপপ্রচার এবং গুজবের কারণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা একইসঙ্গে ভারতের সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।’
ভারত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারছে না দাবি করে আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘ভারত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আরো বহু ব্যক্তি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত এখন বাংলাদেশি ক্রিমিনালদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন শ্যুটঅ্যাট সাইটের অর্ডার দিয়ে গোপ, হৃদয় তারুয়া, রুদ্র সেন, দীপ্ত দে, শুভশীল, তনয় দাসদের খুন করেছে, ভারত তখন কোন প্রতিবাদ বা উদ্বেগ জানায়নি। কিন্তু, হাসিনার পতনের পরে ভারত কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বহিষ্কৃত ইসকনের নেতা, বাংলাদেশের নাগরিক চিন্ময় দাসের গ্রেফতার, তদন্ত ও বিচার সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু, ভারতের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত মন্তব্য করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম পল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।