ঢাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৫৩ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেছেন, ‘বিজয়ের ৫৪ বছরেও জনগণ বিজয়ের প্রকৃত স্বাধ ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ৫৪ বছরে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা সকলেই নিজের আখের গুছিয়েছে। ভাগ্যাহত জনতার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। জনগণকে চোষে তারা হয়েছে আঙুল ফুলে কলাগাছ। আধিপত্যবাদ ভারতের আগ্রাসী মনোভাব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ বরদাশত করবে না। ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। বাংলাদেশের ইসলামপন্থি জনগণ সংখ্যালঘুদের মন্দির, বাড়ী-ঘর পাহারা দেয়। অপর দিকে, ভারত পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা পুড়িয়ে অসভ্যতার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভারত আমাদের সাথে দাদাগিরি করতে চায়। ভারতের দাদাগিরির সময় পুরিয়ে আসছে। খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রযেছে। ভারত থেকে হাসিনাকে ফেরত আনতে হবে। গণহত্যার দায়ে হাসিনাকে ফাঁসি দিতে হবে।’
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে পতাকা র্যালিপূর্ব জমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন।
যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে র্যালিপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মুহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মুনতাছির আহমাদ, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা মাকসুদুর রহমান, মাওলানা মাসউদুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাবেশে মোসাদ্দেক বিল্লাহ আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে জাতিকে করেছে দ্বিধা বিভক্ত। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করতেও আওয়ামী লীগ ভুল করেনি। কার্যত আওয়ামী লীগ বিগত ১৬ বছরে দেশকে একটি অঘোষিত বাকশাল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখনও পলাতক হাসিনা ও তার দোসররা দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, খুনি হাসিনাও তার পলাতক সহযোগীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গণহত্যাসহ সব অপরাধের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
তিনি একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দেশের সর্বস্তরের জনতার প্রতি আহ্বান জানান।
মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালানোর পর তার দোসররা চর দখল, দোকান দখলসহ দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আগে রাষ্ট্রসংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে ২৪’র শহীদের রক্তের সাথে গাদ্দারী হবে। আমরা ২৪’র শহীদের রক্তের সাথে গাদ্দারী দেশের জনগণ সহ্য করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বৈঠকের পর বর্তমান সরকার পিলখানা ট্রাজেডির বিচার থেকে ফিরে আসছে। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, ভারতের তাঁবেদারি করার সময় আর আমাদের নাই। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার সময় এসেছে। ভারত আমাদের ছাড়া চলতে পারবে না। ভারতের পণ্য ছাড়া আমরা চলতে পারব। কিন্তু, ভারত বাংলাদেশের বাজার হারালে ভারতকে না খেয়ে মরতে হবে।’