আ.লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার দেওয়া হবে না

আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বারোঘরিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। হারুনুর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগ দেশদ্রোহী দল। এরা দেশ, গণতন্ত্রের ও মানুষের শত্রু। এদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার দেওয়া হবে না। তা না হলে তারা ভারতের কাছে এবার স্থায়ীভাবে দেশকে লিখে দেবে। যুব সমাজকে আরও বেশি সতর্ক ও সক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পরাজিত শক্তি যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু বিএনপি যাতে ক্ষমতায় না আসে তাই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রের আমাদের দাঁতভাঙা জবাব দেব। হারুনুর রশীদ বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে থেকে চক্রান্ত করছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর কোনো আক্রমণ হয়নি। তারা স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, চলাফেরা ও লেখাপড়া করছে। অথচ ভারত থেকে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।

রোববার ভারতীয় দূতাবাসের দিকে পদযাত্রা করবে বিএনপির ৩ সংগঠন

এবার ভারতে বাংলাদেশের একাধিক দফতরে হামলা, জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়া ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদী পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবেন বিএনপির এই তিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, রোববারে ডাকা এই কর্মসূচির পর প্রয়োজনে লংমার্চেরও ডাক দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে। পদযাত্রা শেষে ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপিও প্রদান করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত থাকার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’ গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ তুলছে ভারত সরকার। এ ছাড়া ভারতের অনেক গণমাধ্যমে উসকানিমূলক অপপ্রচার, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা এবং জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনাও ঘটেছে। যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির তিন সংগঠন ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি দিল। এদিকে তিন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, মিথ্যা তথ্য গণমাধ্যমে ছড়ানোসহ বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতার প্রতিবাদে ভারতের আগরতলা অভিমুখে ‘লংমার্চ’ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শনিবার রাতে তিন সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। রাত সোয়া নয়টার দিকে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ভার্চুয়াল বৈঠকে লংমার্চ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে আশা করি। কারণ পদযাত্রার পরও যদি ভারতের আচরণ না বদলায় তাহলে লংমার্চের দিকেই যেতে হবে।’

ভারতীয় দূতাবাসে রোববার স্মারকলিপি দেবে বিএনপির তিন সংগঠন

ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসে স্মারকলিপি দেবে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) তিন সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করা হবে।’ এতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত থাকার জন্য জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আহ্বান জানিয়েছেন। এই কর্মসূচির পর ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে এই লংমার্চ হবে। আজ-কালের মধ্যে লংমার্চের তারিখ নির্ধারণ হওয়ার কথা রয়েছে। এই কর্মসূচিও জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ ব্যানারে অনুষ্ঠিত হবে। গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএনপি বলছে, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবং শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া পর ও পরবর্তী বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার এবং তার জামিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এসব ইস্যুসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পর ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাংচুর ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়। এসব ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।’ এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেছেন যে, ভারতের এমন আচরণ কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করছে। এসব কারণে ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন।

আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে ‘জাতীয় অনৈক্যের সূচনা’ হয়েছে: জিএম কাদের

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বলে দাবি করেছেন ভেঙে দেওয়া সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এই দুটি দলকে বাদ দিলে ‘৫০ শতাংশ মানুষের জাতীয় ঐক্য’ হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা যে বৈঠক করেছেন, তাতে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দল বাদ পড়ায় এতে ‘জাতীয় অনৈক্যের সূচনা’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের দিনটির স্মরণে এই সভার আয়োজন করা হয়। দিনটি তারা পালন করে ‘সংবিধান সংরক্ষণ’ দিবস হিসেবে। সভায় জিএম কাদের আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিলে দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী দলকে জাতীয় ঐক্যের ডাকের বাইরে রাখা হয়েছে। ৫০ শতাংশ মানুষের দলকে সংলাপের বাইরে রাখা হয়েছে। এতে জাতিগতভাবে অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। দেশে একটা অবিশ্বাস ও সংঘাতময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।’ ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলও স্মরণ করেন জাতীয় পার্টির নেতা। তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ১৯৩টি আসন জিতে সরকার গঠন করেছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপি ৪০ দশমিক ৯৭ ভোট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে বিএনপির চেয়ে ১৩১ সিট কম পেয়ে খুব খারাপ ফলাফল করেছিল। আওয়ামী লীগের ভোটের হার ছিল ৪০ দশমিক ১৩। সেখানে ভোটের শতকরা ব্যবধান ছিল এক শতাংশেরও কম।’ ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৪টি আসন ও সাত দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট, জামায়াত ১৭টি আসন ও চার দশমিক ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের ৪৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট ও ২৩০টি আসন পেয়েছিল। জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি আসন। ভোটের হার ছিল ৭.০৭। সেই নির্বাচনে বিএনপির ভোট ছিল ৩২ দশমিক ০৫ শতাংশ, আসন ছিল ৩০টি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাথে মত বিনিময় করেছেন। এতে জাতীয় ঐক্যের নামে ‘জাতীয় অনৈক্যের’ সূচনা হল। ৪৮টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে মাত্র ১৮টি দলের সাথে মত বিনিময় করেছেন তিনি।’ ‘৫০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী দলকে বাদ দিয়ে সুন্দর দেশ গড়া বাস্তবসম্মত নয়।’ দেশে ‘অরাজকতা ও অস্থিরতার বীজ বপন হয়েছে’ বলেও মনে করেন তিনি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কি সবার মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার করছে? এখন দেখা যাচ্ছে, ঐক্যের চেয়ে প্রতিশোধের বিষয়টি সামনে আসছে।’ ‘কেউ অপরাধ করলে বিচার করতে হবে, সরকার ‘প্রতিশোধপরায়ণ’ হলে বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। আইনে বলা আছে, দশটি অপরাধী ছাড়া পেলেও যেন একজন নিরপরাধ শাস্তি না পায়। আপনারা সেটা ফলো করছেন? হত্যা মামলায় লাখ লাখ মানুষকে আসামি করা হচ্ছে।’ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা। বলেন, ‘তারা হচ্ছে সরকারের শক্তির উৎস, শক্তিশালী হাতকে ‘লুলা’ করে দেওয়া হয়েছে।’ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সব সময় ‘সবার’ সমর্থনে সাফল্য পেয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শরিয়া আইনেও আছে, মানুষের বিচার করতে হবে তার নিয়ত দেখে, তার কাজ দেখে নয়। পুলিশের কিছু সদস্য চাকরি করে পরিবারের ভরণপোষণের জন্য। তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে সরকারের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। ইচ্ছা করে সবাই শেখ হাসিনার অপকর্মে জড়িত হয়নি। সবাইকে ঢালাও করে অপরাধী করলেন, শত্রু বানালেন, বাদ দিলেন... এরমধ্যেই শূন্যস্থানগুলোতে পুলিশ ও প্রশাসনে দলীয়করণ হয়ে গেছে।’ ‘শক্তিশালী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে’ অন্তর্বর্তী সরকার ‘জিম্মি’ হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার যা করতে চায়, তা করতে পারছে না।’ ব্যবসায়ীসহ সব পেশাজীবীও দেশের পরিস্থিতি দেখে চিন্তিত ও দুর্দশাগ্রস্ত পড়েছে বলেও দাবি করেন জাতীয় পার্টির নেতা। জিএম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে, তাদের তদন্তের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করুন। ‘আন্দাজে’ মামলা দিয়ে কাউকেই শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়। একটি সংগঠনের সবাই কি অপরাধী?’ ‘যদি তাই ভাবেন, তাহলে শেখ হাসিনার সাথে আপনাদের তফাত কী? শেখ হাসিনা মনে করত ‘বিএনপি ও জামায়াত করলেই অপরাধী’, এখন তো আপনারা সেটাই করছেন। আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নিক। যাদের নিবন্ধন দিয়েছেন তাদের কেন নির্বাচনে আসতে দেবেন না?’ পুলিশ ও প্রশাসন এখন কার কথায় চলছে- এই প্রশ্নে রেখে জাতীয় পার্টির নেতা বলেন, ‘আমাদের লোকজন ভোট দিতে পারবে? আমাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে দাঁড়াতে পারবে?’ ‘আওয়ামী লীগের মত কয়েকটি দল নিয়ে একতরফা নির্বাচন করে সব পাস করিয়ে দিলেন, সেটা কি টেকসই হবে? এমন সংস্কারে কি রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে? অস্থিরতা কি থামবে? দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংস্কারের বাইরে রাখলে তারা কি বসে থাকবে?’ জাতীয় পার্টি সরকারকে সমর্থন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল মন্তব্য করে জিএম কাদের বলেন, ‘কিন্তু, সরকার সেই সমর্থন পদদলিত করেছে।’ ‘১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হানাদাররা বলেছিল ‘আমরা মানুষ চাই না, মাটি চাই’। পোড়ামাটি নীতিতে মানুষকে গাদ্দার মনে করা হয়েছিল। শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল মিটিং করা সাংবিধানিক অধিকার। তা আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের পার্টি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ চলছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির নেতা বলেন, ‘সাংবাদিকরা ভয়ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। নির্বিচারে আমাদের লোকদের ‘মিথ্যা মামলায়’ জড়ানো হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু, জামিন দেওয়া হচ্ছে না, আমরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছি।’ ভারতকে নিয়ে এক প্রশ্নে জিএম কাদের বলেন, ‘কোন আগ্রাসন এলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা তা প্রতিহত করব। এটার জন্য গলাবাজির দরকার নাই।’ ‘কেউ কেউ বলেন, আগ্রাসন এলে এক ইঞ্চিও ছাড় দেব না। কে আপনাকে ছাড় দিতে বলে? আমাদের দেশে আর্মি আছে, বিজিবি আছেন না?’ সভায় দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দেশে দ্রুত স্থিতিশীল অবস্থা দেখতে চায় বিএনপি: তারেক রহমান

সুষ্ঠু নির্বাচন চাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘ওই পর্যন্ত যেতে হলে সবাইকে ভূমিকা নিতে হবে। বিএনপি দেশে দ্রুত স্থিতিশীল অবস্থা দেখতে চায়।’ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ফরিদপুর বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তারেক রহমান আরো বলেন, ‘আলোচনার ভিত্তিতে ২৭ দফা ৩১ করা হয়েছে। কিন্তু, এই ৩১ দফাই সব কিছু না। যদি এর চেয়ে ভাল প্রস্তাবনা কেউ দেয় অবশ্যই আমরা গ্রহণ করব। জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে তখনই আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের সুযোগ পাব। প্রান্তিক মানুষের কাছে ৩১ দফা নিয়ে যেতে হবে।’সবার সম্মিলিত উদ্যোগ আর প্রচেষ্টা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা মানুষকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব কিন্তু আমার ও আপনাদের। স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে আমরা যে বাধ্য করেছি, এটা বিএনপি একা করেনি। সব শ্রেণিপেশা ও রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে স্বৈরাচার সরকার।’তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির মত একটি দল একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাইবে, এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। ওই পর্যন্ত যেতে হলে সবাইকে ভূমিকা নিতে হবে। এ অবস্থায় দেশে দ্রুত স্থিতিশীল অবস্থা দেখতে চায় বিএনপি।’ আওয়ামী লীগের আমলে কোন স্থানে জবাবদিহি ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দলটির নেতারাই বলেছেন, হাজার কোটি টাকা তারা পাচার করেছেন। দেশে জবাবদিহি থাকলে অর্থ পাচার সম্ভব ছিল না।’এখন মানুষের চিন্তাধারা পাল্টেছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশে একটি জবাবদিহির পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছি। শুধু কি সাংসদ-মন্ত্রীরা জবাবদিহি করবে তা নয়, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও সবাই জবাবদিহি করবে।’তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যেখানে দেশের মানুষ দেশের চিকিৎসকের কাছেই সেবা নিতে পারবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের মানুষ যেভাবে স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তেমনি জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হলেও দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ ‘প্রত্যেক নেতাকর্মীর সহযোগিতা আমার প্রয়োজন। জনগণকে আস্থায় রাখতে হবে। ঝড় আপনারা পার হয়ে এসেছেন। আমাদের মধ্যে কেউ কিছু কিছু ভুল করছেন। তাদেরকে সতর্ক করতে হবে। সাবধান করতে হবে ক্ষেত্রবিশেষে আমাদেরকে আরও কঠোর হতে হবে।’ যোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের আস্থা ধরে রাখার জন্য যে যে কৌশল নিতে হবে, প্রত্যেকটি কৌশল আপনারা ধারণ করবেন। আমাদের প্রত্যাশা হোক বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা জাতির জন্য কাজ শুরু করতে পারি। যেন জনগণের সমর্থনে সরকার গঠনে সক্ষম হই।’

দলীয় সমাবেশের মঞ্চে পলকের শ্যালিকা, বিএনপির নেতা আনুকে শোকজ

নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা বিএনপির জনসভার মঞ্চে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ডাক্তার ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে বসানোর ঘটনায় অবেশেষে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আনোয়ারুল ইসলাম আনুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা বিএনপি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আনুকে উত্তর দেয়া নির্দেশ দেয়া হয় ওই নোটিশে। নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজের স্বাক্ষরিক এ নোটিশ শনিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে দেয়া হয় বিএনপির সূত্র নিশ্চিত করা হয়। ফারজানা রহমান দৃষ্টি পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন এবং সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে সিংড়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারুল ইসলাম আনু। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী গোলাম মোর্শেদ। জনসভার মঞ্চের দ্বিতীয় লাইনে ফারজানা রহমান দৃষ্টি বসে ছিলেন। মঞ্চের এই বসে থাকার ছবি সমাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ সাধারণ কর্মীরা গেল ১৫ বছর নির্যাতিত হলেও এই সুবিধাবাদী লোকজন সব সময় সুবিধায় থাকে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনু জুনাইদ পলকের চাচা শ্বশুর হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। তাই, এখন আওয়ামী লীগের সুবিধাপ্রাপ্ত ফারজানাকে বিএনপির বানানোর চেষ্টা করছেন আনু। তবে, ফারজানা রহমান দৃষ্টির দাবি, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে মঞ্চে তুলে নেয়া হয়। এ নিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম আনু জানান, তিনি এখনও নোটিশ হাতে পাননি। মৌখিকভাবে তিনি জেনেছেন।

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণার দাবি মোশাররফের

অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিন বলেছেন, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। তাহলে পরাজিত শক্তির সব চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।’ শনিবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এনপিপির আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সংস্কারের কথা বলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকলে ষড়যন্ত্র ও অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে দাবি করে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘কেউ যাতে আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে, তা নিশ্চিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’নির্বাচনী রোডম্যাপ দিয়ে জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। তাহলেই চক্রান্তকারীদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে বলেও মনে করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি আরো বলেন, ‘অবিলম্বে জনণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কারণ, ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করতে না পারলে জনগণ তাদের বিদায় করবে।’অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে অস্থিরতা আরও বাড়বে। জনগণকে নির্বাচনেরমুখী করা গেলে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা সম্ভব বলেও দাবি করেন তিনি।

আ.লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না বললেন নুর

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে দেশে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে তার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নতুন দেশ পেয়েছি, সেখানে কেউ কেউ ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের ফিরিয়ে আনার কথা বলছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে ভারতের তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা সবাই যেন এক থাকতে পারি সে লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরের ফকির বাড়ি লেনে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হক নুর বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সবাই নিজ নিজ কাজে ফিরে গেছে কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে পরাজিত শক্তি যেকোনো সময় ফিরে আসতে পারে তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়াগুলো পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যেখানে হিন্দু ভাইদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, নিপীড়ন হচ্ছে- এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর হতে পারে না। তিনি বলেন, ভারতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনে হামলা করেছে। এক দিকে অপপ্রচার অন্য দিকে হামলা এসব করে ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। আমরা বলছি দুই দেশের সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে, তাহলে ভারত কেন বিরূপ আচরণ করছে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে যে দানবীয় রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল তার পরিবর্তনের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল। রাতারাতি নির্বাচন হলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না। আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই। সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনে করে দেশ সংস্কারকে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারের সব দলের প্রতিনিধি থাকলে তখন রাস্তায় আর আন্দোলন হবে না এবং সবার অংশগ্রহণ থাকলে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে। চাঁদাবাজির বিষয়ে নুর বলেন, আওয়ামী লীগের মত এখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলও চাঁদাবাজি করছে। এই নতুন বাংলাদেশে কোনো চাঁদাবাজি, দখলদারি চলবে না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ভারত শেখ হাসিনাকে দিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায়: রিজভী

শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভারত নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খুনি শেখ হাসিনার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সবাই মায়াকান্না করছে। ভারত তাদের নিজস্ব স্বার্থ শেখ হাসিনাকে দিয়ে রক্ষা করতে চায়। ইসকনকে দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তাদের সব মায়াকান্না শেখ হাসিনার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশকে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই। যারা অপরাধ করেছেন, যারা নির্দেশ রক্ষা করার জন্য ছাত্র-জনতাকে গুলি করেছে তাদের কারও ক্ষমা নেই। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বার্ন ইনস্টিটিউটে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন রিজভী। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনাকে আগলে রাখতে গিয়ে কীভাবে রক্তপাত করা হয়েছে হাসপাতালে না এলে বোঝা যায় না। যারা শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে তাদের এসব দেখা উচিত। রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়া থেকে শুরু করে সবাই অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভারতের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, হিংস্র ঘাতক ও রক্ত পিপাসুরা ওই দেশে বাস করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের বাড়িঘর পোড়ানো হচ্ছে মিথ্যার বেড়াজালে। তারা হিংসা, প্রতিহিংসার জ্বালায় প্রতিনিয়ত পুড়ছে। তাদের কাছে বাংলাদেশের মানুষের কোনো মূল্য নেই। তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার শেখ হাসিনাকে দিয়ে নানারকম ষড়যন্ত্র করছে। হাইকমিশনে হামলা করে তারা শেখ হাসিনার জ্বালা মেটাচ্ছেন। শেখ হাসিনার বিচার প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। তাকে যে রক্ষা করতে চাইবে, তাদেরও ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। কোনো হুমকি-ধামকি দিয়ে বিচার থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।

আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করলে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে: দুলু

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করলে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। বাংলাদেশের ফেরাউন-নমরুদ হচ্ছে শেখ হাসিনার দোসররা। তাদের ক্ষমা করা যাবে না। বাংলাদেশে তারা এত অন্যায়, জুলুম ও অত্যাচার করেছে যে, তাদের নামও কেউ মুখে মুখে নিতে চায় না।’আজ শুক্রবার বিকেলে নাটোরের সিংড়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।এ সময় দুলু বলেন, ‘পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চায়। বাংলাদেশে উসকানি দিচ্ছে ওই স্বৈরশাসক কালো শক্তি, যাদেরকে জনগণ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা উৎখাত করে বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। যাদের নেত্রী এখন চোরের মতো পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।’বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, ‘ওখানে বসে বাংলাদেশে হিন্দু-মসুলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, আমরা এক সঙ্গে বসবাস করি। আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করে স্বৈরশাসককে আবারও নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এটা কোনো দিন হতে দেবে না জনগণ।’সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর সভাপতিত্বে কোর্ট মাঠে আয়োজিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম, ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন, সিংড়া আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামীম হোসেন।

আ.লীগ-জাপা ও তাদের দোসররা রাজনীতি করতে পারবে না

বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের দোসররা কেউ রাজনীতি করতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাশেদ খান বলেন, ‘যারা ভারতে বসে নাটাই ঘোরায়, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নাক গলায়, দিল্লিতে বসে বাংলাদেশকে ক্ষমতায় আসবে কি আসবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের ষড়যন্ত্র আর কূট-পরিকল্পনা রুখে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশে মোদির আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলন আমরাই করেছিলাম। দিল্লির কসাই মোদির হাতে মুসলমানদের রক্ত লেগে আছে। তাকে প্রতিহত করতে সেদিন গণঅধিকার পরিষদ মাঠে নেমেছিল এবং জেল জুলুমের শিকার হয়েছিল।’ সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দলকে বিচারের মুখোমুখি না করা পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট ১৪ দলের কোনো নেতাকর্মীকে ডামি-আমি ও স্বতন্ত্র পদে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। খুনি হাসিনাকে গণহত্যা ও গণতন্ত্র হত্যার দায়ে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে।’ সরকার হাসিনার দলের সঙ্গে সমঝোতা করলে এবং তাদের নির্বাচনের মাঠে নামালে সরকারের বিরুদ্ধেও মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেন রাশেদ। গণঅধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করতে ঘন ঘন অডিও ফাঁসের নাটক করছেন। এই নাটক বন্ধ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমে পতিত স্বৈরাচার হাসিনার অডিও প্রচার বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘কেউ স্বীকার না করলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুলাই গণঅভ্যুথানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি সর্বশক্তি দিয়ে ছাত্রদের সামাজিক আন্দোলনকে রাজনীতিকরণ করে হাসিনা পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করেন। তারেক রহমান একটি ইতিবাচক চিন্তার জায়গা থেকে আমাকে (রাশেদ খান) সহায়তা করতে ঝিনাইদহ বিএনপি নেতাদের চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা হাইকমান্ডের এই চিঠির মর্মার্থ বুঝতে ভুল করে আমাকে অসহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ঝিনাইদহ বিএনপি হাইকমান্ডের নির্দেশ মানছেন না। কার্যত তারা তারেক রহমানকেই মানেন না। তাহলে তারা কিসের দল করেন?’ তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা এমপি মন্ত্রী তৈরি করি, এমপি-মন্ত্রী বানাই। গণঅধিকার পরিষদ ছাত্র আন্দোলনের কারখানা। তারা ক্ষমতায় যেতে রাজনীতি করে না, পরিবর্তনের জন্য আমরা রাজনীতি করি।’ রাশেদ খান আরও বলেন, ‘আমাকে সহায়তা করতে তারেক রহমানের এই চিঠি নিয়ে যারা নোংরা খেলায় মেতেছেন, তারা ছাত্র-জনতার বিপ্লবে বিশ্বাস করে না। এমনটি করলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে। তখন কেউ রেহাই পাবেন না। এ থেকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’ রাশেদ খাঁন অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহে দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধ চলছে। আমরা তো এসব করার জন্য বিপ্লব করিনি। এসব কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখুন। কেউ হুমকি দিলে আমি রাশেদ খাঁন আপনাদের জন্য বুক পেতে দেব।’ গণঅধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম আশিকুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, মিশন হোসেন ও রিহান উদ্দীন রায়হান। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রঅধিকার পরিষদের নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

দেশপ্রেমিক শক্তি এক থাকলে ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না: খন্দকার মোশারফ

দেশপ্রেমিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না হলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই মন্তব্য করেন তিনি। স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ।ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশ থেকে পালিয়ে যারা বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারাই দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ভারতে বৈধভাবে নয়, অবৈধভাবে আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখান থেকে ষড়যন্ত্র করবে সেটাই স্বাভাবিক।এই সরকারকে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ তাদের। এরপরই দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, অন্তরবর্তী সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা।সভায় বিএনপির নেতারা বলেন, পরাজিত শক্তিরা দেশে ও বিদেশে নানা অস্থিতিশীলতা তৈরি করে চক্রান্ত করছে। দেশপ্রেমিকও জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাদের মোকাবেলা করবে।

বৈষম্যবিরোধী ও শিবিরকে নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করলো ছাত্রদল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বানে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা হয়েছে। সেখানে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মতবিনিময় সভায় দাওয়াত না দেয়া নিয়ে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। এ নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেছে ছাত্রদল। আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সাথে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, তাই তাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান রয়েছে বলে তিনি জানান।জানা গেছে, সভাটি বিকেল চারটায় শুরু হয়ে প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা অবধি চলে। এটি গ্লোরিয়াস পার্টি সেন্টার, কাটাবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছাত্ররাজনীতির সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরর বিষয়ে নাছির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। তবে আমরা দেখেছি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সকল রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে শুধু তারাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, তারাই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।‘ছাত্রদল দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত, সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের নেতা -কর্মী- সমর্থক আছে, শুধু আমরাই ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে সর্বস্তরের ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করি। সেই হিসাবে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সংস্কার এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যাতে মুষ্টিমেয় কিছু ছাত্রদের হাতে বন্দী না হয়ে যায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’তিনি আরও বলেন, আমরা যেহেতু আরও অনেকগুলো ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি, আমরা সেই ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে মতবিনিময় করে তাদের মতামতও জানার চেষ্টা করেছি। আমরা দেখেছি, সবাই আমাদের সাথে একমত যে গণ-অভ্যুত্থানের পরে সবার প্রতিনিধিত্বের বদলে একটা অংশের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করার আহ্বান জানাচ্ছি।শিবিরকে সভায় না ডাকার বিষয়ে তিনি বলেন, শিবিরের রাজনৈতিক পলিসি হচ্ছে -পার্টলি ওপেন, মোস্টলি সিক্রেট। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজনীতিকে গোপনীয়তার দিকে নিয়ে যাওয়া। এইজন্য শিবিরের সিক্রেট উইং ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।নাছির বলেন, জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীনও তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছে, আবার গণ-অভ্যুত্থানের পরেও তারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবীতে ষড়যন্ত্র করেছে। শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, যা একটি আত্মঘাতী পদক্ষেপ। আমরা ছাত্ররাজনীতির সামগ্রিক স্বার্থে শিবিরের কার্যক্রম নিয়ে সন্দিহান।

ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা এখনো দেশে বিরাজমান: সালাউদ্দিন টুকু

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, বিএনপির পরিচয়েই আমরা বেঁচে থাকতে চাই। বিগত দিনে ১৭টি বছর আপনারা অনেকেই নির্যাতিত, নিপীড়ন ভোগ করেছেন। আজকে সেই নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চলতে হবে আমাদের। ক্ষমতায় থাকার সময় একটি দল থাকে, কিন্তু কর্মীরা সারাজীবন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে।শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শামছুল হকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আজকে স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে, ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে।কিন্তু সেই ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশে বিরাজমান। কাজেই তারা সুযোগ খুঁজছে আমাদের মাঝখান থেকেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। অনেকেই মনে করতে পারেন, দল ভারী করার জন্য পাশে কাউকে আশ্রয় দিয়ে দল ভারী করবেন। কিন্তু ভারী করার কিন্তু প্রয়োজন হয় না। কারণ যারা দুর্দিনে থাকে এবং যারা নেতাকর্মীর খোঁজখবর রাখেন তার পেছনে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকের। আমরা জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শকে বুকে ধারণ করে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হয়ে আমরা জাতীয়তাবাদী দলের কর্মী। এটাই হচ্ছে আমাদের বড় পরিচয়। এ পরিচয় নিয়েই আমরা গর্ববোধ করি এবং পথ চলতে চাই।সব নেতাকর্মীকে উদ্দেশ্য করে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চলবো আগামী দিনে। কারণ গণতন্ত্রের যে বিজয়, পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন করতে এখনো আমরা সক্ষম হয়নি। একটি পথ আমরা অতিক্রম করেছি, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। আরেকটি নির্বাচনের মধ্য দিয়েই মানুষের ভোটের অধিকার যখন প্রতিষ্ঠিত হবে, একটি নির্বাচিত সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসবে বা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে তখনি গণতন্ত্রের যে মূল বিজয়, সেই বিজয় অর্জন করতে আমরা সক্ষম হবো।শামছুল হক স্মৃতি সংসদের সভাপতি শ্যামল হোড়ের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানুসহ অন্যান্য নেতারা

অপশক্তির পুনরুত্থান রোধে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপুল তরঙ্গ ৫ আগস্ট আওয়ামী অপশক্তিকে প্রতিহত করে। পরাজিত এই অপশক্তির পুনরুত্থান রোধে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে তিনি গণমাধ্যমে এই বাণী দেন। বাণীতে তারেক রহমান বলেন, ৬ ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এ দিনে দীর্ঘ নয় বছরের রক্তস্নাত আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিল স্বৈরশাসনের। এরশাদ ’৮২-এর ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র নস্যাৎ ও সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতির পথচলা স্তব্ধ করেছিলেন। যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় ও বহুমাত্রিক, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। স্বৈরাচারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। দীর্ঘ ৯ বছর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ’৯০-এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র। সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ঙ্কর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর আবারও গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। শেখ হাসিনার দুঃশাসনে বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন নামিয়ে আনা হয়েছিল। দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে অত্যাচার-নির্যাতনের অক্টোপাশে আঁকড়িয়ে রাখা হয়েছিল। সারা দেশকে শ্বাসরুদ্ধকর কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। আজকের এ দিনে আমি ’৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বৈরাচারী এরশাদের দল আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে দীর্ঘ ১৬ বছর একত্রিত হয়ে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মানুষের মৌলিক মানবাধিকারকে ক্রমাগতভাবে হরণ করেছিল। তারা নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল। ৫ আগস্ট এই অপশক্তিকে প্রতিহত করে ছাত্র-জনতার বিপুল তরঙ্গ। এই পরাজিত শক্তির যাতে পুনরুত্থান না ঘটে, সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।

হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় উগ্রবাদীরা উৎসাহ পাচ্ছে

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় আগ্রাসন, অপপ্রচার ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় উগ্রবাদীরা উৎসাহ পাচ্ছে। হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা সৃষ্টি করার উসকানিদাতাদের পক্ষ নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোন অপতৎপরতার জবাব দেবে জনগণ।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্টের দোসররা এখনো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তের অংশ হিসেবে আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র রুখতে হলে জনপ্রতিনিধি দরকার।’ সেই জন্য অবিলম্বে সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান ফারুক। বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোফাজ্জল হোসেন হৃদয় সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হক, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু, শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকী, সহ-সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, কর্মজীবী দলের আলতাফ হোসনে সরদার, বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ আলী মিঠু, শফিকুল ইসলাম সবুজ, তোফায়েল হোসেন মৃধা, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. মুসা ফরাজী, মাদারীপুর জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার মাতব্বর, মটর চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অহিদুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমান, মনির হোসেন বেপারী, আমির হোসেন দানেশ, ইউসুফ আলী বাচ্চু, জাকির হোসেন, সিরাজুল ইসলাম।

আমান উল্লাহ আমানের সাত বছরের কারাদণ্ড হাইকোর্টে বাতিল

চাঁদাবাজির মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে মুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী নাজমুল হুদা। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তারেক ভূঁইয়া। ২০০৭ সালের ৬ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পূর্ব আগানগরের রফিকুল আলম নামের ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগে এ মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৬ জুনের এক ঘটনায় ২০০৫ সালে দুই পর্বে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ আমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ৮ মে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন আমান।

নতুন প্রজন্মের হাতে ঐক্যবদ্ধ জাতি তুলে দিতে চাই: টুকু

সচেতন না হলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়বে বলে দাবি করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু। তিনি বলেছেন, এখন বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রত্যকটি নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। টুকু বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও আমরা স্বাধীনতা রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যে আন্দোলন সংগ্রাম করছি,সকলের ঐক্যের মধ্য দিয়েই তার সফলতা আমরা দেখতে পাব। এইজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা নতুন প্রজন্মের হাতে ঐক্যবদ্ধ জাতি তুলে দিতে চাই। যেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলমান একসঙ্গে বসবাস করবে। সবাইকে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। একজন নাগরিক হিসেবে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে। সকল মানুষকে সম্মান ও ভালোবাসতে হবে। আমরা সম্প্রীতি, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস ও শোষণ মুক্ত বাংলাদেশ চাই। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে, দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই নতুন বাংলাদেশে একটি সুন্দর সমাজ গড়তে চায় বিএনপি। টুকু বলেন, যারা শেখ হাসিনার দোসর ছিল, যারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য চেষ্টা করেছে, তারা দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে এবং ড. ইউনুসের কাছে দাবিও জানাচ্ছে। ছাত্রলীগ যুবলীগ রিকশাওয়ালা হয়ে আসে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন, যারা জুলাই-আগস্ট গণহত্যা চালিয়েছে, যারা বাকশাল কায়েম করেছে, যারা ব্যাংক লুট করেছে, যারা এদেশের সাধারণ জনগণের টাকা লুট করে কানাডায় বাড়ি করেছে, অবিলম্বে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য ও নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইল বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য চেয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশের পক্ষে মত দিয়েছে দলটি। নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ হলে কেউ আর ষড়যন্ত্র করার সাহস পাবে না। বৈঠক শেষে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করা হয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্রও এ দেশের ছাত্র-জনতা মিলে মোকাবিলা করব।’ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অংশ নেয় বিএনপির প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ। বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন বিষয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের ইস্যু তৈরির প্রেক্ষাপটে দেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সহযোগিতা চাইতে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করেন।’ খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিসেম্বর মাসে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি ও শান্তিশৃঙ্খলার জন্য স্বাধীনতা পেয়েছে। আজকের এই বিজয়ের মাসে আমাদের সবার প্রত্যয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করা।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব এ দেশে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। দেশের বিরুদ্ধে পতিত সরকার বিদেশ থেকে যে ষড়যন্ত্র করছে, তার বিরুদ্ধে সবাই ঐকমত্য পোষণ করেন। ষড়যন্ত্র করে দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা হচ্ছে দাবি করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেছি, ফ্যাসিস্ট সরকারকে যারা সহযোগিতা করছে, তাদের ষড়যন্ত্র আমরা সবাই মিলে মোকাবিলা করব।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এ সরকার ওয়াদাবদ্ধ। আমরা বলেছি, দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করে নির্বাচনের জন্য একটা রোডম্যাপ দিতে। জনগণ রোডম্যাপ পেয়ে নির্বাচনমুখী হলে যেসব ষড়যন্ত্র এখন আপনারা দেখছেন, কেউ আর সেটি করার সাহস পাবে না।’

বহু ষড়যন্ত্র চলছে, অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘কেউ যদি মনে করেন, আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমরা যাদের ভাবতাম, তারা মাঠে নেই বা দুর্বল, আল্লাহর ওয়াস্তে এ কথা মন থেকে সরিয়ে দিন। আগামী নির্বাচন বহু কঠিন হবে। যদি আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মাঠে থাকত বা থাকতে পারত, সেক্ষেত্রে নির্বাচন যতটা কঠিন হত, তার চেয়েও আগামী নির্বাচন আরও কঠিন হবে। এখানে বহু ষড়যন্ত্র চলছে, বহু অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে।’ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম সিটির লালখান বাজারস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠমো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় তারেক রহমান আরো বলেন, ‘আপনি যেহেতু বিএনপির প্রতিনিধি, আপনার বিরুদ্ধে বহু ষড়যন্ত্র চলছে, একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন। আপনি ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল কিংবা স্বেচ্ছাসেবক দল, যা-ই হোন না কেন, আল্লাহর ওয়াস্তে এটা একটু চিন্তা করুন যে, বহু ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে ফেলতে হয়, এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে আসতে হয়, আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। আমাদের ধৈর্যশীল হতে হবে, আচরণ সেরকম হতে হবে।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না নিশিরাতের নির্বাচনে, ব্যালট চুরির নির্বাচনে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ম্যান্ডেটে। আমরা সেই নির্বাচনে বিশ্বাস করি, যেখানে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে, স্বচ্ছভাবে, সুন্দরভাবে, নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে ভোট দেবে। সেটা অর্জন করতে হলে আপনাদের বহু কিছুর পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের আচরণ, চলাফেরা, কথাবার্তা পরিবর্তন করতে হবে। বারে বারে আমি বলছি, আপনারা জনগণকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের সঙ্গী হোন।’ তারের রহমান আরও বলেন, ‘আমরা কেউ ক্ষমতায় যাব না, আপনারা কেউ কিন্তু ক্ষমতায় যাবেন না, আপনারা মানুষের সমর্থন পেলে দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবেন। মানুষ আপনাদের ক্ষমতা দেবে না, মানুষ আপনাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দেবে। পার্থক্যটা বুঝতে হবে। ক্ষমতায় ছিল পলাতক স্বৈরাচার। ওরা জনসমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়নি। ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় ছিল। আমরা দেশ পরিচালনার সুযোগ পেতে চাই জনগণের সমর্থন নিয়ে।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে ১৫ বছরে আমাদের দেশের ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে অবৈধভাবে পাচার হয়ে গেছে। ১৫ দিনের মধ্যেই তা সরকার আবিষ্কার করতে পেরেছে। এর মানে ভেতরে আরো বহু কিছু আছে। যদি ভেতরে আরো গভীরভাবে... তাহলে দেখা যাবে দেশের কয়েক বছরের বাজেটের টাকার সমান টাকা চলে গেছে। পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানি লন্ডারিংয়ের টাকা আন্তর্জাতিক ফোরামের সঙ্গে একটা সামঞ্জস্যের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার লোকাল ফোরামের মাধ্যমে কথাবার্তা শুরু করেছে। আমরা দেখব, অবজারভ করব, তারা সেটা কতটুকু করতে পারেন। যদি পারেন তাহলে ভাল, আমরা সেটাকে স্বাগত জানাবে। আর কী পারেন, সেটা দেখে জনগণ যদি আমাদের ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দেন; তাহলে বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বন্দোবস্ত করেই ছাড়ব।’ তারেক রহমান আরও বলেন, ‘অবশ্যই আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামের সহযোগিতা নেব। তবে, এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে যে প্রাইভেট সংস্থাগুলো আছে; তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। আমাদের দেশের সম্পদ (পাচার হওয়া টাকা) দেশের মানুষের সম্পদ যে এনে দিতে পারবে; আমরা তার সঙ্গেই কথা বলব-বসব।’

দুয়েক দিনের মধ্যে সুখবর আসছে, জানালেন জামায়াতের আমির

দেশবাসী আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে সুখবর পেতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ শেষে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমি থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এই কথা জানান।সংলাপের বিষয়ে শফিকুল রহমান বলেন, ‘অপপ্রচার মোকাবিলায় আমরা সরকারের সাথে কাজ করব।’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কারও পাতা ফাঁদে পা দিব না। কারও কাছে মাথা নত করব না, আবার সীমালঙ্ঘনও করব না। দুয়েক দিনের মধ্যে সুখবর পাবেন, আশা করি।’সরকারকে সহযোগিতা করছেন জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোন ছাড় নয়। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ। সরকার যাতে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়, সেটার জন্য আমরা সহযোগিতা করব।’জামায়াতের আমির বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে বিজয় এসেছে, চলমান ষড়যন্ত্রও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’এর আগে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল সোয়া চারটার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দেশের চলমান নানা ইস্যুতে আলোচনার জন্য বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসেন মুহাম্মদ ইউনূস।বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসতে শুরু করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচজনের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেন। অন্যরা আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং এজেডএম জাহিদ হোসেন।অন্য দিকে, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে চারজনের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেন।ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ সেখানে পৌঁছান। তবে, কর্নেল অলি ফেরত চলে যান। দল জানিয়েছে, তালিকায় নাম না থাকায় তিনি ঢুকতে পারেননি।এছাড়া, অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন সংলাপে। তবে, সংলাপে জাতীয় পার্টিকে সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে।এর আগে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যমুনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক: অতিথি তালিকায় ছিল না নাম, ফিরে গেলেন অলি আহমদ

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করছেন। এতে অংশ নিতে গিয়েও আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় নাম না থাকায় ফিরে গেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। একই কারণে ফেরত যেতে হয়েছে দলটির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা রেদোয়ান আহমেদকেও। এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে সরকারের শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের আমন্ত্রণে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল তিনটার পর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে যান অলি আহমদ ও রেদোয়ান আহমেদ। পরে অতিথি তালিকায় নাম না থাকার বিষয়টি জানানো হলে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে সেখান থেকে ফেরত যান তারা। এ দিন বিকাল সোয়া চারটার পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠক শুরু হয়। সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক বলেন, ‘প্রবেশপথে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সেখানে অতিথি তালিকায় তাদের নাম নেই। পরে তারা অনুষ্ঠানস্থলে না গিয়ে বাসায় চলে আসেন। এরপর উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান যোগাযোগ করলেও তারা আর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাননি।’ তিনি জানান, ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে এলডিপির সভাপতি ও মহাসচিবকে দাওয়াত দেন আদিলুর রহমান খান। দাওয়াত দিয়েও অতিথি তালিকায় কেন নাম রাখেনি সেটা সরকার ভাল বলতে পারবে।’ এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম, এবি পার্টি ও খেলাফত মসলিসের প্রতিনিধিরা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, দেশের চলমান নানা ইস্যুতে এ বৈঠক হবে। চলমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, ছাত্রনেতাসহ সবার কাছে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আজ বসেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। কাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে বসবেন তিনি।

নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দিল এবি পার্টি

নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারে নিজেদের মতামত ও প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বদিউল আলম মজুমদার ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আলী রিয়াজের কাছে এসব মতামত ও প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল নির্বাচন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনে দলের মতামত ও প্রস্তাবনা জমা দেয়।’প্রতিনিধি দলের অন্যরা হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, বিএম নাজমুল হক, ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমদ ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, মো. আলতাফ হোসাইন, ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক, ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি। অন্য দিকে, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের পক্ষে তোফায়েল আহমেদ, মো. আব্দুল আলীম ও নেসার আমীন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এবি পার্টি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে আশা করে, এই প্রস্তাবনাগুলো দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মমতার মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ, মন্তব্য রিজভীর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও মনে মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ পোষণ করেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ভারতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন পর্যন্ত মিছিল-সমাবেশ করে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্ট। মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তৃতা করেন রিজভী। সমাবেশে রুহুল কবির বলেন, ‘বিজেপি গোঁড়া হিন্দুত্ববাদকে পুঁজি করে ক্ষমতায় এসেছে। তাই, হিংসা ছড়ানো ছাড়া তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার কোন উপায় নেই। বিজেপি বিদ্বেষের নীতি নিয়ে রাজনীতি করতে চায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও ওনার মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ। সাম্প্রদায়িক বিজেপি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিনি।’ ভারতের মিডিয়া খেয়ে না-খেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন মেনে নিতে না পেরে মোদির মিডিয়া একেক সময় একেক বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার লুটের ২৮ লাখ কোটি টাকার ভাগ বিজেপির কোন কোন নেতা কত টাকা পেয়েছে তা-ও বাংলাদেশের মানুষ আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘সব দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের মর্যাদা দেয় বাংলাদেশ। ভারত সম্প্রসারণবাদের বিস্তার করে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কবজা করার চিন্তা করলে বোকার স্বর্গে বাস করছে। হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলে দিল্লির দাসত্ব খান খান করে দেব।’ আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের পতাকা নামিয়ে ভারতের সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী করোনার চেয়ে বড় আঘাত করেছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।