আমিরাতে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাবের পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত
- প্রকাশঃ ০৫:৫৪ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
সাইফুল ইসলাম তালুকদার, সংযুক্ত আরব আমিরাত: সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব করেছে ‘বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব ইউএই’। শনিবার (৩০ নভেম্বর) শারজাহ মাদাম ওয়াইএস ফার্ম হাউসে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবে হরেক রকম পিঠার চমৎকার আয়োজন ও পরিবেশন নজর কাড়ে ভিনদেশী দর্শনার্থীদেরও। ছিল নকশী পিঠা, ভাঁপা পিঠা, সেমাই পিঠা, পাকোন পিঠা, রসে ভেজা পিঠা, সুজি পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, পুলি পিঠা, তেলের পিঠা, দুধ চিতই পিঠা ও পায়েসসহ ৩০ প্রকার পিঠা।
ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা লিজা হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সাদিয়া আবছার শারমিন ও রাখি মহসিনা তানিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লাবণ্য আদিল, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাদিয়া আফসার ও নিশাত জাহান চৌধুরী নিশু, কো-অর্ডিনেটর শারমিন রাখী, উপদেষ্টা ইয়াসমিন মেরুনা, জেসমিন আক্তার, রোমানা আক্তার ও শরিফা সৈনিক, এক্সিকিউটিভ শবনম আক্তার, সালমা শাফায়েত ও তানিয়া আহমেদ, টিম লিডার সাঈদা আহমেদ নওরিন, মহসিনা তানিয়া, ঈশিকা মাজহার, সাথী আলী, ঈশিকা পারভিন, নাসরিন আক্তার, রুমানা বর্ণি, কামরুন নাহার ও ফাহমিদা সুলতানা।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন আরব আমিরাত আইক্যাব শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি আহমেদ আলী জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন দুবাইয়ের সহ-সভাপতি ইয়াকুব সৈনিক, প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির (প্রসাস) সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার।
খেলাধুলা পর্বে ছিল ছোট ছেলে-মেয়েদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও মহিলাদের বালিশ খেলা। শেষে খেলাধুলায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আহমেদ আলী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাদের নারীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রবাসে এগিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা খুবই উৎসাহিত। তাদের এ অগ্রযাত্রা এভাবে আরো এগিয়ে যাবে, সে কামনাই করি। সংযুক্ত আরব আমরাতে বাংলাদেশী লেডিস ক্লাব বড় সংগঠন। এই সংগঠন গত ছয় বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও তারা নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে বহির্বিশ্বে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তারা আরো সুনাম অর্জন করবে।’
ইয়াকুব সৈনিক বলেন, ‘বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব প্রবাসের বুকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি কালচার তুলে ধরছে। প্রবাসের মাটিতে পিঠা উৎসব, বাংলাদেশী কালচার, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে। আমিরাতে বাংলাদেশি পুরুষের পাশাপাশি লেডিস ক্লাব পিছিয়ে নেই। তারা বাংলাদেশি পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে কমিউনিটির জন্য কাজ করছে।’
লিজা হোসাইন বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছি। বিভিন্ন সমাজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি অংশ নিয়ে থাকি। প্রবাসে বাংলাদেশের অসংখ্য মহিলা আছেন। তারা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন না। তাদের কথা মাথায় রেখে ছয় বছর আগে আমরা লেডিস ক্লাবের সূচনা করি। বাংলাদেশি সংস্কৃতি প্রবাসের মাটিতে তুলে ধরার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ লেডিস গ্রুপে দুই হাজার ২০০ সদস্য রয়েছে। এখানে আবুধাবি, দুবাই, আল-আইন, রাস আল খাইমা, সারজাহ, আজমান, ফুজিরাসহ প্রত্যেক স্টেটে একজন করে প্রতিনিধি রয়েছে। প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যই আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
লাবণ্য আদিল বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরের মত এবারো নবান্ন উৎসব করেছি। নবান্নকে বরণ করার জন্য আমাদের আজকের এই আয়োজন। বাংলাদেশে বসবাস করার কারণে আমরা নবান্নের স্বাদটা দেখে বড় হয়েছি। আমাদের সন্তানদের অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মকে নবান্ন বা পিঠা উৎসব পরিচয় করাতে চাই।’
নিশাত জাহান চৌধুরী নিশু বলেন, ‘বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব একটি নারী সংগঠন। এবারের উৎসবে বাচ্চাদের চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা, মহিলাদের পিলো পাসিং ও পিঠা উৎসব ছিল। আমরা চেষ্টা করি, আমাদের সন্তানের দিকটা বিবেচনা করে তাদেরকে এই পিঠা-পুলির সাথে পরিচয় করাতে। ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। নিত্য নতুন অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা আসব।’
সাদিয়া আফসার বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতেও আমরা এই উৎসবসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য, চিরায়ত বাংলার মুখ তুলে ধরতে আমাদের প্রস্তুতির কমতি ছিল না। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের এই অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নেয়।’