
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেন ও স্ক্যানিং অপারেটর সুমন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন ভূইঞা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
খবর পেয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তুহিন হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সোমবার (১০ নভেম্বেবর) বেলা ১১টার দিকে গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত ও পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উথান নির্বাচন অফিসে যান। তাদের কথা-কাটাকাটির সময় একজন কর্মী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনের ওপর আঘাত করে। পরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে, বিএনপি নেতাদের কর্মী-সমর্থকরা অফিসে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, সকালেই প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন নেতা-কর্মী হঠাৎ অফিসে প্রবেশ করে অফিসার ও স্টাফদের মারধর করেন। এ সময় অফিস ভাঙচুর করা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলা হয়। অফিসের বাইরে তখনও শতাধিক নেতা-কর্মী অবস্থান করছিলেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, “উপজেলা নির্বাচন অফিসারসহ তিনজন আহত হয়েছেন। সম্প্রতি অফিসের কিছু দালাল চক্র সুবিধা পেত না, এজন্য হামলা হতে পারে।”
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “নির্বাচন অফিসার নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মে জড়িত। আমরা স্থানীয়দের সুরক্ষার জন্য অভিযোগ জানাতে অফিসে গিয়েছিলাম। আমাদের কেউ তাদের ওপর হামলা করেনি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম জানান, আহত আমজাদ হোসেন চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন এবং সেবা পেয়েছেন।
ইউএনও তুহিন হোসেন বলেন, “নির্বাচন অফিসের কাচের দরজা ভেঙে গেছে, একজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সরকারি অফিসে হামলা ও কর্মকর্তাকে আঘাতের জন্য মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “সরকারি অফিসে ভাঙচুর হয়েছে। অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জমা দেওয়া উচিত; অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গোপালপুর থানার ওসি মামুন ভূইঞা যোগ করেন, “একজন আহতকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”