
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় আবারও হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই বসতঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুটি ঘরের সাতটি কক্ষ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। সুখ শীল বর্তমানে দুবাই প্রবাসী এবং অনিল শীল পেশায় দিনমজুর। আগুন লাগার সময় উভয় পরিবারের মোট আটজন সদস্য ঘরে ছিলেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ৪টার দিকে রাউজান পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম সুলতানপুর গ্রামে সুখ শীল ও অনিল শীলের মালিকানাধীন দুটি ঘরে আগুন লাগে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা যায়, টিন ও বাঁশের বেড়া দেওয়া ঘর দুটিতে রাতের খাবারের পর সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ রাত পৌনে ৪টার দিকে আগুনের তাপে ঘুম ভেঙে গেলে তারা বের হতে চাইলে দেখেন, বাইরে থেকে দরজা বন্ধ। পরে বাধ্য হয়ে বেড়া কেটে ঘর থেকে বের হন এবং প্রাণ রক্ষা করেন।
অনিল শীলের ছেলে মিঠুন শীল বলেন, “ঘরের দুইটি দরজাই বাইরে থেকে হুক লাগানো ছিল। আগুনে পাসপোর্ট, আসবাবপত্র, ৮০-৯০ হাজার টাকা ও বহু মূল্যবান মালামাল পুড়ে গেছে। পরে বেড়া কেটে সবাই বের হতে পেরেছি।” মিঠুন তিন মাস আগে দেশে এসে বিয়ে করেছেন।
আগুনের খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রাহাতুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা। তারা ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারকে ২৫ কেজি চাল, পাঁচ হাজার টাকা ও কম্বল প্রদান করা হয়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ভোর ৪টার দিকে আগুনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দুর্বৃত্তরা ঘরের দরজায় বাইরে থেকে হুক লাগিয়ে আগুন দেয়। বাসিন্দারা বেড়া কেটে বের হন। পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঢেউয়াপাড়া গ্রামে এবং তার আগের দিন সদর ইউনিয়নের কেউটিয়া বড়ুয়াপাড়া গ্রামে একইভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এসব ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল।