
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর নোয়াখালীর হাতিয়ায় শামছু বাহিনীর প্রধান শামছুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে জাগলারচর দখলকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতায় মোট ছয়জনের মৃত্যুর খবর মিলল।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত শামছুদ্দিন (৫৮), যিনি কোপা শামছু নামে পরিচিত, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং ছায়দুল হকের ছেলে।
নিহতের বড় ছেলে ফখরুল ইসলাম জানান, বাবার সন্ধানে কয়েকজন আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে তারা জাগলারচরে যান। সারাদিন খোঁজাখুঁজির পর বিকেলের দিকে একটি কেউড়া বনের ভেতরে তার বাবার মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি জানান, মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলারচর দখল নিয়ে আলাউদ্দিন বাহিনী ও শামছু বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ও তীব্র সংঘর্ষ হয়। ওই দিন ঘটনাস্থল থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে জেলা সদর হাসপাতালে আরও একজন মারা যান। এতে পাঁচজন নিহত হলেও শামছুদ্দিন নিখোঁজ ছিলেন।
এই ঘটনায় নিহত অন্যরা হলেন— হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৩৬), জাহাজমারা ইউনিয়নের পাইকবাধা এলাকার মো. শামছুদ্দিনের ছেলে মো. মোবারক হোসেন সিহাড (২১), হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম লক্ষিদিয়া গ্রামের মৃত শাহী আলমের ছেলে হক সাব (৫৫), চানন্দী ইউনিয়নের মান্নান নগর এলাকার মৃত সেকুর ছেলে কামাল উদ্দিন (৩৮) এবং নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চর মজিদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবুল কাশেম (৫৭)।
আহতদের মধ্যে মো. সোহরাব (২৫) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খবির উদ্দিনের ছেলে। অন্য আহতরা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় শামছুদ্দিনের ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে হাতিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
লাশ উদ্ধারের বিষয়ে ওসি সাইফুল আলম বলেন, “কিছুক্ষণ আগে আমরা তথ্য পেয়েছি, বাগানের ভিতর শামছু প্রধানের লাশ পড়ে আছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”