নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে করা আপিলের অষ্টম দিনের শুনানি আজ বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে বিএনপির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রের পক্ষে শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২ নভেম্বর, ২৯, ২৮, ২৩ ও ২২ অক্টোবর। প্রথম দিন অর্থাৎ ২১ অক্টোবর এ শুনানি শুরু হয়েছিল। এরও আগে ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথকভাবে আপিল দায়ের করেন।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন এবং রিটটি খারিজ করেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রিটকারীরা আপিলের অনুমতি পান এবং ২০০৫ সালে আপিল দাখিল করেন। আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে রায় দিয়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করা হয়। ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়।
এরপর ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নাগরিক সংগঠন সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক; তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান; রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন।
একইভাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৬ অক্টোবর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
তাছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান।
বর্তমানে এ সব আপিল একত্রে শুনানি করছে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।