
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারের হত্যা মামলায় সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বিথীর রিমান্ড আরও চার দিন বাড়িয়েছে আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমে পাঁচ দিনের রিমান্ড চান, কিন্তু আদালত চার দিনের জন্য তা মঞ্জুর করেন। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর এই মামলায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল।
প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক আরিফ রেজা এই রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিথীকে গ্রেপ্তার করা হয় ১৫ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা কারাগারের বাইরে থেকে। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। তবে মামলার মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে ১৮ ডিসেম্বর পুনরায় রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ঠিক করা হয়।
শুনানিতে বিথীর পক্ষে তার আইনজীবী আদালতে বলেন, “তাকে এর আগে রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারপরও আবারও রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। পুনরায় রিমান্ড চাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। তার দুটো বাচ্চা আছে। আমি তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন চাইছি।”
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, “আগামীকাল তারেক রহমান দেশে আসছেন। সামনে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। সুতরাং এসব বিষয় নিয়ে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আছে। আসামি সুব্রত বাইনের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীর মেয়ে। এছাড়াও এ মামলায় তার কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। এজন্য তাকে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। এজন্য তার সর্বোচ্চ রিমান্ড চাই।”
আদালতে খাদিজা ইয়াসমিন বিথী নিজেই বলেন, “এ মামলার কোনো কিছুই আমি নই। আমার শিশু সন্তান আছে। আমার বাবা অপরাধী হতে পারে। তার জন্য তো আমি দায়ী না। আমার মেয়ে বাচ্চা আছে। তাকে এখন প্রতিবেশীরা লালন পালন করছে। আমার বাচ্চা কেনো অন্য মানুষের কাছে থাকবে? আমি জব করি। কাজ করে খাই। আমিতো কোনো অন্যায় করি নাই। আমার বাবা তো আইনি হেফাজতে আছে। সুতরাং আমাকে কেনো গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে পাঠানো হচ্ছে?”
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১৯ এপ্রিল রাতের দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’-এর সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ২১ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।
এই ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে আরিফ মারা গেলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তারের পর তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।