
দেশজুড়ে স্থবির হয়ে পড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা অবশেষে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে। চলমান আন্দোলন থেকে সরে এসে সাময়িকভাবে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকেরা, ফলে বুধবার থেকেই পরীক্ষার কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হবে।
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে চার দফা দাবিতে সোমবার থেকে কর্মবিরতিতে যান শিক্ষকরা। এর প্রভাবে ঢাকাসহ অধিকাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকাল ও আজ মঙ্গলবার বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ ছিল। রাজধানীর ফার্মগেটের গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুলে দুপুরের পরে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেণির নির্ধারিত পরীক্ষা সেদিন বাতিল হয়েছে।
দেশব্যাপী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন প্রায় সাত শ’, যার মধ্যে তিন শতাধিক নতুনভাবে জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশেষত পুরোনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোই কর্মবিরতির কারণে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আচমকা পরীক্ষার সময়সূচি স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
মঙ্গলবার রাতের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মবিরতি সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও পরীক্ষা যাতে অনিশ্চয়তায় না পড়ে, সেই দায়িত্ববোধ থেকেই তাঁরা শ্রেণিকক্ষে ফিরছেন। পাশাপাশি আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এছাড়া সমিতি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়।
শিক্ষকদের চার দফা দাবি হলো: সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে নবম গ্রেড নির্ধারণসহ পদসোপান ঠিক করা এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা; সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের অনুমোদন প্রদান; এবং ২০১৫ সালের মতো সহকারী শিক্ষকদের জন্য ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বেতন-সুবিধা পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশ।
শিক্ষক সমিতি আশা প্রকাশ করেছে যে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হবে এবং শিক্ষা কার্যক্রম আর বিঘ্নিত হবে না।