
মার্কিন চাপ উপেক্ষা করে ভারতকে অবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি জানান, দ্রুতবর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জ্বালানি চাহিদা পূরণে রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত থাকবে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, “ভারতকে তেল, গ্যাস, কয়লা এবং ভারতের জ্বালানি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী রাশিয়া। আমরা দ্রুতবর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।”
রাশিয়া থেকে তেল কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্বস্তির মুখে পড়েছে ভারত। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির ওপর শুল্ক চাপানোর পাশাপাশি তেল আমদানি বন্ধে চাপ বৃদ্ধি করেছেন। তবে পুতিন ও মোদি দুজনেই এসব মার্কিন চাপ উপেক্ষা করে নিজেদের জ্বালানি ও কৌশলগত অবস্থান অটুট রেখেছেন।
শুধু জ্বালানি নয়, প্রতিরক্ষা খাতেও সম্পর্ক গভীর করতে একমত হয়েছেন দুই নেতা। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বর্তমানে দুই দেশ উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির যৌথ গবেষণা ও উৎপাদনে একসঙ্গে কাজ করছে। মোদির ‘স্বনির্ভরতা’ উদ্যোগকে শক্তিশালী করতেই এই পুনর্গঠিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা।
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এটাই পুতিনের প্রথম ভারত সফর, যা কৌশলগত চাপের মুখে থাকা নয়াদিল্লির জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে। রাশিয়ার তেল ক্রয়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগের মধ্যেও পুতিনের সফর ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে আবারও সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে।
জ্বালানি সরবরাহে রাশিয়ার প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মোদি বলেন, “ভারত-রাশিয়া অংশীদারত্বের একটি শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হচ্ছে জ্বালানি নিরাপত্তা।” পুতিনকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করে তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা ২০৩০ পর্যন্ত অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচিতে সম্মত হয়েছি। এতে আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বৈচিত্র্যময়, ভারসাম্যপূর্ণ এবং টেকসই হবে।”
ভারতের সবচেয়ে বড় সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া। দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করেছে, যেখানে ২০২৪ সালে বাণিজ্য ছিল সর্বোচ্চ ৬৮ বিলিয়ন ডলার।