
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরাতে বড় অঙ্কের আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ যারা স্বেচ্ছায় নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন, তাদের প্রত্যেককে ৩ হাজার ডলার করে সহায়তা দেওয়া হবে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে।
ডিএইচএস জানায়, এর আগে অবৈধ অভিবাসীদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনে যে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হতো, তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম ছিল। বর্তমান প্রশাসন সেই অঙ্ক তিন গুণ বাড়িয়ে ৩ হাজার ডলার নির্ধারণ করেছে।

নগদ সহায়তার পাশাপাশি অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিনা মূল্যে বিমান টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএইচএস।
এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের উচিত এই উপহারটি গ্রহণ করে স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করা। তারা যদি তা না করেন, তাহলে আমরা তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করব। সেক্ষেত্রে তারা আর কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সুযোগ পাবেন না।’
অবৈধ অভিবাসীদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন সহজ করতে ট্রাম্প প্রশাসন চলতি বছরের মার্চে ‘সিবিপি হোম’ নামে একটি অ্যাপ চালু করে। এর মাধ্যমে অভিবাসীরা সহজেই দেশত্যাগের আবেদন করতে পারেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, জো বাইডেন প্রশাসনের সময় একই অ্যাপ ‘সিবিপি ওয়ান’ নামে পরিচিত ছিল, যা তখন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে আইনিভাবে প্রবেশে সহায়তার কাজে ব্যবহৃত হতো।

ডিএইচএসের হিসাব অনুযায়ী, একজন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার, আটক এবং জোরপূর্বক বহিষ্কার করতে সরকারের গড়ে প্রায় ১৭ হাজার ডলার ব্যয় হয়। সে তুলনায় ৩ হাজার ডলার দিয়ে স্বেচ্ছায় ফেরত পাঠানো সরকারের জন্য অনেক বেশি ব্যয় সাশ্রয়ী বলে মনে করছে প্রশাসন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতি বছর ১০ লাখ অভিবাসী প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত তার প্রশাসন প্রায় ৬ লাখ ২২ হাজার অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আগামী ২০২৬ সাল থেকে এই অভিযান আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাজার হাজার নতুন এজেন্ট নিয়োগ, নতুন ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণ এবং অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে মার্কিন সরকার।