
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তাঁর বক্তব্যের আগেই এক তরুণীর কণ্ঠ যেন ছুঁয়ে গেল উপস্থিত সকলের হৃদয়। দৃঢ় চোখে, আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন এক অজ্ঞাত তরুণী।
তাঁর সূচনা বক্তব্যে ছিল স্পষ্টতা, প্রত্যয় আর আন্দোলনের প্রতিধ্বনি। উপস্থিত জনতার মনোযোগ শুধু তাঁর বক্তব্যেই ছিল না—সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রশ্ন: কে এই সাহসী তরুণী, যিনি ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়িয়ে প্রথম কণ্ঠ তুলে ধরলেন?
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপ, পোস্ট এবং মন্তব্যে উঠে এসেছে—তাঁর কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদের জোর, আর মুখে ছিল দায়বদ্ধতার দীপ্তি।
জানা গেছে, এই তরুণীর নাম সাবরিনা আফরোজ শাবন্তী। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ মাহামুদুর রহমান সৈকতের বোন। ১৯ জুলাই যে ভয়াবহ ঘটনার শিকার হয়ে সৈকত শহিদ হন, সেই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে শাবন্তী তুলে ধরেছেন একটি প্রজন্মের হতাশা ও প্রত্যয়ের কণ্ঠস্বর।
সূচনা বক্তব্যে সাবরিনা আফরোজ শাবন্তী বলেন, ‘এক বছর আগে ১৯ জুলাই আমার পরিবার যখন আমার ভাইয়ের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে পাওয়া যায়, তখন দেখা যায় তার মাথায় ছিল রক্তাক্ত ব্যান্ডেজ। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা ছিল গান শট। আমার ভাইয়ের উচ্চতা ছিল ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। আমার ভাইয়ের উচ্চতা নিয়ে আমার বাবা গর্ব করত। অথচ সেই উচ্চতাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার পরিবার যখন দেখি,‘আজ আমরা পুরো দেশের পরিবার হয়ে গেছি, তখন আমরা কিছুটা স্বস্তি বোধ করি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠি। দেশের ভবিষ্যৎ যখন অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে হচ্ছিল, সামনে কোনো আলোর দিশা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন এই সফল গণঅভ্যুত্থান আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখাল। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আমরা যেন কিছুতেই লক্ষচ্যুত না হই।’