
ভারতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ খাতের শাখা, আদানি পাওয়ার, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত বকেয়া অর্থ নিয়ে উদ্ভূত বিতর্ক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সালিশ প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সংস্থাটি গৌতম আদানির নেতৃত্বে পরিচালিত এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ চুক্তির আওতায় সরবরাহকৃত বিদ্যুতের বিল নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিরোধে রয়েছে।
আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, "কিছু খরচের উপাদান গণনা ও বিলিংয়ের ক্ষেত্রে মতবিরোধ রয়েছে। তাই উভয় পক্ষই বিতর্ক সমাধান প্রক্রিয়া গ্রহণে সম্মত হয়েছে এবং তারা দ্রুত, সহজ ও পারস্পরিক উপকারী সমাধানের আশা করছে।"
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনাটি এখনও চলমান। তিনি জানান, "এই প্রক্রিয়া শেষ হলে, প্রয়োজন হলে আমরা আন্তর্জাতিক সালিশির পথে যাব।"
আদানি পাওয়ার ভারতের পূর্বাঞ্চলে ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যা বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় এক দশমাংশ পূরণ করে।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার অভিযোগ করেছিল যে, গোড্ডা প্ল্যান্টের জন্য ভারতের দেওয়া কর সুবিধা স্থগিত থাকায় আদানি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
গত অর্থবছরে বাংলাদেশ আদানিকে প্রতি ইউনিট ১৪.৮৭ টাকায় বিদ্যুৎ পরিশোধ করেছে, যা অন্যান্য ভারতীয় সরবরাহকারীর গড় ইউনিট দাম ৯.৫৭ টাকার তুলনায় বেশি।
আদানি পাওয়ার গত সপ্তাহে জানিয়েছে, বাংলাদেশের কাছ থেকে তাদের পাওনা এখন অনেক কমে এসেছে। মে মাসে বকেয়া ছিল প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার, যা বছরের শুরুর দিকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। বর্তমানে তা ১৫ দিনের ট্যারিফ সমপরিমাণে নেমে এসেছে।
সংস্থাটি সোমবার আরও জানিয়েছে, "আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অটুট রাখবে এবং নির্ভরযোগ্য, প্রতিযোগিতামূলক ও উচ্চমানের বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে থাকবে।"
সূত্র: রয়টার্স