
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে আজ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সোমবার দুপুরে গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটি এই বৈঠকে অংশ নেবে। ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের পর প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, সারাদেশে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একাধিক জরিপ এবং প্রায় এক হাজার মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে আলাপচারিতার পর প্রার্থীদের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “আজকের বৈঠকের আলোচ্যসূচি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে: একটি হলো প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা, আরেকটি প্রধান উপদেষ্টাকে ঘিরে। প্রধান উপদেষ্টা হয়তো কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিতে পারেন এবং তার পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।”
গত রাতেই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দুপুরে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নির্দিষ্ট এজেন্ডা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে সরকারঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, সংবাদ সম্মেলনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির সঙ্গে সারাদেশে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। তৃতীয় ধাপে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপিসহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ২০০টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে ৬০-৭০টি আসনে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিছু আসনে জোটভুক্ত দলের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক তালিকা সাংগঠনিক দক্ষতা, অতীত আন্দোলনে অবদান এবং জনমত জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।
দলীয় অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, তালিকায় এখনো পরিবর্তন সম্ভব। মাঠপর্যায়ের সক্রিয়তা বা কার্যকারিতা বিবেচনায় পিছিয়ে থাকা প্রার্থীদের পরিবর্তন করা হতে পারে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমান নিজেও একাধিক প্রার্থীকে ফোন করে দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।