
অন্তর্বর্তী সরকারের অস্তিত্ব এখন দুই রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকার ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা আব্বাস বলেন, “আজকের যে সরকার তাদের কার্যক্রম দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যায়, নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। এই সরকার দুটি দলের ওপর ভর করে টিকে আছে। একটি তাদের নিজস্ব সৃষ্ট দল আর একটি পুরোনো দল।”
তিনি আরও বলেন, “ওই দুটি দল যা বলে এই সরকার তা-ই করে। ওরা যা বলবে সেটাই করতে হবে। এরা কারা? এরা কোত্থেকে এলো? এদের জনভিত্তি কী? এদের কোনো ভিত্তি আছে বাংলাদেশে কোথাও? একটা নির্বাচন দিলে পরে বোঝা যেতো কে কয়টা ভোট পায়।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির এই নেতা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এখন দেশের এমন একটা অবস্থা চলছে দেশটা কার, কে চালায়, কোনো মালিক নেই। দেশে কোনো দেখার লোক নেই। সবাই শুধু ব্যস্ত সংস্কার নিয়ে। আরে ভাই কি সংস্কার করছেন এটাই তো বুঝতে পারলাম না। আজ দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে গেছে, রাস্তায় নামলে হাঁটা যায় না। ফুটপাতগুলো ভরে গেছে, রাস্তা দখল হচ্ছে। এই লোকগুলো কোথা থেকে এলো হঠাৎ করে? কারণ গ্রামে বা শহরে কোনো কিছু করার নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের সম্পদ লুটে খাওয়ার চিন্তায় একটি শ্রেণি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। “দেশটাকে ওলটপালট করে দিয়ে একটা শ্রেণি লুটেপুটে খাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। একটা গোষ্ঠী দেশটাকে ধ্বংস করার চিন্তাভাবনা করছে। যারা জীবনে মাথা তুলে কথা বলতে পারেনি, তারা আজ মাথা তুলে কথা বলে। চোখে চোখ রেখে কথা বলে। এই সাহস, এই শক্তি কোথায় পেলো?” বলেন তিনি।
আগামী নির্বাচনে সরকারের পক্ষপাতিত্বের আশঙ্কা ব্যক্ত করে মির্জা আব্বাস বলেন, “আমি খুব আশঙ্কা করছি, সামনের নির্বাচনে এই দলগুলোকে জেতানোর জন্য সরকার যেকোনো অবৈধ প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিতে পারে; যেটা বিগত সরকার করেছিল রাতের ভোট দিনে, দিনের ভোট রাতে করে। ঠিক এই সরকারও সম্ভবত এরকম কোনো কাজ করে ফেলবে। নইলে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজন, এদেশের জনগণ যাদের প্রয়োজনীয় মনে করে না তারা আজ লম্বা লম্বা কথা কীভাবে বলে? যারা বাংলাদেশকেই চায়নি কোনো দিন, তারা বাংলাদেশের শাসনভার চায়, আমি বুঝি না।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।