
শহীদ শরিফ ওসমান হাদির বড় ভাই ওমর বিন হাদি মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত শহীদ শপথ অনুষ্ঠানে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আপনারা ওসমান হাদিকে হত্যা করিয়েছেন আবার এটাকে ইস্যু করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন। আমরা তা কখনো হতে দেবো না।”
ওমর বিন হাদি বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন দুই মাস পর রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে চলে যাবেন, তবে মনে রাখবেন—এদেশের জনতা আপনাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।”
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তার একটিই দাবি, “দ্রুত খুনিদের আমাদের সামনে উপস্থাপন করুন। নির্বাচনের পরিবেশ যেন বিঘ্নিত না হয়, দ্রুত খুনিদের বিচার করুন।”
ওমর বিন হাদি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, শহীদ ওসমান হাদি ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে ছিল এবং সে নির্বাচন করতে মাঠে নামেছিল। “তাকে হত্যা করে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।”
তিনি সতর্ক করেন, “ওসমান হাদির সব খুনি চক্রকে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে। জুলাই বিপ্লবের আগে যারা ক্ষমতাধর ছিলেন, যারা রাষ্ট্রকে নিজেদের মনে করতেন, তারা আজ এই বাংলাদেশে নেই। তারা পালাতে বাধ্য হয়েছে। হত্যার বিচার না হলে আপনাদেরও বাংলাদেশ থেকে পালাতে হবে।”
ওমর বিন হাদি বলেন, “যে এজেন্সির হয়ে বা যে রাষ্ট্রের হয়ে ওসমান হাদিকে হত্যা করেছেন—মনে রাখবেন, হাদি কোনো রাষ্ট্র, এজেন্সি বা কোনো তাঁবেদারের কাছে মাথানত করেনি। সে যদি মাথানত করতো, অন্য নেতাদের মতো বিক্রি হয়ে সুখে জীবন যাপন করতে পারতো।”
তিনি বলেন, “ওসমান হাদি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে দেখিয়েছে কীভাবে রাজপথে আন্দোলন করতে হয় এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হয়। এজেন্সির রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জনসাধারণের নেতা হয়ে ওঠা সে-ই শিখিয়েছে। সে প্রমাণ করেছে, জীবিত ওসমান হাদির চেয়ে মৃত ওসমান হাদি আরও শক্তিশালী হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসছে।”
শেষে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, “বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের অপেক্ষায়। হত্যার দায় এড়ানো যাবে না। আজ হোক বা দশ বছর পরে হোক—বিচারের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতে হবে।”