
জাতীয় লিগের ম্যাচ নিয়ে কক্সবাজারে ব্যস্ত ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। বরিশাল দলের কোচ হিসেবে সারাদিন মাঠে সময় কাটাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে পারলেন; বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে জাতীয় দলের নতুন ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
খবরটি শোনার পর প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাসই করতে পারেননি সাবেক এই অধিনায়ক। মুঠোফোনে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তার কণ্ঠে ধরা পড়ল বিস্ময় আর আনন্দের মিশ্র অনুভূতি। তিনি বললেন, ‘আমি তো জানতামই না! অন্য কোনো দেশে হলে খেলা ছাড়ার পর হয়তো এমন সুযোগ পাওয়া যেত, কিন্তু আমাদের দেশে এমনটা সচরাচর হয় না। তাই এত দ্রুত জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে ডাক পাবো, তা ভাবিনি।’
আশরাফুল আরও বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, আমি কখনো ভাবিনি এখনই জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হবো। ধারণা ছিল, হয়তো বয়সভিত্তিক কোনো দলে কাজ করার সুযোগ মিলবে। কিন্তু সরাসরি জাতীয় দলের দায়িত্ব; এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। আপনাদের কাছ থেকেই প্রথম জানলাম।’
দায়িত্ব পাওয়ার খবর জানার পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের অন্যতম স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করা। আমার খেলোয়াড়ি জীবনে যা শিখেছি, সেটি আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চেয়েছি সব সময়। আল্লাহর অশেষ কৃপায় সে সুযোগ এসে গেল। সত্যিই খুব ভালো লাগছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে বেশিরভাগ ব্যাটারই ছিলেন ছন্দের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন দায়িত্ব নিচ্ছেন আশরাফুল। সামনে রয়েছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি টেস্ট: প্রথমটি ১১ নভেম্বর সিলেটে এবং দ্বিতীয়টি ১৮ নভেম্বর ঢাকায়। এরপর তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজও অনুষ্ঠিত হবে।
দলের ব্যাটিং বিভাগে দ্রুত কী ধরনের পরিবর্তন আনতে চান; জানতে চাইলে আশরাফুল জানান, ‘আমার একটা বড় সুবিধা হলো; এখনকার অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গেই আমি খেলেছি। তাদের ব্যাটিং কৌশল, মানসিকতা সবই আমার পরিচিত। জানি কে কোথায় সংগ্রাম করছে, কে কখন ভালো করে। প্রথম কাজ হবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসা, তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা। এখনই টেকনিক্যাল বিষয় নয়, বরং মানসিকভাবে তাদের চাঙা করার চেষ্টা করবো।’
বিদেশি কোচদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘একদমই না। বিপিএল ও গ্লোবাল টি–টোয়েন্টি লিগে আমি একাধিক বিদেশি কোচের সঙ্গে কাজ করেছি। কখনো কোনো অসুবিধা হয়নি। বরং সেসব অভিজ্ঞতাই এখন কাজে লাগবে। আমি আত্মবিশ্বাসী; নিজের মতো করেই ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করতে পারবো।’