
বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আরিফুজ্জামান অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক হয়েছেন। তিনি রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
শনিবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার আওতাধীন একটি অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের সময় হাকিমপুর সীমান্ত চৌকিতে টহলরত বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাকে আটক করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই তাকে স্বরূপনগর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতারের সময় আরিফুজ্জামানের কাছ থেকে একাধিক পরিচয়পত্র ও সরকারি নথি উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ। তার বাড়ি বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার শাহীপাড়া এলাকায়।
আরিফুজ্জামান ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এপিবিএন-২ ইউনিটে এএসপি পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি গত বছরের ১৪ অক্টোবর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তিনি তখন থেকে পলাতক ছিলেন।
তার গ্রেফতারের খবরে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দেয় এবং বিএসএফ ও স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটি গোপন রাখে।
ভারতে তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ (এ) ধারা ও পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। আজ রোববার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক তাকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (জেলহাজতে) পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। দুপুর আড়াইটার দিকে পার্ক মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে। সবাই সরে গেলেও লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবু সাঈদ। এরপর প্রায় ৫০ ফুট দূর থেকে পুলিশ তার ওপর ছররা গুলি ছোড়ে। তিনি ঘটনাস্থলে মাটিতে পড়ে যান এবং হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান।
ঘটনার সময় ৪৮ বছর বয়সী আরিফুজ্জামান রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান। জানা গেছে, তিনি সাতক্ষীরায় লুকিয়ে ছিলেন।