
আলজেরিয়ার সেতিফ শহরে অবস্থিত ‘নগ্ন নারীর’ ভাস্কর্যটি আঘাত করে ক্ষতিগ্রস্ত করায় এক যুবকের বিরুদ্ধে ১০ বছরের জেলাদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। গত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষিত হয় বলে জানায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত যুবক এর আগেও ভাস্কর্যটি ভাঙার চেষ্টা করায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন। এবার তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন ধ্বংস এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ।
ঘটনাটি ঘটে এক সপ্তাহ আগে, যখন ওই ব্যক্তি প্রত্নতাত্ত্বিক এ ভাস্কর্যটির মুখমণ্ডল ভেঙে দেন। এ ভাস্কর্যটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত আইন এল ফোয়ারা নামে। এটি ১৮৯৮ সালে সেতিফে স্থাপন করা হয়। ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলে প্রথমে এটি ফ্রান্স থেকে আলজেরিয়ার কিকদা শহরে আনা হয়, পরে স্থানান্তরিত হয় সেতিফ শহরে। ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল একটি প্রাকৃতিক ঝর্নার পাশে।
ভাস্কর্যটির পেছনে রয়েছে উপনিবেশিক যুগের ধর্মীয় দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপট। ঐতিহাসিকদের মতে, সেই সময় ঝর্নার পানি দিয়ে মুসল্লিরা ওজু করতেন, যা ফরাসি কর্তৃপক্ষের অপছন্দ ছিল। ফলে ফরাসি ভাস্কর ফ্রান্সিস দে সেইন্ট-ভিদালকে দিয়ে এক নগ্ন নারীর ভাস্কর্য নির্মাণ করে সেটিকে ঝর্নার উপর স্থাপন করা হয়, যেন মুসলমানরা সেখানে আর না যান।
এটি প্রথমবার নয় যে ভাস্কর্যটি হামলার শিকার হলো। এর আগে একাধিকবার হামলার সম্মুখীন হয়েছে এটি, এমনকি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। ২০০৬ সালে দেশটির কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, ভাস্কর্যটি যেন জনসম্মুখ থেকে সরিয়ে কোনো জাদুঘরে স্থানান্তর করা হয়, কারণ এর নগ্ন রূপ অনেকের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করে।
সূত্র: দ্য নিউ আরব