
ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে যেকোনো আলোচনায় রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে—এমন দাবি জানিয়েছে মস্কো। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়াকে বাদ দিয়ে ইউক্রেন সংকটের কোনও টেকসই সমাধান সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে— ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়াকে উপেক্ষা করে যে কোনো ধরনের আলোচনার উদ্যোগ "সমাধানমুখী হবে না"। ইউরোপীয় নেতারা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার পরপরই এ বক্তব্য দিল মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, “এখন সম্মিলিত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, অথচ রাশিয়াকে বাইরে রাখা হচ্ছে। এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এভাবে কোনো সমাধান আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র জানে— রাশিয়াকে বাদ দিয়ে ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করাটা অবাস্তব ও ব্যর্থ প্রচেষ্টা। এটি নিছক ইউটোপিয়া।”
ল্যাভরভ এই মন্তব্য করেন এমন এক সময়, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আলাস্কা বৈঠকও সামনে রয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে কোনও বৈঠক হয়, তা হতে হবে “সতর্ক ও পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রস্তুতির মাধ্যমে”, যাতে উত্তেজনা আরও না বাড়ে।
তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অবস্থান বদলাতে “কৌশলহীন ও অদক্ষ প্রচেষ্টা” চালিয়েছেন। তার ভাষায়, “আমরা ইউরোপীয়দের কাছ থেকে কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব পাইনি। কেবল উত্তেজনা বাড়ানোর প্রচেষ্টা দেখা গেছে।”
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রধান উপদেষ্টা আন্দ্রি ইয়ারমাক জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। এতে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইয়ারমাক বলেন, ইউক্রেনের সামরিক ও কূটনৈতিক টিম নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা উপাদান নিয়ে কাজ করছে। তার মতে, রাশিয়া যদি আলোচনা বিলম্বিত করে, তবে মস্কোকে “বিশ্বের কাছ থেকে আরও কঠোর চাপ” সহ্য করতে হবে।
তিনি আরও জানান, ইউক্রেন “যেকোনো বাস্তব সম্মত কাঠামোতে যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় প্রস্তুত”, এবং এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পসহ ইউরোপীয় অংশীদার ও ন্যাটোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, রাশিয়া আবারও জানিয়ে দিয়েছে— তারা ইউক্রেনে ন্যাটোর সামরিক উপস্থিতি মেনে নেবে না। তবে ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ডের অভিযোগ, রাশিয়া বরং নতুন করে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে।