
রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান সরকারি ভবন ‘মন্ত্রিসভা ভবন’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিডেনকো রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন, এটি কিয়েভে সরকারি ভবনের ওপর আঘাতের প্রথম ঘটনা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার ফলে ভবনের ছাদ ও ওপরের তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, গত রাতের হামলায় ৮০০টিরও বেশি রকেট ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫৬টি ড্রোন ৩৭টি স্থানে আঘাত করেছে।
হামলায় কিয়েভের স্ব্যাতোশিনস্কি জেলায় নয় তলা আবাসিক ভবন ধসে পড়ার কারণে একটি শিশু এবং এক তরুণী নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা আরও মৃতদেহের সন্ধান চালাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলা বন্ধে ‘বিশ্বের রাজনৈতিক সদিচ্ছা’ চাইছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ড ইচ্ছাকৃত এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা।
বিবিসি জানাচ্ছে, এটি কিয়েভের সরকারি ভবনের ওপর আঘাতের প্রথম ঘটনা। শহরের কেন্দ্র স্থল অত্যন্ত সুরক্ষিত। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি প্রতীকী হামলা, যা স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তির জন্য প্রস্তুত থাকার দাবি শুধুই ভান।
সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তাকাচেঙ্কো বলেছেন, "তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত করছে।" তিনি বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, পেচেরস্কি জেলার সরকারি ভবনে আগুন লেগেছে এবং একটি বিধ্বস্ত রাশিয়ান ড্রোন এটি ঘটাতে পারে।
অন্যদিকে, জাপোরিঝিয়া শহরে হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান ইভান ফেডোরভ জানান, সেখানে নার্সারি ও আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সুমি অঞ্চলের সাফোনিভকা এবং চেরনিহিভ অঞ্চলে আরও একজন করে নিহত হয়েছেন।
রাশিয়া মধ্য ইউক্রেনের ক্রিভি রিহ-তেও হামলা চালিয়েছে। দেশের সমস্ত অঞ্চলে রাতারাতি বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিয়েভের পশ্চিম স্ব্যাটোশিঙ্কি এবং দক্ষিণ-পূর্ব দারনিটস্কি জেলায় বহুতল আবাসিক ভবন আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে এবং আগুন এখনও জ্বলছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৬৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত বা আটক করেছে।