
মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম সম্প্রতি ইউনিসেফের প্রতিনিধি ড. এডওয়ার্ড অ্যাড্ডাই-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। মালের বাংলাদেশ হাইকমিশন এই বৈঠকের তথ্য এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উষ্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে শিশু কল্যাণ, শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন এবং বিশেষ করে মালদ্বীপে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী শিশুদের অন্তর্ভুক্তি ও সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। হাইকমিশনার বৈঠকে বলেন, "আজকের বিশ্বে বহুপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্ব অপরিসীম। শিশুদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় কার্যক্রম শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, এটি শান্তি, কূটনীতি এবং টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিও বটে।"
ড. এডওয়ার্ড অ্যাড্ডাই মালদ্বীপে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অর্থনৈতিক অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মালদ্বীপে অবস্থানরত সকল শিশুর, বিশেষ করে বাংলাদেশি শিশুদের, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও অনুরোধ করেন যে, ১৮ বছরের নিচের বাংলাদেশি শিশুদের প্রাথমিক সামাজিক সেবা প্রয়োজন হলে ইউনিসেফকে জানানো হোক।
ইউনিসেফ প্রতিনিধি আরও উল্লেখ করেন, তারা মালদ্বীপে শিশুদের কল্যাণ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেবে, যা ইউনিসেফ মালদ্বীপ, ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে।
এছাড়াও, ড. অ্যাড্ডাই হাইকমিশনারকে তার শিশু ও শিক্ষাবিষয়ক দৃঢ় অঙ্গীকারের স্বীকৃতি জানিয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর ২০২৫-এ মালদ্বীপে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে শিশু উৎসব, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সৃজনশীল কার্যক্রম আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হয়, যা শিশুদের অন্তর্ভুক্তি, আনন্দ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করবে। তিনি প্রস্তাব দেন, ইউনিসেফ মালদ্বীপ, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, মালদ্বীপ সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে শিশুদের জন্য আরও শক্তিশালী সামাজিক সেবা কাঠামো গড়ে তোলা যেতে পারে।
প্রত্যুত্তরে নাজমুল ইসলাম ইউনিসেফের উদ্যোগগুলিকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শিশু কল্যাণ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "সাংস্কৃতিক, কূটনীতি ও শিশু উন্নয়ন বিষয়ক যৌথ উদ্যোগ দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক আরও গভীর করবে এবং প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের কল্যাণে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
বৈঠকটি অংশীদারিত্ব ও অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে শেষ হয়। উভয় পক্ষই মালদ্বীপে প্রতিটি শিশুর জন্য একটি নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহানুভূতিশীল পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।