
ইসরায়েল ধাপে ধাপে পুরো ফিলিস্তিনকে নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত করার পথে এগোচ্ছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি থাকলেও তেল আবিবের দখলদার নীতি থেমে নেই। বরং পশ্চিম তীরে আগ্রাসন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা সম্প্রতি নতুন করে দখলকৃত এলাকায় ১৯টি ইহুদি বসতি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত সপ্তাহে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের সিলওয়ান এলাকায় ১৩টি ফ্ল্যাটসহ একটি ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের পর থেকে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ কার্যক্রম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আমলে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধ বসতি ও আউটপোস্টের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নতুন দখলদারিত্বের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে নাবলুস, রামাল্লা, সালফিত, বেথলেহেম এবং জেরিকোতে। এতে প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন বসতি স্থাপনের অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।
ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র দখলদারিত্বেই সীমাবদ্ধ নয়; নিয়মিত অভিযান, গ্রেপ্তার এবং হামলার ঘটনা পশ্চিম তীর ও গাজায় ঘটছে। গাজায় যুদ্ধ চলাকালীনও পশ্চিম তীরে ব্যাপক গ্রেপ্তার ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। যুদ্ধবিরতির পর এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দখলকৃত বিভিন্ন এলাকায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা আরও বেশি, এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে।