
দেশের সংকট নিরসনে শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন যথেষ্ট নয়, প্রকৃত পরিবর্তন ঘটাতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক দর্শন ও চিন্তার আমূল রূপান্তর এমন মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে ইসলামী যুব আন্দোলন জেলা শাখার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফয়জুল করীম বলেন, অনেকেই মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশের সংকট কেটে যাবে। অথচ ১৯৭০, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে গণআন্দোলনের মুখে সরকারগুলোকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। তার ভাষায়, “শুধু দল ও নেতা পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দুই দলের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে পার্থক্য নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জয় সাহেব মৌলবাদের উপর খুবই ক্ষিপ্ত। টুপিওয়ালা, দাড়িওয়ালাদের দেখলে মেজাজ খারাপ হয় তার। একই বক্তব্য তারেক সাহেবের। তারেক সাহেব আর জয় সাহেবের বক্তব্যে কোনো পার্থক্য নেই।”
বিএনপি মহাসচিবকে নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেব সরিয়া আইন বিশ্বাস করেন না। মির্জা ফখরুল সাহেবকে আমার খুব ভালো লাগে। উনি মুনাফিক না। উনি স্পষ্টবাদী। এটা ভালো গুন। উনি একজন ভালো রাজনীতিবিদ এ জন্য উনাকে আমার ভালো লাগে। তবে উনি গণতন্ত্র সম্পর্কে যে আলোচনা করেন উনার দল কি উনার বক্তব্য মানেন?”
জিয়াউর রহমান ও শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, একজন সর্বদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, অন্যজন বাকশাল গঠন করেছিলেন। অথচ বর্তমানে দুই দলই চাঁদাবাজি, খুনোখুনি আর ক্ষমতার দাপটে ব্যস্ত। তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ যেমন খুন করেছে, বিএনপিও তেমনি করছে, এমনকি বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
রাজনৈতিক প্রতীক নিয়েও সমালোচনা করেন ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, “যারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে তারা নৌকা চালাতে জানে না, ধানের শিষ নিয়ে নির্বাচন করা লোকেরা ধান কাটতে পারে না। সমস্ত প্রতীকই গরিব মানুষের অথচ যারা নির্বাচন করে তারা কেউ গরিব নয়।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ জুবায়ের হোসাইন। প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী। আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম।