
কুমিল্লার মুরাদনগর সদরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ঘটে যাওয়া এই সহিংস ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সারাদিনজুড়ে উপজেলা সদরে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে বুধবার বিকেলে আল্লাহু চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তার সমর্থকদের একটি মিছিল ও সমাবেশ ঘিরে। এ সময় বিএনপির উপজেলা কার্যালয়ের সামনেও একদল নেতাকর্মী দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলার’ প্রতিবাদে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাৎ উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। সহিংসতায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
উপজেলা এনসিপির তত্ত্বাবধায়ক মিনাজুল হক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। বিএনপির নেতাকর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া দাবি করেন, পূর্বঘোষিত ছাত্রদলের একটি প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সমর্থকদের সহায়তায় আমাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়। আহত নেতাকর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি দলীয় ফোরামে আলোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় কুমিল্লায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এক সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কুমিল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব, ইয়ুথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং ফটোসাংবাদিক ফোরামের সদস্যরা অংশ নেন।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক (ফারুক) এর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ (জিতু) এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসানসহ অন্যান্য সাংবাদিকেরা। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
হামলার শিকার সাংবাদিকরাও সমাবেশে অংশ নিয়ে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন এবং নিরাপত্তার দাবি জানান।