
জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক করণ জোহর সম্প্রতি নিজের শৈশবের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় নিয়ে মুখ খুলেছেন। ‘ধড়ক ২’-এর মুক্তির আগে আত্মউন্মোচনমূলক এক সাক্ষাৎকারে জয় শেঠির সঙ্গে আলাপচারিতায় করণ তুলে ধরেন তার ছেলেবেলার দুঃখ-কষ্টের স্মৃতি।
সেই সময়ে তিনি সমাজের লিঙ্গভিত্তিক সীমানায় কীভাবে উপেক্ষিত ও বিচ্ছিন্ন ছিলেন, তা অকপটে তুলে ধরেন। করণ বলেন, ‘আমি শুধু খেলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কেউ নেয়নি আমাকে। কারণ আমি ছেলে নই, এটাই তাদের যুক্তি।’
সাক্ষাৎকারে করণ আরও জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা মনে করতেন। ‘আমি আমার বয়সের ছেলে এবং বাচ্চাদের থেকে নিজেকে খুব আলাদা বোধ করতাম। আমাকে বলা হয়েছিল, আমি একটু বেশিই মেয়েলি। মেয়েদের মতো করে হাঁটতাম, দৌড়াতাম এবং ভিন্নভাবে কথা বলতাম। আমার জীবনের পছন্দ, আমার শখ সবই আলাদা ছিল।’
তিনি বলেন, যৌথভাবে বসবাসকারী একটি অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়ে ওঠা করণ প্রতিদিন সন্ধ্যায় অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে চাইলেও তা সম্ভব হতো না। খেলাধুলায় ভালো না হওয়ায় সঙ্গীরাও তাঁকে দলে নিতে চাইত না।
‘আমরা একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম। সে সময় ওই অ্যাপার্টমেন্টের সব বাচ্চারা সন্ধ্যায় নিচে এসে খেলত। আমি শুধু ওই ছেলেদের সঙ্গে থাকতে চাইতাম। আমি ফুটবল দলের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউ আমাকে দলে নেয়নি কারণ আমি খেলাধুলায় ভালো ছিলাম না। আমি অতটা স্পোর্টি ছিলাম না। আমি ছেলে বা পুরুষ ছিলাম না।’
তার এই আত্মবিচারের গল্পটি সমাজের প্রচলিত লিঙ্গ পরিচয়ের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি এক শক্তিশালী প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। করণের শৈশবের অভিজ্ঞতা কেবল তার ব্যক্তিগত কষ্ট নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক বাস্তবতাকেও তুলে ধরে।