
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুরুতর আহত হন। তার মাথার খুলির একাংশ অপারেশনের মাধ্যমে বের করতে হয়েছে। মাথায় মোড়ানো হয়েছে সাদা ব্যান্ডেজ, আর সেখানে লেখা হয়েছে “হাড় নেই, চাপ দেবেন না” যেন কেউ ভুলবশত স্পর্শ না করে।
মামুন বর্তমানে নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তার মাথার খুলি এখনও সংযুক্ত করা হয়নি। হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, “মামুনের মাথার খুলি ফ্রিজে রাখা হয়েছে। কেউ যাতে ভুলে হাত না দেয়, তাই কালো কালিতে নির্দেশনা লেখা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে, তিনি খাবার খেয়েছেন। বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।”
এর আগে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সোমবার বিকেলে লাইফ সাপোর্ট খুলে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। মামুনের বন্ধু আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মামুনকে গতকাল বিকাল ৫টায় কেবিনে আনা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই-তিন মাস সময় লাগবে। মাথার খুলি ফ্রিজে রাখা হয়েছে, কয়েক মাস পর তা লাগানো হবে। এখন স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলতে পারছেন না।”
চবি শিক্ষার্থীসহ সংঘর্ষে আরও দুইজন গুরুতর আহত হন। তাদের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ পাঁচ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার কনশাস লেভেল বর্তমানে ৬-এর আশেপাশে, যেখানে একজন স্বাভাবিক মানুষের কনশাস লেভেল ১৫। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটি ১০-এর উপরে না ওঠা পর্যন্ত তাকে সম্পূর্ণ আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। এছাড়া ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে; তার শরীরে ভাসকুলার ইনজুরি রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এর পর সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এবং অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হন।
মামুনের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগার পর তাকে গুরুতর অবস্থায় পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রাতেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।