
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলন চলাকালে এক অটোরিকশাচালককে হত্যার অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদুল ইসলাম শহীদ নামে একজন অটোরিকশাচালক নিহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শেষে বুধবার (৩০ জুলাই) চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিষয়টি শনিবার (২ আগস্ট) প্রকাশ্যে আসে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি সূত্র জানায়, গত বছরের আন্দোলনের ঘটনায় নগরীতে এটাই প্রথম চার্জশিট।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব আহমেদ বলেন, "তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আদালতের কাছে মামলাটি বিচারের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এখন আদালত পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।"
চার্জশিটে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন: সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম আব্দুল লতিফ, আবদুস ছালাম, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এস এম আর মামুন, নোয়ামান আল মাহমুদ ও নুরুল আজিম রনি।
তদন্তে মোট ১২৮ জনকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ সদস্য এবং একজন চিকিৎসক রয়েছেন। মামলার চূড়ান্ত তদন্ত করেন এসআই মো. ফয়সাল।
ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বহদ্দারহাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একাধিক দফায় সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ওই সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা পিস্তল, শটগানসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। গুলিতে আহত হন অটোরিকশাচালক শহীদুল ইসলাম, যাকে পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে ১৯ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শহীদুল ইসলামের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এক বছর পর মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হলো।