
রাশিয়ার তেলের ওপর চাপ বাড়াতে এবার ভারত ও চীনকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায় ওয়াশিংটন। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দুই দেশের পণ্যে শতভাগ আমদানি শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। বৈঠকে ফোনে যুক্ত হয়ে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থায়নে প্রধান ভূমিকা রাখা দেশগুলোকে শাস্তির আওতায় আনতে হলে চীন ও ভারতের ওপর শুল্ক আরোপই হতে পারে কার্যকর পদক্ষেপ।
এই বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস–এর বরাতে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন প্রকাশ করে এনডিটিভি।
বৈঠকে থাকা এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা প্রস্তুত, এখনই প্রস্তুত। তবে এটা তখনই করব যদি আমাদের ইউরোপীয় অংশীদাররা এগিয়ে আসে।”
আরেক কর্মকর্তা জানান, ইউরোপ যদি এই পথে এগোয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রও ভারত ও চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করবে। এতে দুই দেশের পণ্যে আমেরিকান শুল্ক কয়েক গুণ বাড়তে পারে। এখন ভারতের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নিচ্ছে, আর চীনা পণ্যে হার ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, “আজ সকালে প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সবচেয়ে কার্যকর পথ হলো বড় অঙ্কের শুল্ক বসানো এবং তা বহাল রাখা, যতক্ষণ না চীন রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে। ওই তেলের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।”
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের ইতি টানতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় হোয়াইট হাউসে ক্ষোভ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটেই ট্রাম্পের নতুন শুল্ক-উদ্যোগ সামনে এলো। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি দাবি করে আসছেন, প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন।
এর আগে গত রোববার, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বড় পরিসরের বিমান হামলার পর ট্রাম্প নতুন করে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা দেশগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
বর্তমানে এই অভিযোগে শুধু ভারতের ওপরই শাস্তিমূলক শুল্ক কার্যকর হয়েছে। যদিও চীনের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের তরফে এখনো নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছিলেন, তবে মে মাসে মার্কিন বাজারে বড় ধাক্কা লাগার পর কিছু শুল্ক আবার হ্রাস করা হয়।