
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বিএনপি যদি সংস্কার মানতে না চায়, তবে তাদের শুরুতেই সংস্কার কমিশন বয়কট করা উচিত ছিল। এখন এসে বিরোধিতা করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) কুমিল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে নিজ নির্বাচনী এলাকার ভোটকেন্দ্র পরিচালকদের সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. তাহের বলেন, “বিএনপি যদি সংস্কার না মানে, সংস্কার না চায় তাহলে তাদের শুরুর আগেই বলা উচিত ছিল—আমরা এই কমিশনে অ্যাটেন্ড করব না, আমরা এটাকে বয়কট করছি। কিন্তু এতগুলো সভায় উপস্থিত থেকে এখন এই কথা বলা আমার মনে হয় দায়িত্বহীনতার পরিচয়।”
তিনি আরও বলেন, বিএনপির বর্তমান অবস্থান শুধু দায়িত্বহীনতারই নয়, বরং নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির একটি প্রচেষ্টা। তার দাবি, “এটি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি নির্বাচন না হয় তাহলে যারা পালিয়ে গিয়ে ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে, তারাই একটা সুযোগ নেবে।” তার ভাষায়, “বিগত সরকারের যে বাংলাদেশ, সংস্কারবিহীন যে বাংলাদেশ ছিল, বিএনপি মনে হয় সেই জায়গায় ফিরে যেতে চায়। বাংলাদেশকে আওয়ামী জাহেলিয়াতের দিকে ফিরে যেতে জনগণ দেবে না।”
সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ডা. তাহের বলেন, “সরকারের সিদ্ধান্ত থেকে যদি সরকার সরে যায়, তাহলে এটা পরিষ্কার হবে যে সরকার আর নিরপেক্ষ নেই।” তিনি আরও বলেন, “এ সরকার যদি নিরপেক্ষতা হারায় এবং কোনো দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তাহলে সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি বর্তমানে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তার ভাষায়, “আরপিওতে ইলেকশন কমিশন এবং সরকার দুই জায়গাতেই একটা ‘ক্রস অ্যাপ্রুভড’ হয়েছে, কোনো একটি দল এককভাবে কিংবা জোট হিসেবে নির্বাচন করলে তাদের নিজস্ব দলীয় মার্কায় নির্বাচন করতে হবে। এটাকে জামায়াতসহ বহুদল অভিনন্দন জানিয়েছে, কারণ একটা দল যখন কেউ করে তার একটা ‘আইডোলজি’ থাকে।”
ডা. তাহের প্রশ্ন তোলেন, “এটা উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হয়ে গেছে। হঠাৎ করে বিএনপি এসে বলে আমরা এটা মানি না। এখন তারা সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে। তাহলে তারা আরপিও মানে না।”
সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহানসহ দলটির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।