
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় টর্চার সেলে নির্যাতন করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ছাত্রদলের নেতা হিজবুল আলম জিয়েস (২৬) ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে জিয়েসকে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জিয়েসের দুই সহযোগীকে সোমবার ভোরে এবং জিয়েসকে রাত ৯টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। হিজবুল আলম জিয়েস একই উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মাঝিলি গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে ও ওই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার সহযোগীরা রাফি (১৯) ও আবদুল্লাহ (২০), যারা একই উপজেলার বাসিন্দা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হিজবুলের তৎপরতা তেমন ছিল না, তবে গত বছরের আগস্ট থেকে বানিহালা ইউনিয়নে তিনি প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। বিভিন্ন ব্যক্তিকে টর্চারসেলে আটকে নির্যাতন করে টাকা আদায় করতেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) মাঝিয়ালি বাজারে হক মিয়ার সেলুন থেকে চুল কাটার পর পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন জিয়েস। টাকা না পেয়ে সেলুন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন ও মারধর করেন। এরপর সেলুনে তালা লাগিয়ে দেন।
পরদিন বিকেলে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক মামুন সরকারের আশ্বাসে সেলুন খোলা হয়, তবে জিয়েস ক্ষুব্ধ হয়ে মামুনকে মারধর করেন। এর ফলে মামুন সোমবার তারাকান্দা থানায় মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় জিয়েসসহ ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।
গ্রেফতারকালে মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে জিয়েসের মাছের খামারে ‘টর্চার সেল’ পাওয়া গেছে। সেখানে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হক মিয়া জানান, ‘চুল কাটার পর পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে জিয়েস। টাকা না দিলে আমার বড় ভাই লাক মিয়াকে ও আমাকে মারধর করে দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে মামুন ভাইয়ের পরামর্শে দোকান খুললেও আবার আক্রমণ করে মামুন ভাইকে রক্তাক্ত করে।’
ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক মামুন সরকার বলেন, ‘চাঁদাবাজি ছাত্রদলের আদর্শের পরিপন্থি। প্রতিবাদ করায় জিয়েস আমাকে মারধর করেছে, এজন্য মামলা করেছি।’
ঘটনার পর ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তালুকদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জিয়েসকে তার পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।