
বাণিজ্য ইস্যুতে উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের বক্তব্য ব্যবহার করে তৈরি এক শুল্ক-বিরোধী বিজ্ঞাপন ঘিরেই এই ঘটনা ঘটে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনটি প্রচারিত হওয়ার পর ট্রাম্প ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান এবং কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করার পাশাপাশি দেশটির পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। শনিবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত সপ্তাহে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটিতে ১৯৮৭ সালে দেওয়া রিগানের একটি ভাষণের অংশ ব্যবহার করা হয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, শুল্ক আরোপ আমেরিকার অর্থনীতির ক্ষতি করে। তার উদ্ধৃতিটি ছিল: “এ ধরনের বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা প্রতিটি মার্কিন শ্রমিক ও ভোক্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”
দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (এপিইসি) সম্মেলনে শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কার্নি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছি।” তিনি আরও জানান, অন্টারিও প্রদেশের অর্থায়নে নির্মিত ওই বিজ্ঞাপনটি “আমি নিজে হলে করতাম না।” তার ভাষায়, ট্রাম্প বিষয়টি নিয়ে “অপমানিত” বোধ করেছেন।
অন্যদিকে ট্রাম্পও শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কার্নি তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তাদের মধ্যে “খুব ভালো সম্পর্ক” বজায় আছে। তবে তিনি মন্তব্য করেন, “যা করা হয়েছে, তা ভুল।”
কার্নি বলেন, বিজ্ঞাপনটি প্রচারের আগে অন্টারিও প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড তাকে ক্লিপটি দেখিয়েছিলেন এবং সম্প্রচার না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বিজ্ঞাপনটি টরোন্টো ব্লু জেস ও লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের মধ্যে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সিরিজ বেসবলের প্রথম দুই ম্যাচে প্রচারিত হয়। ফোর্ড দাবি করেছেন, বিজ্ঞাপনটি “একশ কোটি বার দেখা হয়েছে” এবং যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এ ঘটনার জেরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিট হুকস্ট্রা ও অন্টারিওর বাণিজ্য প্রতিনিধি ডেভিড প্যাটারসনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ফোর্ড জানান, হুকস্ট্রার মন্তব্য ছিল “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” এবং পরবর্তীতে তাকে প্যাটারসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে কানাডাও রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যদিও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় অধিকাংশ পণ্য এই শুল্কের বাইরে। তবে নির্দিষ্ট কিছু খাতে, যেমন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ৫০ শতাংশ এবং গাড়িতে ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে।