
বিজ্ঞানজগত হারালো এক কিংবদন্তি গবেষককে। ডিএনএর রহস্য উন্মোচনের অন্যতম পথিকৃত মার্কিন জীববিজ্ঞানী ও অনুবীক্ষণবিদ জেমস ডিউই ওয়াটসন ৯৭ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে স্বল্পকালীন অসুস্থতার পর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
জেমস ডিউই ওয়াটসন ১৯২৮ সালের ৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিজ্ঞানের ইতিহাসে তাঁর অবদান এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল। ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে তিনি প্রস্তাব করেন ডিএনএর “ডাবল হেলিক্স” মডেল; যা জীবনের মৌলিক নকশা বোঝার দরজা খুলে দেয়। এই অসামান্য আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬২ সালে ‘ফিজিওলজি বা মেডিসিন’-এ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ওয়াটসন, ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স।
বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ওয়াটসন। জীবনের পুরোটা সময় তিনি চেষ্টা করেছেন প্রাণের রহস্য উন্মোচনের। তাঁর ও ক্রিকের প্রস্তাবিত মডেল দেখিয়েছে, ডিএনএ আসলে দুটি সূক্ষ্ম শৃঙ্খল বা স্ট্র্যান্ডে গঠিত, যেগুলো একে অপরের বিপরীতে জিনগত তথ্য বহন করে এবং জীবের বংশগতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে।
লেখালেখি, গবেষণা ও বিজ্ঞানচিন্তায় ওয়াটসন ছিলেন নিরন্তর অনুসন্ধিৎসু। তাঁর মতে, ডিএনএ-ই “জীবনের কোড”, যা আধুনিক জীববিজ্ঞানের মেরুদণ্ডে পরিণত হয়েছে।
ওয়াটসনের ডিএনএ গঠন আবিষ্কার আধুনিক চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিপ্লব এনে দিয়েছে। তাঁর আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা ও জিনবিজ্ঞান, ফরেনসিক ও অপরাধ তদন্ত, জিনোম গবেষণা, কৃষি ও জীবপ্রযুক্তিসহ বিজ্ঞানের বিভভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনে।
প্রয়াত এই বিজ্ঞানী ডিএনএর রহস্য আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে শুধু জীবনের রহস্যই উন্মোচন করেননি, খুলে দিয়েছেন মানবজাতির ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানের নতুন দুয়ার।