
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ক্যাফেটেরিয়ার নিম্নমানের খাবার, অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘর ও কর্মচারীদের অনিয়ম নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আবারও সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে নবনির্বাচিত হল সংসদের ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) আজিজুল হক ক্যাফেটেরিয়া ম্যানেজারকে সরাসরি সতর্ক করে বলেছেন, ১৫ দিনের মধ্যে খাবারের মান ও পরিবেশে দৃশ্যমান পরিবর্তন না এলে দায়িত্ব ছাড়তে হবে।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ক্যাফেটেরিয়া পরিদর্শনে গিয়ে তিনি নষ্ট আলু পরিবেশন, ডালে প্রায় শূন্যতা, রান্নাঘরে ছড়িয়ে থাকা সিগারেটের ফিল্টার, হাফপ্যান্ট পরে রান্না করা কর্মচারী এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে ব্যর্থতার মতো একাধিক অসংগতি দেখতে পান। এসব দেখে ম্যানেজার মোহাম্মদ নোমানকে উদ্দেশ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “৪২ বছর ধরে ক্যাফেটেরিয়া চালাচ্ছেন, অথচ শিক্ষার্থীরা ন্যূনতম উন্নয়নও দেখেনি। তাহলে আপনাদের রাখা হবে কেন?”
ভিপি আজিজুল হক আরও বলেন, “কর্মচারীরা যখন স্বাস্থ্যবিধি মানে না, হাফপ্যান্ট পরে রান্না করে, রান্নাঘরে সিগারেট খায়— তখন এর দায় ম্যানেজারের। ১৫ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনুন, না হলে দায়িত্ব ছাড়তে মানসিক প্রস্তুতি নিন।”
তার এই সতর্কবার্তার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কেউ এটিকে শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ সমালোচনা করছেন ভিপির ভাষা ও আচরণ নিয়ে।
সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিক ফারুক ফেসবুকে লিখেছেন, এ ধরনের ‘মব-স্টাইল’ রাজনীতি টেকসই সমাধান নয়, বরং একসময় উল্টো বুমেরাং হতে পারে। তবে তিনি স্বীকার করেন, রান্নাঘরে হাফপ্যান্ট নিষিদ্ধের বিষয়টি যৌক্তিক।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে অনেকেই লিখেছেন, রান্নাঘরের অতিরিক্ত ঘাম খাবারে মিশে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাই পোশাক সংক্রান্ত নিয়ম থাকা জরুরি। তবে ‘জবিয়ানস’ নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দাবি করা হয়, হাফপ্যান্ট নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রভাবিত এবং তা ফ্যাসিবাদী প্রবণতার ইঙ্গিত বহন করে।
পরে নিজের ফেসবুক পোস্টে আজিজুল হক লেখেন, “দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে একই ব্যক্তি ক্যাফেটেরিয়া চালাচ্ছেন। অবস্থা এমন হয়েছে যে, শিক্ষার্থীরা না চাইলে এড়িয়ে চলেন। অসংখ্যবার সতর্ক করা হলেও তারা জবাবদিহি করতে চান না। এবার পরিবর্তন আনতেই হবে।” একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেন, সতর্ক করার সময় তার ভাষা কিছুটা তীব্র হয়ে গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও সংযত ও মার্জিত আচরণের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।