
বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে কৃষকদের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশের কৃষক সমাজই জাতির মূল শক্তি, আর তাদের হাতকে আরও দৃঢ় করতেই কাজ করবে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার এক বাণীতে তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশের শক্তি সব সময় ছিল সেই হাতেই, যারা এই মাটিকে চাষ করে। বিএনপি সেই হাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করবে। যাতে তারাই আগামী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।”
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ চাইলে প্রমাণ করতে পারে যে খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন ও কৃষকের মর্যাদা কোনো কল্পনার বিষয় নয়, বরং অর্জনযোগ্য বাস্তবতা।
তারেক রহমান বলেন, “নতুন প্রযুক্তি, জ্ঞান ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে বিএনপি একটি অংশীদারিত্বভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখে। আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা মডেল কৃষককে সম্মান দেয়, উদ্ভাবনকে গ্রহণ করে এবং বৈশ্বিক দায়বদ্ধতা দাবি করে, পুষ্টিসমৃদ্ধ বাংলাদেশ ক্ষুধা ও অনিশ্চয়তার এই বিশ্বে উদাহরণ হতে পারে।”
এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ছয় দফা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে কৃষক কার্ড কর্মসূচি, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, পানি নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ, পুষ্টি ও মানব উন্নয়ন, কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন।
তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি কৃষককে একটি নিরাপদ ডিজিটাল কার্ড প্রদান করা হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে তারা কোনো মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সরাসরি ভর্তুকি, ন্যায্য মূল্য, কৃষিঋণ, ফসলের বীমা ও সরকারি ক্রয় সুবিধা পেতে সক্ষম হবেন। একইসঙ্গে, ২০ হাজার কিলোমিটার নদী ও খাল পুনরুদ্ধার করে সেচের জন্য সম্প্রদায়ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিস্তা ও গঙ্গা নদীর জন্য আধুনিক ব্যারাজ নির্মাণ করে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
তারেক রহমান জানান, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প খাতে ১৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তিনি বলেন, “আমাদের উদ্যোগগুলো কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাতে কোল্ডস্টোরেজ লজিস্টিক্স থেকে শুরু করে রপ্তানিমুখী খাদ্যশিল্প পর্যন্ত ১৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।”
বিএনপি নেতৃত্বাধীন পূর্বসূরিদের অবদান স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, “প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন নেতৃত্বে আসেন, তখন দেশজুড়ে চলছিল দুর্ভিক্ষ। তিনি জানতেন, খাদ্য নিরাপত্তা ছাড়া জাতীয় স্বাধীনতার কোনো অর্থ নেই।”
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়েই দেশ সেচ সম্প্রসারণ, খাল পুনঃখনন এবং বহু বছরের ফলদানকারী ফসলের চাষের মাধ্যমে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে এগিয়ে যায়। এক সময় যে দেশ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছিল, সেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।