তৌকির আজাদ সুমিত, জন্ম ১৯৯৩ সালে বারো আউলিয়ার দেশ সিলেটে। ছবি আঁকা, ভিন্নধর্মী সঙ্গীত চর্চা এবং লেখালেখি করেই পার করছেন অন্তর্মুখী জীবন। রাজধানী ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন এই লেখক।
সত্তা
ভয় নেই,
আমি তোমাদের একজন
আমি ওদের একজন
আমি তাদের একজন।
তবুও আমি, আমার আর তোমার পথপ্রদর্শক।
তুমি দেখ, একদিন আমি ঠিক ঠিক মাতাবো দর্শক।
নিছক ছলনা নয়, নয় কোনো মিথ্যে আস্থা,
অনিন্দ্য প্রেরণার সদা উদ্ভাসিত শান্ত আমি,
জাগ্রত প্রকৃতির দ্রষ্টা।
আমি ঘরে আনবো দু’মুঠো চাল, ডাল, কিছু তেল, শুকনো মরিচ —
ভরপেট আহার হবে; শেষে হবে নিদ্রা, তোমার হাতের আচার বা খিরসা।
যখন কাজে মগ্ন থাকি, বেজে ওঠা গান; তুমুল প্রেরণা,
বাড়ি ফিরে দেখবো তোমায় ; তুমি তারই তাড়না।
তুমি, আমার বহু জন্মের নির্মিত ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে রয়েছো, দৃঢ়তা!
যেন নদীর বুকে জ্বলে থাকা মায়াবী চাঁদের আভা,
কত মাঠ ঘাট পাহাড় পেরিয়ে বুঝেছি ;
কী ভালোবাসা জীবন্ত, জলজ্যান্ত দৈনন্দিন জীবন সভা!
কল্পিত অভিলাষ
আমি দেখতে চাই, যখন মায়াবী চাঁদ আলো ছড়ায়,
অকূল বেদনারা চেয়ে থাকে আকাশে।
আমি মুগ্ধ গন্ধে থাকি, যখন বাতাসে দোদুল্যমান ফুল, ভাসে সৌরভ সুবাসে।
আমি আলোর প্রদীপ হাতে উজ্জ্বল কালো আলো ছড়াই, স্পষ্ট দিবসে ;
যখন নদীর জল মিশে যায় সাগরের উচ্ছ্বাসে।
রয়েছি আমি মাঝি, চাষি, কৃষক, শ্রমিক, বণিক, শিক্ষক, প্রেমিকার পাশে—
যেন না কাঁদে কেউ, জননীর কাছে এসে।
আমি আনন্দে হাসি, যেন শিশুমনগুলো নিজেদের ভালোবাসে।
প্রেমিকের বুকের ভেতরের হাহাকার আমি,
ভালোবাসা ভালোবেসে হই বাষ্প নির্যাসে,
প্রেমিকার নগ্ন ঠোঁটে আমি রই ; রয়েছি তোমারই কাছে বসে।
জন্মদাতা মায়ের মনে বলি, সন্তানেরা আছে ভালো, কল্পিত অভিলাষে।
যখন আমি বাবা, মনে রেখ— আমি বাড়ি ফিরি,
জানি দেখবো ওদের সকলে; আমার আগলে রাখা পরিবার দিনশেষে…
আমি থাকি, তুমি রেখেছ নিজ মনের নিমেষে।
দ্বিধা
চারদিকে ইট–পাথুরে অট্টালিকা ;
এর ফাঁকে মাঝে মাঝে দেখি বৃক্ষ, পিপীলিকা।
একবার ছাদে যাওয়া যাবে আজ?
জানালার ক্যানভাসে সারা আকাশ কি ধরে,
পাখিগুলো উড়ছে আপন মনে, কি করে?
সাধক মন আর মানুষের বিবেক বৃথাই পোড়ে।
পোড়ে কি?
বিঘ্ন চেতনায় কেন দ্বিধার মায়া ঘোরে?
অপেক্ষা।
কাঙ্ক্ষিত ক্ষণ কবে আসবে নিজ ঘরে?
ঝলমলে রোদেলা সকাল, দগ্ধ মধ্যদুপুর, স্নিগ্ধ বিকেল —
শান্ত-ক্লান্ত রাত শেষ হবে নতুন ভোরে।